একুশে টিভির ফটোকার্ড নকল করে পিনাকী ভট্টাচার্যের নামে ভুয়া মন্তব্য প্রচার

সম্প্রতি, “ইতিহাসের সেরা মিথ্যাক মিথ্যা গল্পের রাজা পিনিক” শীর্ষক শিরোনামে বেসরকারি টেলিভিশন চ্যানেল একুশে টিভি’র ডিজাইন সম্বলিত একটি ফটোকার্ড সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে প্রচার করা হচ্ছে।

ফেসবুক প্রচারিত এমন ফটোকার্ড দেখুন এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ) এবং এখানে (আর্কাইভ)।

ফ্যাক্টচেক

রিউমর স্ক্যানার টিমের অনুসন্ধানে জানা যায়, “ইতিহাসের সেরা মিথ্যাক মিথ্যা গল্পের রাজা পিনিক” শীর্ষক দাবিতে একুশে টিভি কোনো ফটোকার্ড বা সংবাদ প্রকাশ করেনি বরং, একুশে টিভি কর্তৃক প্রকাশিত ভিন্ন শিরোনামের একটি ফটোকার্ড ডিজিটাল প্রযুক্তির সহায়তায় সম্পাদনার মাধ্যমে আলোচিত ফটোকার্ডটি তৈরি করা হয়েছে।

এ বিষয়ে অনুসন্ধানে আলোচিত ফটোকার্ডটি পর্যবেক্ষণ করে দেখা যায়, ফটোকার্ডটিতে একুশে টিভি’র নাম, লোগো এবং এটি প্রকাশের তারিখ হিসেবে ‘২৬  জানুয়ারি ২০২৫’ উল্লেখ করা হয়েছে।

পরবর্তী অনুসন্ধানে একুশে টিভির লোগো ও প্রকাশের তারিখের সূত্র ধরে গণমাধ্যমটির ভেরিফায়েড ফেসবুক পেজে সাম্প্রতিক সময়ে প্রকাশিত ফটোকার্ডগুলো পর্যবেক্ষণ করে ‘ইতিহাসের সেরা মিথ্যাক মিথ্যা গল্পের রাজা পিনিক’ শীর্ষক শিরোনাম সম্বলিত কোনো ফটোকার্ড খুঁজে পাওয়া যায়নি। এছাড়াও, একুশে এর ওয়েবসাইট কিংবা ইউটিউব চ্যানেলে উক্ত দাবির পক্ষে কোনো সংবাদ বা ফটোকার্ড খুঁজে পাওয়া যায়নি।

তবে গত ২৬ জানুয়ারি গণমাধ্যমটির ভেরিফায়েড ফেসবুক পেজে ‘গণহত্যায় জড়িত এক পুলিশকে গ্রেপ্তারের খবর দিলেন পিনাকী’ শীর্ষক শিরোনামে প্রকাশিত একটি ফটোকার্ড খুঁজে পাওয়া যায়। উক্ত ফটোকার্ডটি পর্যবেক্ষণ করে দেখা যায়, আলোচিত দাবিতে প্রচারিত ফটোকার্ডটির সাথে এই ফটোকার্ডটির ডিজাইনের মিল রয়েছে।

Photocard Comparison by Rumor Scanner

তবে, আলোচিত ফটোকার্ডের শিরোনাম ও শিরোনামে ব্যবহৃত ফন্টের সাথে একুশে টিভির ফটোকার্ডের ফন্টের পার্থক্য পরিলক্ষিত হয়। উভয় ফটোকার্ডের পিনাকী ভট্টাচার্যের ছবির মিল থাকলেও শিরোনামে পরিবর্তন দেখা যায়।

এছাড়া, সাধারণত গণমাধ্যমের ফটোকার্ডে বানান ভুল পরিলক্ষিত হয় না যা উক্ত ফটোকার্ডটিতে লক্ষ্য করা গেছে। 

অর্থাৎ, একুশে টিভির এই ফটোকার্ডটি ডিজিটাল প্রযুক্তির সহায়তায় সম্পাদনার মাধ্যমে আলোচিত ফটোকার্ডটি তৈরি করা হয়েছে। 

পরবর্তীতে, এ বিষয়ে প্রাসঙ্গিক কি-ওয়ার্ড সার্চ করলে একুশে টিভির ওয়েবসাইটে ২৬ জানুয়ারি “গণহত্যায় জড়িত এক পুলিশকে গ্রেপ্তারের খবর দিলেন পিনাকী!” শীর্ষক শিরোনামে প্রকাশিত একটি সংবাদ প্রতিবেদন পাওয়া যায়৷

উক্ত প্রতিবেদন থেকে জানা যায়, জুলাই আন্দোলনে রামপুরা-বনশ্রীর মেরাদিয়া বাজারে গুলি চালায় পুলিশ। অনেকে চলে যেতে পারলেও এক কিশোর একটি নির্মানাধীন বিল্ডিংয়ের ৪ তলা কার্ণিশে ঝুলেছিলেন। কিন্তু উপর থেকে তাকে দেখে গুলি করে হত্যা করে পুলিশ। রোববার পিনাকী ভট্টাচার্য তার ভেরিফায়েড ফেসবুকে পোস্টে জানিয়েছেন ওই পুুলিশকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। রোববার (২৬ জানুয়ারি) সন্ধ্যায় তার ফেসবুকে এক স্ট্যাটাসে তিনি বলেন, মনে আছে রামপুরায় ছাদে ঝুলে লুকিয়ে ছিল একজন ছাত্র। ওপর থেকে গুলি করেছিল পুলিশ। সেই পুলিশের এসআই চঞ্চল সরকারকে ধাওয়া করে ধরা হয়েছে খাগড়াছড়িতে।

সুতরাং, ‘ইতিহাসের সেরা মিথ্যাক মিথ্যা গল্পের রাজা পিনিক’ শীর্ষক শিরোনামে একুশে টিভির নামে প্রচারিত ফটোকার্ডটি এডিটেড বা সম্পাদিত।

তথ্যসূত্র

আরও পড়ুন

spot_img