দীর্ঘ ৩৩ বছর পর আগামী ১১ সেপ্টেম্বর জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় শিক্ষার্থী সংসদ (জাকসু) ও হল সংসদ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হতে যাচ্ছে। নির্বাচনকে ঘিরে সশরীরের পাশাপাশি অনলাইনেও প্রার্থীদের পক্ষে বিপক্ষে ব্যাপক প্রচারণা লক্ষ্য করা যাচ্ছে। এরই অংশ হিসেবে অনলাইনে দাবি প্রচার করা হয়েছে, জাকসু নির্বাচনে বাধ্যতামূলক ডোপ টেস্টের পর ছাত্র ইউনিয়ন (একাংশ) সমর্থিত সম্প্রীতির ঐক্য প্যানেলের সহ-সভাপতি (ভিপি) প্রার্থী অমর্ত্য রায়ের প্রার্থীতা বাতিল করেছে জাকসুর নির্বাচন কমিশন।
এরূপ দাবিতে অনলাইন পোর্টালে প্রকাশিত প্রতিবেদন: সংবাদ২৪৭।

এরূপ দাবিতে ফেসবুকে প্রচারিত পোস্ট দেখুন এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ) এবং এখানে (আর্কাইভ)।
ফ্যাক্টচেক
রিউমর স্ক্যানার টিমের অনুসন্ধানে জানা যায়, আসন্ন জাকসু নির্বাচনে ভিপি প্রার্থী অমর্ত্য রায়ের প্রার্থীতা বাতিল হওয়ার কারণ ডোপ টেস্ট নয়। প্রকৃতপক্ষে, জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের পরীক্ষা অধ্যাদেশ ২০০৩ এর ধারা ১০ (ii), ১২(ii) ও ১৩(iv) অনুযায়ী এবং বিশেষ পরীক্ষায় অংশগ্রহণের প্রেক্ষিতে অমর্ত্য রায় অনিয়মিত পরীক্ষার্থী ও অনিয়মিত শিক্ষার্থী হিসেবে পরিগণিত হওয়ায় জাকসুর গঠনতন্ত্রের ৪ ও ৮ ধারা অনুযায়ী জাকসু নির্বাচন কমিশন তাকে জাকসু নির্বাচনে ভোটার ও প্রার্থী হওয়ার অযোগ্য বলে ঘোষণা করে ভোটার ও প্রার্থী তালিকা থেকে তার নাম প্রত্যাহার করে নিয়েছে। এছাড়া, এখন পর্যন্ত জাকসু প্রার্থীদের ডোপ টেস্টই হয়নি।
অনুসন্ধানে সংবাদমাধ্যম ‘রূপালী বাংলাদেশ’ এর ওয়েবসাইটে ‘জাকসুর ভিপি পদে অমর্ত্য রায়ের প্রার্থিতা বাতিল’ শিরোনামে গত ৬ সেপ্টেম্বরে প্রকাশিত একটি প্রতিবেদন পাওয়া যায়। প্রতিবেদনটিতে বলা হয়, “জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় শিক্ষার্থী সংসদ (জাকসু) নির্বাচনের গঠনতন্ত্র অনুযায়ী ভোটার ও প্রার্থী হওয়ার অযোগ্য বিবেচিত হওয়ায় ‘সম্প্রীতির ঐক্য প্যানেল’র ভিপি প্রার্থী অমর্ত্য রায় জনের নাম প্রত্যাহার করেছে নির্বাচন কমিশন। শনিবার (৬ সেপ্টেম্বর) দুপুরে বিশ্ববিদ্যালয়ের ওয়েবসাইটে এক বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়েছে।”
