চলমান ইরান-ইসরায়েল সংঘাতের প্রেক্ষাপটে, ইসরায়েলের জাতীয় গোয়েন্দা সংস্থা মোসাদের সদর দফতরে ইরানের মিসাইল হামলার দৃশ্য দাবি করে একটি ভিডিও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়েছে। ভিডিওতে দেখা যায়, মিসাইলের আঘাতে একটি বহুতল ভবন ধসে পড়ছে।

উক্ত দাবিতে ফেসবুকে প্রচারিত পোস্ট দেখুন: এখানে, এখানে, এখানে, এখানে, এখানে।
একই দাবিতে ইউটিউবে প্রচারিত ভিডিও দেখুন: এখানে,।
ফ্যাক্টচেক
রিউমর স্ক্যানার টিমের অনুসন্ধানে জানা যায়, আলোচিত ভিডিওটি মোসাদের সদর দফতরে ইরানের হামলার দৃশ্য নয়; বরং এটি কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা (এআই) প্রযুক্তি ব্যবহার করে তৈরি একটি ভুয়া ভিডিও।
ভিডিওটির বিষয়ে অনুসন্ধানে কোনো বিশ্বস্ত গণমাধ্যম বা নির্ভরযোগ্য সূত্রে এর অস্তিত্ব পাওয়া যায়নি।
রিউমর স্ক্যানার টিমের বিশ্লেষণে ভিডিওতে একাধিক এআই-জনিত অসঙ্গতি লক্ষ্য করা গেছে। মিসাইল আঘাতের পূর্বেই ভবনের নিচে অ্যাম্বুলেন্সের উপস্থিতি দেখা যায়, যা বাস্তব পরিস্থিতির সঙ্গে মানানসই নয়। পাশাপাশি, ভবন ধসে পড়ার পরও ওই অ্যাম্বুলেন্সগুলোকে সম্পূর্ণ অক্ষত থাকতে দেখা যায়। মিসাইল, ধোঁয়া, ধ্বংসাবশেষ এবং ভবনের ক্ষয়ক্ষতির দৃশ্যগুলোও কৃত্রিমভাবে তৈরি বলে প্রতীয়মান হয়। ভিডিওতে কয়েকটি মিসাইল হঠাৎ করে দৃশ্যে এসে যায়, যা বাস্তবতার সঙ্গে সামঞ্জস্যপূর্ণ নয়।
ভিডিওটির নিচের ডান কোণে ‘Veo’ নামের একটি জলছাপ রয়েছে। অনুসন্ধানে জানা গেছে, ‘Veo’ গুগলের একটি উন্নত এআই টুল, যা টেক্সট প্রম্পট থেকে ৮ সেকেন্ডের বাস্তবসম্মত ভিডিও তৈরি করতে সক্ষম। এই ভিডিওটির দৈর্ঘ্যও ৮ সেকেন্ড।

বিষয়টি আরও নিশ্চিতের জন্য এআই কনটেন্ট শনাক্তকারী প্ল্যাটফর্ম হাইভ মডারেশনে ভিডিওটি পরীক্ষা করলে দেখা যায়, এটি এআই দিয়ে তৈরি হওয়ার সম্ভাবনা ৯৯ শতাংশ।

এছাড়া, ইরানের বিপ্লবী গার্ড কর্পস (আইআরজিসি) দাবি করেছে, তারা ইসরায়েলের গোয়েন্দা সংস্থা মোসাদের সদর দফতরে হামলা চালিয়েছে এবং একটি ঘাঁটিতে আগুন ধরিয়ে দিয়েছে। তবে, ইরানের তাসনিম নিউজ এজেন্সি প্রচারিত দৃশ্যের সঙ্গে এই ভিডিওর কোনো মিল পাওয়া যায়নি। আইআরজিসির দাবি অনুযায়ী, ঘটনাটি ১৬ জুন ঘটলেও, উল্লিখিত ভিডিওটি এর আগে থেকেই ইন্টারনেটে আলোচিত দাবিতে প্রচার হচ্ছিল।
সুতরাং, এআই দিয়ে তৈরি একটি ভিডিওকে ইরানের হাইপারসনিক মিসাইল হামলার দৃশ্য দাবি করে সামাজিক মাধ্যমে প্রচার করা হচ্ছে, যা সম্পূর্ণ মিথ্যা।
তথ্যসূত্র
- Rumor Scanner’s analysis.
- Hive Moderation.