সম্প্রতি “যদি শহীদের সংখ্যা ৩০ লক্ষ হয়ে থাকে তাহলে বাংলাদেশের প্রত্যেকটা গ্রামে ৫০ থেকে ৬০ জন শহীদ থাকার কথা। দেখা যায় একটা গ্রামে ৫ জন মুক্তিযোদ্ধাও নাই। চেক গুজবের গালগল্প এই দেশে আর চলবে না” শিরোনামে পুলিশ সদস্যের বক্তব্য দাবিতে একটি ভিডিও ইন্টারনেটে প্রচার করা হয়েছে।

উক্ত দাবিতে ফেসবুকে প্রচারিত ভিডিও দেখুন: এখানে (আর্কাইভ)।
একই দাবিতে ইউটিউবে প্রচারিত ভিডিও দেখুন: এখানে (আর্কাইভ)।
টিকটকে প্রচারিত ভিডিও দেখুন: এখানে (আর্কাইভ)।
ফ্যাক্টচেক
রিউমর স্ক্যানার টিমের অনুসন্ধানে জানা যায়, মুক্তিযুদ্ধে শহীদদের সংখ্যা নিয়ে দেওয়া পুলিশ সদস্যের বক্তব্য দাবিতে প্রচারিত এই ভিডিওটি আসল নয় বরং, এটি কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা (এআই) প্রযুক্তি ব্যবহার করে তৈরি একটি ভুয়া ভিডিও।
ভিডিওটির বিষয়ে অনুসন্ধানে কোনো বিশ্বস্ত গণমাধ্যম বা নির্ভরযোগ্য সূত্রে এর অস্তিত্ব পাওয়া যায়নি। প্রকৃতপক্ষে কোনো পুলিশ সদস্য বাস্তবে মুক্তিযুদ্ধের শহীদের সংখ্যা নিয়ে এরূপ কোনো বক্তব্য প্রদান করলে তা মূলধারার গণমাধ্যমে প্রচার করা হতো।
এছাড়া, প্রচারিত ভিডিওটি পর্যবেক্ষণ করলে ভয়েস ও পারিপার্শ্বিক অবস্থাতেও খানিকটা অস্বাভাবিকতা পরিলক্ষিত হয়, যা সাধারণত কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা প্রযুক্তি দিয়ে তৈরি কনটেন্টে পরিলক্ষিত হয়। এছাড়া, সংবাদ সম্মেলনে বক্তার পেছনে থাকা ব্যানারের বাংলা ভাষার শব্দগুলো অর্থপূর্ণ নয়। বক্তার সামনে থাকা গণমাধ্যমের বুমগুলোতে যেসব গণমাধ্যমের নাম ব্যবহার করা হয়েছে বাস্তবে সেসব গণমাধ্যমের লোগোর ডিজাইন এমন নয়।

বিষয়টি অধিকতর নিশ্চিত হতে কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তার সহায়তায় তৈরি কনটেন্ট শনাক্তকারী টুল ‘ডিপফেক-ও-মিটার’ এর ‘AVSRDD (2025)’ মডেলের মাধ্যমে ভিডিওটি পরীক্ষা করে রিউমর স্ক্যানার। মডেলটির বিশ্লেষণে দেখা যায়, ভিডিওটি এআই দিয়ে তৈরি হওয়ার সম্ভাবনা ৮৬.৯ শতাংশ।

আলোচিত দাবিতে প্রচারিত এই ভিডিওটির দৈর্ঘ ১৬ সেকেন্ড। অনুমান করা হচ্ছে, এই ভিডিওটি গুগলের অত্যাধুনিক এআই টুল Veo দিয়ে তৈরি হওয়ার সম্ভাবনাই বেশি, যেটি ৮ সেকেন্ড সময়ের দীর্ঘ বাস্তবসম্মত ভিডিও তৈরি করতে সক্ষম। ২টি আলাদা ভিডিও একত্রিত করে ১৬ সেকেন্ডের আলোচিত দাবি সম্বলিত ভিডিওটি প্রচার করা হয়েছে।
সুতরাং, এআই দিয়ে তৈরি করা ভিডিওকে মুক্তিযুদ্ধে শহীদের সংখ্যার বিতর্ক নিয়ে পুলিশ সদস্যের বক্তব্য দাবিতে প্রচার করা হয়েছে; যা মিথ্যা।
তথ্যসূত্র
- DeepFake-o-meter: AI Content Detector
- Rumor Scanner’s analysis