সম্প্রতি, পাঞ্জাবি-টুপি পরিহিত একজন ব্যক্তিকে পুলিশ সদস্য মেরে রক্তাক্ত করেছে এমন একটি ছবি প্রচার করে দাবি করা হচ্ছে এটি সাম্প্রতিক সময়ের ঘটনা, জুলাই আন্দোলনের চিত্র নয়। উক্ত ছবিটির পাশাপাশি আরেকটি ছবিও প্রচার করা হচ্ছে যেখানে রক্ত মাখা সিঁড়িতে একটি টুপি পড়ে থাকতে দেখা যাচ্ছে।

ফেসবুকে প্রচারিত এমন কিছু পোস্ট দেখুন এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ) এবং এখানে (আর্কাইভ)।
ফ্যাক্টচেক
রিউমর স্ক্যানার টিমের অনুসন্ধানে দেখা যায়, পুলিশ সদস্য কর্তৃক মুসলিম ব্যক্তিকে মারধর কিংবা রক্তমাখা সিঁড়ির ছবিটি সাম্প্রতিক সময়ের কোনো ঘটনার নয় বরং, এগুলো ২০১৩ সালের ০৫ মে রাজধানীর মতিঝিলে হেফাজতে ইসলামের আন্দোলনের সময়কার ছবি।
ছবি যাচাই ১
আলোচিত দাবিতে প্রচারিত প্রথম ছবিটির বিষয়ে অনুসন্ধানে রির্ভাস ইমেজ সার্চের মাধ্যমে স্টক ছবি সংগ্রহকারী প্রতিষ্ঠান Alamy-এর ওয়েবসাইটে প্রচারিত মূল ছবিটির সন্ধান পাওয়া যায়।

ছবিটির বিবরণী থেকে জানা যায়, এটি ২০১৩ সালের ৫ মে ঢাকায় হেফাজতে ইসলামের আন্দোলনে পুলিশের লাঠিচার্জ করার মুহুর্তে ধারণ করা হয়েছে।
অর্থাৎ, উক্ত ছবিটি সাম্প্রতিক সময়ের কোনো ঘটনার নয়।
ছবি যাচাই ২
দ্বিতীয় ছবিটির বিষয়ে অনুসন্ধানেও রিভার্স ইমেজ সার্চের মাধ্যমে Alamy-এর ওয়েবসাইটে প্রচারিত মূল ছবিটি খুঁজে পাওয়া যায়।

উক্ত ছবির বিবরণী থেকে জানা যায়, এটিও একইদিনের একই আন্দোলনের অর্থাৎ, ২০১৩ সালের ৫ মের হেফাজতে ইসলামের আন্দোলনের ছবি।
অর্থাৎ, সাম্প্রতিক সময়ে ইসলামপন্থীদের ওপর পুলিশের হামলা করার দাবিতে প্রচারিত উভয় ছবি-ই ২০১৩ সালের হেফাজতে ইসলামের আন্দোলনের সময় ধারণ করা।
উল্লেখ্য, ২০১৩ সালের ৫ মে কয়েকজন ব্লগারের বিরুদ্ধে ইসলাম ধর্ম নিয়ে কটূক্তি করার অভিযোগ ও নারী নীতির বিরোধিতাসহ ১৩ দফা দাবি তুলে ঢাকার শাপলা চত্বরে মহাসমাবেশ করে হেফাজতে ইসলাম। হেফাজতের নেতা-কর্মীদের সরাতে মধ্যরাতে কঠোর হয় তৎকালীন আওয়ামী লীগ সরকার। আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী হেফাজত নেতা-কর্মীদের সরিয়ে দিতে লাঠিচার্জ, মুহুর্মুহু গুলি ও সাউন্ড গ্রেনেড নিক্ষেপ করে।
সুতরাং, সাম্প্রতিক সময়ে ইসলামপন্থীদের ওপর পুলিশের হামলা চালানোর দৃশ্য দাবিতে ২০১৩ সালের হেফাজতে ইসলামের আন্দোলনের সময়কার ছবি প্রচার করা হয়েছে; যা মিথ্যা।
তথ্যসূত্র
- Alamy Website: Image
- Alamy Website: Image
- Independent Television Website: শাপলা চত্বরে হেফাজতের সমাবেশের একযুগ: বিচার চায় নিহতদের পরিবার
- Rumor Scanner’s Analysis