গত ১৭ এপ্রিল জাতীয় দৈনিক যুগান্তর পত্রিকার ওয়েবসাইটে “তুরস্কে নির্বাচন, জরিপে এগিয়ে এরদোগান“ শিরোনামে একটি প্রতিবেদন প্রকাশিত হয়।
প্রতিবেদনের শেষ অংশে যুগান্তর দাবি করেছে, “এদিকে ২৮ এপ্রিল থেকে ১ মে এর মধ্যে করা আরেকটি জরিপে দেখা গেছে, প্রায় ৫২ দশমিক ৬ শতাংশ মানুষ এরদোগানের পক্ষে। আর ৪৭ দশমিক ৪ শতাংশ মানুষ বিরোধী জোটের পক্ষে অবস্থান নিয়েছেন।”

লক্ষ্য করুন, প্রতিবেদন প্রকাশ হয়েছে ১৭ এপ্রিল (রাত ৮:৪৩ মিনিটে) । কিন্তু জরিপের তারিখ উল্লেখ করা হয়েছে ২৮ এপ্রিল থেকে ১ মে।
এর মানে দাঁড়াচ্ছে, জরিপের ১১ দিন আগেই জরিপের ফলাফল জানিয়ে দিয়েছে যুগান্তর!
আমরা এ বিষয়ে পরবর্তীতে আরও অনুসন্ধান করে পরদিন অর্থাৎ ১৮ এপ্রিল দেশের আরও কিছু গণমাধ্যমে একই সংবাদ খুঁজে পেয়েছি।
সংবাদগুলো দেখুন বাংলা খবর ২৪ (১৭ এপ্রিল রাত ৯:১৫), নয়া দিগন্ত (১৮ এপ্রিল রাত ১২:০৫), ডেইলি অবজারভার (১৮ এপ্রিল সকাল ৯:৫০), রিদ্মিক নিউজ (১৮ এপ্রিল দুপুর ১২:৩০ জিএমটি ৬:৩০), দৈনিক করতোয়া (১৮ এপ্রিল রাত ৭:৫৩), ইনকিলাব (১৮ এপ্রিল রাত ০৮:১৮)।
রিউমর স্ক্যানার টিমের পর্যবেক্ষণে দেখা যায়, যুগান্তর এ বিষয়ে দেশে প্রথম সংবাদ প্রকাশের পর যুগান্তরের প্রতিবেদনের আলোচিত শেষ অংশটি অন্যান্য গণমাধ্যমগুলো হুবহু প্রকাশ করেছে।
এই সংবাদের তথ্যসূত্র হিসেবে যুগান্তর ‘Daily Sabah’ এর নাম উল্লেখ করেছে।
পরবর্তীতে তুরস্কের সংবাদমাধ্যম ‘Daily Sabah’ এর ওয়েবসাইটে গত ১৬ এপ্রিল “Erdoğan leads in surveys ahead of Turkish elections” শিরোনামে প্রকাশিত একটি প্রতিবেদনে আলোচিত তথ্যটি খুঁজে পাওয়া যায়।

ডেইলি সাবাহ লিখেছে, জরিপকারী সংস্থা Areda survey company এর করা গত ১২ থেকে ১৪ এপ্রিলের একটি জরিপে দেখা গেছে, তুরস্কের নির্বাচনে এরদোয়ানের পক্ষে থাকবেন প্রায় ৫০ দশমিক ৮ শতাংশ মানুষ। অন্যদিকে প্রায় ৪৩ দশমিক ১ শতাংশ মানুষ বিরোধী জোটের পক্ষে অবস্থান নেবেন। একই নির্বাচন দ্বিতীয় দফায় গড়ালে এরদোয়ানের পক্ষে থাকবেন প্রায় ৫২ দশমিক ৬ শতাংশ মানুষ। অন্যদিকে প্রায় ৪৭ দশমিক ৪ শতাংশ মানুষ বিরোধী জোটের পক্ষে অবস্থান নেবেন।
ডেইলি সাবাহ আরো বলছে, একই সংস্থা ২৮ মার্চ থেকে ০১ এপ্রিল আরেকটি জরিপ পরিচালনা করেছিল। উক্ত জরিপের বিস্তারিত উল্লেখ না থাকলেও প্রতিবেদনে বলা হয়, উক্ত জরিপ থেকে এই জরিপে ০.২ শতাংশ বেশি ভোট পেয়েছেন এরদোয়ান।
অর্থাৎ, আলোচিত জরিপকেই ভিন্ন একটি জরিপ দাবি করে বাংলাদেশের কতিপয় গণমাধ্যম জরিপটির তারিখ উল্লেখ করেছে ২৮ এপ্রিল থেকে ০১ মে। কিন্তু গণমাধ্যমগুলোর সূত্র হিসেবে ব্যবহৃত সংবাদমাধ্যম ডেইলি সাবাহ’র প্রতিবেদনে একই জরিপেরই প্রথম ও দ্বিতীয় দফার ফলাফল প্রকাশ করা হয়েছে, যেখানে উক্ত জরিপের তারিখ উল্লেখ করা হয়েছে, ১২ থেকে ১৪ এপ্রিল।
আরও অনুসন্ধান করে, Areda survey company এর টুইটার অ্যাকাউন্টে গত ১৫ এপ্রিল আলোচিত জরিপটির বিষয়ে একটি টুইট খুঁজে পাওয়া যায়। এই টুইটেও জরিপের তারিখ ১২ থেকে ১৪ এপ্রিল উল্লেখ করে একই ফলাফল উপস্থাপন করা হয়েছে।

সুতরাং, অর্থাৎ, তুরস্কের প্রেসিডেন্ট নির্বাচনকে সামনে রেখে পরিচালিত জরিপ নিয়ে গণমাধ্যমে প্রচারিত উল্লিখিত তথ্যগুলো সঠিক নয়।
তথ্যসূত্র
- Daily Sabah: Erdoğan leads in surveys ahead of Turkish elections
- Areda survey company: Tweet
- Rumor Scanner’s own analysis