নির্বাহী ক্ষমতা ছাড়া সেনাবাহিনী নামতে রাজি হচ্ছে না শীর্ষক দাবিতে ডেইলি স্টার কোনো সংবাদ প্রকাশ করেনি

বাংলাদেশে সম্প্রতি সরকারি চাকরির কোটা সংস্কারের দাবিতে হওয়া আন্দোলন এবং পরবর্তী সংঘাত ও সংঘর্ষের ঘটনাপ্রবাহের মধ্যে অন্তত গতকাল (০২ আগস্ট) থেকে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে জাতীয় দৈনিক দ্য ডেইলি স্টার এর সূত্র ব্যবহার করে দাবি করা হচ্ছে, “নির্বাহী ক্ষমতা ছাড়া সেনাবাহিনী নামতে রাজি হচ্ছে না।”

সেনাবাহিনী

উক্ত দাবিতে ফেসবুকের কিছু পোস্ট দেখুন এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ)। 

ফ্যাক্টচেক 

রিউমর স্ক্যানার টিমের অনুসন্ধানে জানা যায়, “নির্বাহী ক্ষমতা ছাড়া সেনাবাহিনী নামতে রাজি হচ্ছে না।” শীর্ষক দাবিতে ডেইলি স্টার কোনো সংবাদ প্রকাশ করেনি বরং দ্য মিরর এশিয়া নামে জার্মানী থেকে নিয়ন্ত্রিত একটি বাংলা ভাষায় গণমাধ্যমে এমন সংবাদ গত ১৯ জুলাই প্রকাশিত হয়। যদিও পরবর্তী সময়ে সেনাবাহিনী মোতায়েন করার পর এই বাহিনীকে এখনও দায়িত্ব পালন করতে দেখা যাচ্ছে। 

এ বিষয়ে ডেইলি স্টারের ওয়েবসাইট, প্রিন্ট সংস্করণ এমনকি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমের পেজ ও চ্যানেলে উক্ত দাবিতে প্রচারিত কোনো সংবাদের অস্তিত্ব মেলেনি। 

কিওয়ার্ড সার্চ করে দেখা যায়, দ্য মিরর এশিয়া নামে জার্মানী থেকে নিয়ন্ত্রিত একটি বাংলা ভাষার সংবাদমাধ্যমে গত ১৯ জুলাই একই দাবিতে সংবাদ প্রকাশিত হয়। 

প্রতিবেদনে দাবি করা হয়, কোটা বিরোধী আন্দোলনকে ঘিরে সারাদেশে ব্যাপক প্রাণহানির ঘটনায় পরিস্থিতি মোকাবিলায় ১৭ জুলাই রাতেই সেনাবাহিনী নামানোর পরিকল্পনা করেছিল সরকার। কিন্তু সেনাবাহিনী নির্বাহী ক্ষমতা ছাড়া রাজপথে নামতে রাজি হচ্ছে না। এই গণমাধ্যমটির দাবি, সরকারের একটি সূত্র তাদের বিষয়টি নিশ্চিত করেছে। 

প্রতিবেদনে দাবি করা হয়, কারফিউ জারির সিদ্ধান্ত থেকে সরকার সরে এসেছে। সেনাবাহিনী না নামলে কারফিউ জারির চিন্তাভাবনা করেছিল সরকার। 

তবে এই সংবাদ প্রকাশের পর গত ১৯ জুলাই শুক্রবার দিবাগত রাত ১২টা থেকে দেশে কারফিউ জারি করে সরকার। একই সময় থেকে বেসামরিক প্রশাসনকে সহায়তা করার জন্য সেনাবাহিনীও মোতায়েন করা হয়। পরবর্তী সময়ে প্রতিদিন নির্দিষ্ট সময়ে কারফিউ শিথিল থাকলেও সেনাবাহিনী এখন পর্যন্ত মাঠে রয়েছে। 

মূলত, বাংলাদেশে সাম্প্রতিক সরকারি চাকরির কোটা সংস্কারের দাবিতে হওয়া আন্দোলন এবং পরবর্তী সংঘাত ও সংঘর্ষের ঘটনাপ্রবাহের মধ্যে অন্তত গতকাল (০২ আগস্ট) থেকে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে দ্য ডেইলি স্টার এর সূত্র ব্যবহার করে দাবি করা হচ্ছে, “নির্বাহী ক্ষমতা ছাড়া সেনাবাহিনী নামতে রাজি হচ্ছে না।” তবে রিউমর স্ক্যানার যাচাই করে দেখেছে, ডেইলি স্টার এমন কোনো তথ্য দেয়নি। তবে দ্য মিরর এশিয়া নামে আরেকটি সংবাদমাধ্যমে একই দাবিতে গত ১৭ জুলাই সংবাদ প্রকাশিত হয়। যদিও এর দুইদিন পরই দেশে কারফিউ জারি হলে সেনাবাহিনী মাঠে নামে। এই বাহিনী এখনও আইনশৃঙ্খলা নিয়ন্ত্রণে মাঠে রয়েছে। 

উল্লেখ্য, দ্য মিরর এশিয়া নামের ওয়েবসাইটটির ডোমেইনটি গত ৩১ মে কেনা হয় এবং এটি গত ০১ জুন থেকে কার্যক্রম শুরু করেছে। এই ওয়েবসাইটের বিশ্বাসযোগ্যতা স্বতন্ত্রভাবে যাচাই করতে সক্ষম হয়নি রিউমর স্ক্যানার।

সুতরাং, নির্বাহী ক্ষমতা ছাড়া সেনাবাহিনী নামতে রাজি হচ্ছে না শীর্ষক দাবিতে ডেইলি স্টার সংবাদ প্রকাশ করেছে শীর্ষক একটি দাবি ইন্টারনেটে প্রচার করা হয়েছে; যা সম্পূর্ণ মিথ্যা। 

তথ্যসূত্র

আরও পড়ুন

spot_img