সম্প্রতি “উচিৎ শিক্ষা পাবে কোহলি। ফেক ফিল্ডিং করায় আজীবন নিষিদ্ধ হতে পারেন কোহলি। কাঁদছে আনুশকা” শীর্ষক শিরোনামের একটি তথ্য সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুক এবং ভিডিও শেয়ারিং প্ল্যাটফর্ম ইউটিউবে প্রচারিত হচ্ছে।

ফেসবুক এবং ইউটিউবে প্রচারিত এরকম পোস্ট দেখুন এখানে, এখানে, এখানে এবং এখানে।
পোস্টগুলোর আর্কাইভ ভার্সন দেখুন এখানে, এখানে, এখানে এবং এখানে।
ফ্যাক্টচেক
রিউমর স্ক্যানার টিমের অনুসন্ধানে জানা যায়, ফেক ফিল্ডিং এর দায়ে বিরাট কোহলি নিষিদ্ধ হন নি বরং আম্পায়ারের চোখ এড়িয়ে যাওয়ায় ফেক ফিল্ডিংয়ের দায়ে কোনো সিদ্ধান্ত হয় নি এবং বিরাট কোহলিকেও কোনো শাস্তির সম্মুখীন হতে হয় নি।
অনুসন্ধানে, চলমান টি-টোয়েন্টি ক্রিকেট টুর্নামেন্টে বাংলাদেশ-ভারত ম্যাচে বিরাট কোহলির ফেক ফিল্ডিংয়ের কারণে নিষিদ্ধ হওয়ার কোনো সংবাদ মূলধারার কোনো গণমাধ্যমে পাওয়া যায় নি। এমনকি ফেক ফিল্ডিংয়ের শাস্তি হিসেবে নিষিদ্ধ হওয়ার কোনো তথ্যই আইসিসির ওয়েবসাইট এবং মূলধারার কোনো গণমাধ্যমে পাওয়া যায় নি।
এছাড়াও কি ওয়ার্ড সার্চের মাধ্যমে, Firstpost এর ওয়েবসাইটে “Explained: Virat Kohli ‘fake fielding’ row and what are the laws” শীর্ষক শিরোনামের একটি প্রতিবেদন পাওয়া যায়। উক্ত প্রতিবেদনে বাংলাদেশ-ভারত ম্যাচে ফেক ফিল্ডিং সম্পর্কে বিস্তারিত বর্ণনা পাওয়া যায়। এছাড়াও ফেক ফিল্ডিং সম্পর্কে আইসিসির নিয়মও বিস্তারিত লেখা হয়।

উক্ত প্রতিবেদন থেকে জানা যায়, আইসিসির নিয়ম অনুযায়ী কোনো খেলোয়াড় ব্যাটসম্যানের মনযোগে বিঘ্ন ঘটানোর উদ্দেশ্যে ফেক ফিল্ডিং করলে “আনফেয়ার প্লে” হিসেবে চিহ্নিত করা হবে। এতে করে ব্যাটিংয়ে থাকা দল পাঁচ রান পেনাল্টি পাবে অর্থাৎ স্কোরবোর্ডে পাঁচ রান যুক্ত হবে।

তবে ফেক ফিল্ডিং এর দায়ে নিষিদ্ধ হওয়ার কোনো তথ্য নির্ভরযোগ্য কোনো সূত্রে পাওয়া যায় নি।
উল্লেখ্য, গত ২ নভেম্বর বাংলাদেশ-ভারত ম্যাচের ৭ম ওভারে রান নেয়ার সময় বিরাট কোহলি হাতে বল না থাকার পরেও স্ট্যাম্প উদ্দেশ্য করে ফেক থ্রো করেন। সেসময় ব্যাট করছিলেন বাংলাদেশের লিটন দাস ও নুরুল ইসলাম সোহান। সেসময় আম্পায়ারকে ফেক ফিল্ডিংয়ের বিষয়টি অবগত করেন সোহান। কিন্তু আম্পায়ারের দৃষ্টি এড়িয়ে যাওয়ায় ফেক ফিল্ডিংয়ের আবেদন নাকচ হয়ে যায়। তবে রিপ্লেতে ফেক ফিল্ডিংয়ের বিষয়টি বুঝা গেলে এ নিয়ে ক্রিকেটপাড়ায় বেশ আলোচনা সমালোচনা হয়।
প্রসঙ্গত, ২০১৭ সালে ফেক ফিল্ডিং বিষয়ক সিদ্ধান্ত নেয় বিশ্ব ক্রিকেটের সর্বোচ্চ সংস্থা আইসিসি। আইসিসির ৪১.৫ ধারা অনুযায়ী, ব্যাটারকে কোনও ভাবে বাধা দিলে বা বিক্ষিপ্ত করার চেষ্টা করলে আম্পায়াররা ঘটনার গুরুত্ব বুঝে বিপক্ষ দলকে পাঁচ রান শাস্তি হিসাবে দিতে পারেন। তবে উক্ত কারণে কোনো খেলোয়াড়কে নিষিদ্ধ করার নিয়ম আইসিসির ক্রিকেটের কোনো ধারায় উল্লেখ করা হয় নি। ফেক ফিল্ডিং সম্পর্কে বিস্তারিত প্রতিবেদন প্রকাশ করে ক্রিকেট বিষয়ক ওয়েবসাইট Wisden.

মূলত, গত ২ নভেম্বর চলমান টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপে বাংলাদেশ-ভারত ম্যাচের ৭ম ওভারে রান নেয়ার সময় বিরাট কোহলি হাতে বল না থাকার পরেও স্ট্যাম্প উদ্দেশ্য করে ফেক থ্রো করেন। সেসময় আম্পায়ারকে ফেক ফিল্ডিংয়ের বিষয়টি অবগত করেন সোহান। কিন্তু আম্পায়ারের দৃষ্টি এড়িয়ে যাওয়ায় ফেক ফিল্ডিংয়ের আবেদন নাকচ হয়ে যায়। তবে রিপ্লেতে ফেক ফিল্ডিংয়ের বিষয়টি বুঝা গেলে এ নিয়ে ক্রিকেটপাড়ায় বেশ আলোচনা সমালোচনা হয়। উক্ত ঘটনাকেই অতিরঞ্জিতভাবে কোনোপ্রকার তথ্যসূত্র ছাড়াই ভিত্তিহীনভাবে বিরাট কোহলি নিষিদ্ধ হতে পারে দাবিতে প্রচার করা হচ্ছে।
সুতরাং, ফেক ফিল্ডিং করায় বিরাট কোহলি আজীবন নিষিদ্ধ হওয়ার দাবিতে প্রচারিত তথ্যটি মিথ্যা।