প্রতিবেদনটিতে আলোচিত বিজ্ঞপ্তিটির ছবির সংযুক্তিও পাওয়া যায়। বিজ্ঞপ্তিটিতে লেখা দেখতে পাওয়া যায়, “এতদ্বারা সংশ্লিষ্ট সকলের অবগতির জন্য জানানো যাচ্ছে যে, জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের যথাযথ কর্তৃপক্ষের সিদ্ধান্তের প্রেক্ষিতে ২০১৭-২০১৮ শিক্ষাবর্ষে প্রত্নতত্ত্ব বিভাগে ভর্তিকৃত শিক্ষার্থী অমর্ত্য রায় জন, রেজি নং-৪৬৯৮৪, আ ফ ম কামালউদ্দিন হল জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় শিক্ষার্থী সংসদ (জাকসু) এর গঠনতন্ত্রের ৪। ও ৮। ধারা মোতাবেক ভোটার ও প্রার্থী হওয়ার অযোগ্য বিবেচিত হওয়ায় ভোটার ও প্রার্থী তালিকা হতে তার নাম প্রত্যাহার করা হলো।”
এছাড়াও, এ বিষয়ে দৈনিক ‘প্রথম আলো’ এর ওয়েবসাইটে গত ৬ সেপ্টেম্বরে প্রকাশিত একটি প্রতিবেদন পাওয়া যায়। প্রতিবেদনটিতে বলা হয়, “..জাকসুর গঠনতন্ত্রের ৪ নম্বর ধারায় বলা আছে, বিশ্ববিদ্যালয়ের সব নিয়মিত ও বৈধ শিক্ষার্থী বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী সংসদের সদস্য বলে গণ্য হবেন। কেবল তাঁরাই ভোটার বলে বিবেচিত হবেন এবং শিক্ষার্থী সংসদের নির্বাচনে অংশ নিতে পারবেন। এ ধারায় কিছু শর্ত রয়েছে। যেসব শিক্ষার্থী স্নাতক (সম্মান) শ্রেণিতে (৪+২) ছয় বছর অথবা স্নাতকোত্তর শ্রেণিতে (১+১) দুই বছর ধরে অধ্যয়ন করছেন, কেবল সেসব শিক্ষার্থীর নাম ভোটার তালিকায় অন্তর্ভুক্ত করা হবে এবং তাঁরা ভোটাধিকার প্রয়োগ করতে পারবেন।
বিশ্ববিদ্যালয় সূত্রে জানা যায়, গত বৃহস্পতিবার (৪ সেপ্টেম্বর) উপাচার্য অধ্যাপক মোহাম্মদ কামরুল আহসানের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত সিন্ডিকেট সভায় ভিপি প্রার্থী অমর্ত্য রায়ের নিয়মিত ছাত্রত্ব নিয়ে সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। গঠনতন্ত্র অনুযায়ী অমর্ত্য রায় নিয়মিত ছাত্রত্ব না থাকায় তাঁকে অনিয়মিত শিক্ষার্থী হিসেবে রায় দেয় সিন্ডিকেট। এরপর আজ (৬ সেপ্টেম্বর) নির্বাচন কমিশন থেকে বিজ্ঞপ্তি দিয়ে তাঁর প্রার্থিতা বাতিলের তথ্য জানানো হয়।
বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষা শাখা সূত্রে জানা গেছে, অমর্ত্য রায় প্রত্নতত্ত্ব বিভাগের ২০১৭-১৮ শিক্ষাবর্ষের (৪৭তম ব্যাচ) শিক্ষার্থী। তিনি ২০২১ সালের স্নাতক চতুর্থ বর্ষের চূড়ান্ত পরীক্ষায় নিয়মিত শিক্ষার্থী হিসেবে অংশ নেন এবং ৪০৭ ও ৪০৮ নম্বর কোর্সে অকৃতকার্য হন। পরের ব্যাচের সঙ্গে ২০২২ সালে অকৃতকার্য কোর্স দুটির পরীক্ষা দিয়ে আবার অকৃতকার্য হন। এরপর বিশেষ বিবেচনায় ২০২৩ সালে ৪৯তম ব্যাচের সঙ্গে তিনি আবার দুটি পরীক্ষা দিলেও ৪০৮ নম্বর কোর্সে অকৃতকার্য হন। এরপর গত বৃহস্পতিবার (৪ সেপ্টেম্বর) সিন্ডিকেট সভায় তাঁকে বিশেষ বিবেচনায় একটি কোর্সে অনিয়মিত শিক্ষার্থী হিসেবে পরীক্ষার সুযোগ দেওয়া হয়।
