গণতান্ত্রিক ছাত্র সংসদের কেন্দ্রীয় যুগ্ম আহ্বায়ক খান তালাত মাহমুদ রাফির স্ত্রী জান্নাতুল ফেরদৌসী (মিতু) সম্প্রতি তার ব্যক্তিগত ফেসবুক প্রোফাইলে ‘আমাদের বৃষ্টি বিলাস’ ক্যাপশনে বৃষ্টিভেজা অবস্থায় তোলা স্বামী-স্ত্রীর কিছু ছবি প্রকাশ করেন।
এই ঘটনাকে কেন্দ্র করে সামাজিক মাধ্যমে ‘বৃষ্টিতে ভিজতে গিয়ে ইভটিজিং এর স্বীকার রাফি এবং তার সহধর্মিণী’ শীর্ষক শিরোনামে মূলধারার গণমাধ্যম জনকণ্ঠের লোগো সংবলিত একটি ফটোকার্ড প্রচার করা হচ্ছে।

উক্ত দাবিতে ফেসবুকে প্রচারিত পোস্ট দেখুন: এখানে, এখানে, এখানে, এখানে।
এছাড়া, ‘রাফি এবং তার সহধর্মিণী ইভটিজিং স্বীকার হওয়া তীব্রনিন্ধা জানান[ আসিফ মাহমুদ]’ শীর্ষক শিরোনামে মূলধারার গণমাধ্যম কালবেলার সংবলিত আরেকটি ফটোকার্ড সামাজিক মাধ্যমে প্রচার করা হচ্ছে।

উক্ত দাবিতে ফেসবুকে প্রচারিত পোস্ট দেখুন: এখানে, এখানে, এখানে, এখানে।
ফ্যাক্টচেক
রিউমর স্ক্যানার টিমের অনুসন্ধানে জানা যায়, বৃষ্টিতে ভিজতে গিয়ে খান তালাত মাহমুদ রাফি ও তার সহধর্মিণী ইভটিজিংয়ের শিকার হননি এবং এ বিষয়ে উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদ সজীব ভূঁইয়াও কোনো নিন্দা জানাননি। বরং ডিজিটাল সম্পাদনার মাধ্যমে দুই মূলধারার গণমাধ্যম জনকণ্ঠ ও কালবেলার নামে ভুয়া ফটোকার্ড তৈরি করে এই দাবিগুলো সামাজিক মাধ্যমে প্রচার করা হচ্ছে।
অনুসন্ধানের শুরুতে প্রথম ফটোকার্ডটি পর্যালোচনা করে দেখা যায়, এতে জনকণ্ঠের লোগো ব্যবহৃত হলেও প্রকাশের কোনো তারিখ উল্লেখ নেই। সাধারণত জনকণ্ঠের ফটোকার্ডগুলোতে প্রকাশের তারিখ উল্লেখ থাকে, যা এই ফটোকার্ডে দেখা যায়নি।
জনকণ্ঠের লোগোর সূত্র ধরে গণমাধ্যমটির অফিশিয়াল ফেসবুক পেজে সাম্প্রতিক সময়ে প্রকাশিত ফটোকার্ডগুলো পর্যবেক্ষণ করে, উক্ত শিরোনাম সংবলিত কোনো ফটোকার্ডের অস্তিত্ব পাওয়া যায়নি। একইভাবে জনকণ্ঠের ওয়েবসাইট এবং দেশের অন্যান্য গণমাধ্যমেও এ সংক্রান্ত কোনো প্রতিবেদন বা তথ্য প্রকাশিত হয়নি। এমনকি রাফি বা তার স্ত্রীর ব্যক্তিগত ফেসবুক প্রোফাইলেও এ বিষয়ে কোনো বক্তব্য বা তথ্য পাওয়া যায়নি।
এছাড়া, পর্যবেক্ষণে আলোচিত দাবির ফটোকার্ডটির ফন্ট, কালার গ্রেডিংয়ের সাথে জনকণ্ঠের প্রচলিত ফটোকার্ডের ফন্ট, কালার গ্রেডিংয়ের পার্থক্য লক্ষ্য করা যায়।

অর্থাৎ, জনকণ্ঠের ফটোকার্ডের ডিজাইন নকল করে আলোচিত ফটোকার্ডটি তৈরি করা হয়েছে।
একইভাবে, দ্বিতীয় ফটোকার্ডটি পর্যালোচনায় দেখা যায়, এতে কালবেলার লোগো এবং এটি প্রকাশের তারিখ ২০ মে, ২০২৫ উল্লেখ রয়েছে।
এই তথ্যের ভিত্তিতে কালবেলার অফিসিয়াল ফেসবুক পেজে এবং ওয়েবসাইটে উক্ত তারিখসহ সংশ্লিষ্ট শিরোনামে কোনো ফটোকার্ড বা সংবাদ পাওয়া যায়নি। দেশের অন্য কোনো গণমাধ্যমেও এ বিষয়ে কোনো প্রতিবেদন প্রকাশিত হয়নি।
এছাড়া, পর্যবেক্ষণে আলোচিত দাবির ফটোকার্ডটির ফন্ট, কালার গ্রেডিংয়ের সাথে কালবেলার প্রচলিত ফটোকার্ডের ফন্ট, কালার গ্রেডিংয়ের পার্থক্য লক্ষ্য করা যায়।

অর্থাৎ, কালবেলার ফটোকার্ডের ডিজাইন নকল করে আলোচিত ফটোকার্ডটি তৈরি করা হয়েছে।
সুতরাং, ‘বৃষ্টিতে ভিজতে গিয়ে খান তালাত মাহমুদ রাফি ও তার সহধর্মিণী ইভটিজিংয়ের শিকার হয়েছেন এবং এই বিষয়ে উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদ সজীব ভূঁইয়া তীব্র নিন্দা জানিয়েছেন’ শীর্ষক দাবিতে জনকণ্ঠ ও কালবেলার নামে প্রচারিত ফটোকার্ডগুলো ভুয়া ও বানোয়াট।
তথ্যসূত্র
Rumor Scanner’s analysis.
Janakantha: Facebook Page
Kalbela: Facebook Page