জানতে চাইলে জাকসু নির্বাচনের প্রধান নির্বাচন কমিশনার অধ্যাপক মো. মনিরুজ্জামান প্রথম আলোকে বলেন, নির্বাচন কমিশনের দায়িত্ব হলো সুষ্ঠুভাবে নির্বাচন পরিবেশন করা। গঠনতন্ত্র অনুযায়ী তিনি ভোটাধিকার হারিয়েছেন। তাই তাঁর প্রার্থিতা প্রত্যাহারের বিজ্ঞপ্তি দেওয়া হয়েছে। নির্বাচন কমিশনের সদস্যসচিব ও প্রক্টর এ কে এম রাশিদুল আলম বলেন, অমর্ত্য রায় বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের কাছে অকৃতকার্য বিষয়ে পরীক্ষা দেওয়ার জন্য আবেদন করেছিলেন। এ বিষয়ে গত সিন্ডিকেট সভায় একটি সিদ্ধান্ত হয়েছে। সিদ্ধান্ত অনুসারে গঠনতন্ত্রের ৪ ও ৮ নম্বর ধারা অনুযায়ী তিনি ভোটার ও প্রার্থী হওয়ার অযোগ্য বিবেচিত হওয়ায় ভোটার ও প্রার্থী তালিকা থেকে তাঁর নাম প্রত্যাহার করা হয়েছে।
এ বিষয় অমর্ত্য রায় প্রথম আলোকে বলেন, ‘একটি ঘটনার পরিপ্রেক্ষিতে প্রশাসন অন্যায়ভাবে আমার বহিষ্কার করেছিল। বহিষ্কার হওয়ার এক মাস পর স্নাতক চতুর্থ বর্ষের চূড়ান্ত পরীক্ষার ফলাফল বের হয়। পরীক্ষা খারাপ হওয়ার বিষয়টি জানতে পেরে পরীক্ষা দিতে হবে, তাই বহিষ্কারের সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে উচ্চ আদালতে রিট করি। এতে শুধু ফাইনাল পরীক্ষা দেওয়ার সুযোগ পেয়েছিলাম। ১০ মাস ক্লাস পরীক্ষা, ল্যাব করার সুযোগ পাইনি। ওই হিসাবে প্রশাসনের কাছে আমি ১০ মাস পাই।’ তিনি বলেন, ‘এখানে নির্বাচন কমিশনের যেসব ব্যত্যয় রয়েছে, সেগুলো ধরে আমরা কমিশনের কাছে উপস্থাপন করব। এ বিষয়ে সবার মতামত নিয়ে আইনি প্রক্রিয়ায় যাব।’”
একইরকম তথ্য মূলধারার গণমাধ্যম ‘দ্য ডেইলি স্টার’ এর ওয়েবসাইটে গত ৬ সেপ্টেম্বরে প্রকাশিত একটি প্রতিবেদন থেকেও জানা যায়।
এদিকে গত ৮ সেপ্টেম্বর জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের জনসংযোগ কার্যালয়ের নামে পরিচালিত একটি ফেসবুক পেজ থেকে এ বিষয়ে একটি ‘জরুরি প্রেস বিজ্ঞপ্তি’ প্রকাশ করা হয়। বিজ্ঞপ্তিটিতেও একইরকম তথ্য জানা যায়। এছাড়াও, বিজ্ঞপ্তিটিতে বলা হয়, “জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয় পরীক্ষা অধ্যাদেশ ২০০৩ এর ধারা ১০ (ii), ১২ (ii) ও ১৩(iv) অনুযায়ী ২০১৯-২০২০ শিক্ষাবর্ষের পূর্বে ভর্তিকৃত একজন শিক্ষার্থী শুধু ২টি কোর্সে ‘এফ’ গ্রেড পেলে অর্থাৎ অকৃতকার্য হলে উক্ত ২টি কোর্সে একবারই মানোন্নয়ন পরীক্ষা দেবার সুযোগ পাবেন। গত ০১-০৯-২০২৫ তারিখে অনুষ্ঠিত শিক্ষা পর্ষদের সভায় অমর্ত্য রায় জন-এর ২য় বার মানোন্নয়ন পরীক্ষা দেবার বিষয়টি পরীক্ষা অধ্যাদেশ ২০০৩ অনুযায়ী বিধিবহির্ভূত বলে পরিগণিত হয়। তবে শিক্ষা পর্ষদ তাঁর শিক্ষাজীবনের বিষয়টি মানবিক বিবেচনায় নিয়ে ২য় বার দেয়া পরীক্ষা বিশেষ পরীক্ষা হিসেবে গ্রহণ করবার জন্য সুপারিশ করে। এছাড়া ৪০৮ নং কোর্সে বিশেষ পরীক্ষা দেবার আবেদনটি ২য় বার বিশেষ পরীক্ষা দেয়ার আবেদন হিসেবে বিবেচনায় নেবার জন্য সুপারিশ করে। উক্ত সুপারিশসমূহ গত ০৪-০৯-২০২৫ তারিখে অনুষ্ঠিত সিন্ডিকেট সভায় উপস্থাপিত হলে অনুমোদিত হয়।
উল্লেখ্য, ২২-০২-২০২৪ তারিখে অমর্ত্য রায় জনকে বিশ্ববিদ্যালয় থেকে এক বছরের জন্য বহিষ্কার করা হয়। উক্ত বহিষ্কারাদেশ চ্যালেঞ্জ করে মাননীয় হাইকোর্ট বিভাগে রিট মামলা নং ৩২৯৯/২০২৪ দায়ের করার প্রেক্ষিতে মাননীয় আদালত ২১-৩-২০২৪ তারিখ আবেদনকারীর পরীক্ষা গ্রহণের বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয়কে নির্দেশনা প্রদান করেন, যার প্রেক্ষিতে অমর্ত্য রায় জন-এর ৪০৭ ও ৪০৮ নং কোর্সের প্রথম মানোন্নয়ন পরীক্ষা নেয়া হয়েছিলো। এছাড়া তাঁর বিরুদ্ধে দায়েরকৃত আশুলিয়া থানার মামলা নং ১৭/২৪-এ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালত তাঁকে অব্যাহতি দিলে উক্ত রায়সহ তিনি তাঁর বিরুদ্ধে দেয়া বহিষ্কারাদেশ প্রত্যাহারের জন্য আবেদন করেন। ওই আবেদন দ্রুততার সঙ্গে এজেন্ডাভুক্ত করে ৩০-১২-২০২৪ তারিখে অনুষ্ঠিত সিন্ডিকেটের বিশেষ সভায় মানবিক বিবেচনায় নিয়ে উক্ত বহিষ্কারাদেশ প্রত্যাহার করা হয়।
জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয় পরীক্ষা অধ্যাদেশ ২০০৩ এর ধারা ১০ (ii), ১২(ii) ও ১৩(iv) অনুযায়ী এবং বিশেষ পরীক্ষায় অংশগ্রহণের প্রেক্ষিতে অমর্ত্য রায় জন অনিয়মিত পরীক্ষার্থী ও অনিয়মিত শিক্ষার্থী হিসেবে পরিগণিত হওয়ায় জাকসুর গঠনতন্ত্রের ৪ ও ৮ ধারা অনুযায়ী জাকসু নির্বাচন কমিশন তাঁকে জাকসু নির্বাচনে ভোটার ও প্রার্থী হওয়ার অযোগ্য বলে ঘোষণা করে ভোটার ও প্রার্থী তালিকা থেকে তাঁর নাম প্রত্যাহার করে নিয়েছে। ”
পরবর্তীতে জাকসুর গঠনতন্ত্রের বিষয়ে অনুসন্ধান করলে জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের ওয়েবসাইটে জাকসুর গঠনতন্ত্র পাওয়া যায়। গঠনতন্ত্রের ৪ ধারায় উল্লেখ আছে, ‘বিশ্ববিদ্যালয়ের সকল নিয়মিত ও বৈধ শিক্ষার্থী বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী-সংসদের সদস্য বলে গণ্য হবেন। কেবল তারাই ভোটার বলে বিবেচিত হবেন এবং শিক্ষার্থী সংসদের নির্বাচনে অংশগ্রহণ করতে পারবেন। শর্তাবলি: জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের যে সকল শিক্ষার্থী স্নাতক (সম্মান) শ্রেণিতে ৬ (৪+২) বছর এবং/অথবা স্নাতকোত্তর শ্রেণিতে ২ (১+১) বছর ধরে অধ্যয় করছেন, কেবল সে সকল শিক্ষার্থীর নাম জাকসু ভোটার তালিকায় অন্তর্ভুক্ত করা হবে এবং তাঁরা ভোটাধিকার প্রয়োগ করতে পারবেন।..’
এছাড়া, গঠনতন্ত্রের ৮ ধারায় নির্বাচন-বিধির উল্লেখ পাওয়া যায়। ৮ ধারার অধীনে আরো ৯টি উপ-ধারা পাওয়া যায় যেখানে সর্বপ্রথমে থাকা ‘প্রার্থিতা’ উপ-ধারায় বলা হয়, ‘বিশ্ববিদ্যালয় ও হলের যাবতীয় পাওনা পরিশোধ করা সাপেক্ষে সংসদে ও যেকেনো নিয়মিত সদস্য নির্বাচনে অংশগ্রহণ ও ভোট প্রদান করতে পারবে।..’
অর্থাৎ, গঠনতন্ত্রের যে দুইটি ধারা অনুযায়ী অমর্ত্য রায়ের প্রার্থীতা বাতিল করা হয়েছে সেই দুইটি ধারার কোথাও ডোপ টেস্ট কিংবা মাদক সংশ্লিষ্ট কোনো বিষয় উল্লেখ নেই।
এ বিষয়ে অধিকতর নিশ্চিত হতে রিউমর স্ক্যানার টিম গতকাল ০৮ সেপ্টেম্বর দুপুরে জাকসু নির্বাচনের প্রধান নির্বাচন কমিশনার অধ্যাপক মো. মনিরুজ্জামানের সাথে কথা বলে। তিনি নিশ্চিত করেন, অমর্ত্য রায়ের প্রার্থিতা বাতিল হওয়ার সঙ্গে ডোপ টেস্টের কোনো সম্পৃক্ততা নেই। এছাড়া, ডোপ টেস্ট এখন পর্যন্ত অনুষ্ঠিতও হয়নি।
জাকসু নির্বাচনের প্রার্থীদের ডোপ টেস্টের বিষয়ে জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের জনসংযোগ কার্যালয়ের নামে পরিচালিত ফেসবুক পেজে গতকাল ৮ সেপ্টেম্বর রাতে প্রচারিত একটি পোস্ট পাওয়া যায়। পোস্টটিতে বলা হয়, “এতদ্বারা জাকসু ও হল সংসদ নির্বাচনে অংশগ্রহণকারী সকল প্রার্থীগণের অবগতির জন্য জানানো যাচ্ছে যে, আগামীকাল ০৯-০৯-২০২৫ তারিখ রোজ মঙ্গলবার সকাল ৯:৩০ ঘটিকা হতে সন্ধ্যা ৬:০০ ঘটিকা পর্যন্ত জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয় মেডিক্যাল সেন্টারে জাকসু ও হল সংসদ নির্বাচনে অংশগ্রহণকারী প্রার্থীগণের ডোপ টেস্ট সম্পন্ন করা হবে।..”
অর্থাৎ, এ থেকে স্পষ্ট যে, জাকসু নির্বাচনের প্রেক্ষিতে প্রার্থীদের ডোপ টেস্ট এখনও সম্পন্নই হয়নি।
সুতরাং, অনিয়মিত পরীক্ষার্থী ও অনিয়মিত শিক্ষার্থী হিসেবে পরিগণিত হওয়ায় আসন্ন জাকসু নির্বাচনে ভিপি প্রার্থী ছাত্র ইউনিয়নের সাবেক সভাপতি অমর্ত্য রায়ের প্রার্থীতা বাতিল হওয়ার ঘটনাকে ডোপ টেস্টের কারণে তার প্রার্থিতা বাতিল করা হয়েছে দাবিতে প্রচার করা হয়েছে; যা মিথ্যা।
তথ্যসূত্র
- Rupali Bangladesh – জাকসুর ভিপি পদে অমর্ত্য রায়ের প্রার্থিতা বাতিল
- Prothom Alo – প্রগতিশীল শিক্ষার্থীদের একাংশের প্যানেলের ভিপি প্রার্থীর প্রার্থিতা বাতিল
- The Daily Star – চূড়ান্ত তালিকা ঘোষণার ৭ দিন পর অমর্ত্যের প্রার্থিতা বাতিল করল প্রশাসন
- Public Relations Office, JU – জরুরি প্রেস বিজ্ঞপ্তি
- Jahangirnagar University – জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় শিক্ষার্থী সংসদের গঠনতন্ত্র
- Prothom Alo – জাকসু নির্বাচনের প্রার্থীদের ডোপ টেস্ট বাধ্যতামূলক
- Public Relations Office, JU – Facebook Post
- Statement of Professor Md Moniruzzaman, Chief Election Officer, JUCSU