মন্দিরে কোরআন রাখার চেষ্টায় এক ব্যক্তির আটক হওয়ার ঘটনাটি পুরোনো

সম্প্রতি, “আবারও মন্দিরে কোরান রাখার চেষ্টা, মন্দিরে কোরান রাখার সময় এক ব্যক্তিকে আটক করা হয়েছে।” শীর্ষক দাবিতে একটি ভিডিও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুক ও টুইটারে ছড়িয়ে পড়েছে।

ফেসবুকে প্রচারিত এমন কিছু পোস্ট দেখুন এখানে, এখানে, এখানে, এখানে এবং এখানে। 
পোস্টগুলোর আর্কাইভ ভার্সন দেখুন এখানে, এখানে, এখানে, এখানে এবং এখানে

টুইটারে প্রচারিত এমন কিছু টুইট দেখুন এখানে, এখানে এবং এখানে। 
টুইটগুলোর আর্কাইভ ভার্সন দেখুন এখানে, এখানে এবং এখানে

ফ্যাক্টচেক

রিউমর স্ক্যানার টিমের অনুসন্ধানে জানা যায়, মন্দিরে কোরআন রাখার চেষ্টার অভিযোগে গ্রেফতারের ঘটনায় প্রচারিত ভিডিওটি চলমান দুর্গা পূজার সময়ের নয় বরং ভিডিওটি গত এপ্রিল মাসে পটুয়াখালীর বাউফলে একটি কালি মন্দিরে ধারণকৃত।

কি-ওয়ার্ড অনুসন্ধানের মাধ্যমে দেশীয় মূলধারার গণমাধ্যম দৈনিক জনকণ্ঠ এর ফেসবুক পেজে ২০২২ সালের ২৯ এপ্রিল ‘আবারও মন্দিরে কোরআন রাখার অপচেষ্টা‘ শীর্ষক শিরোনামে প্রচারিত একটি ভিডিও খুঁজে পাওয়া যায়। উক্ত ভিডিওর সাথে সম্প্রতি আবারও মন্দিরে কোরআন রাখার চেষ্টায় এক ব্যক্তি আটক দাবিতে প্রচারিত ভিডিওটির হুবহু মিল খুঁজে পাওয়া যায়।

জনকণ্ঠের ফেসবুক পেজে প্রচারিত ভিডিওটির বিস্তারিত অংশ থেকে জানা যায়, ‘বাউফলের বগা ইউনিয়নের উত্তর রাজনগর গ্রামে কালি মন্দিরে পবিত্র কুরআন শরীফ রাখার সময় মোঃ ইদ্রিস খান নামের এক ব্যক্তিকে আটক করে পুলিশের কাছে সোপর্দ করেছে জনতা।’

এছাড়াও মূলধারার গণমাধ্যম ‘দৈনিক প্রথম আলো’ এর ওয়েবসাইটে ২০২২ সালে ২৮ এপ্রিল “বাউফলে মন্দিরে কোরআন শরিফ রাখার অভিযোগে গ্রেপ্তার” শীর্ষক শিরোনামে প্রকাশিত একটি প্রতিবেদন খুঁজে পাওয়া যায়।

মূলত, ২০২২ সালের ২৮ এপ্রিল রাতে পটুয়াখালীর বাউফলের বগা ইউনিয়নের উত্তর রাজনগর গ্রামে কালি মন্দিরে মো. ইদ্রিস নামের এক ব্যক্তি কোরআন শরীফ রেখে পালাতে গিয়ে স্থানীয়দের হাতে ধরা পড়েন এবং পরবর্তীতে স্থানীয়রা তাকে পুলিশের হাতে হস্তান্তর করে এবং পুলিশ তাকে গ্রেফতার করে। তবে, ৫ মাস পূর্বের এই ঘটনায় ধারণকৃত একটি ভিডিও বর্তমানে ‘চলমান দুর্গা পূজার সময়ে কোরআন রাখার চেষ্টা করা হয়েছে’ দাবি করে টুইটার এবং ফেসবুকে প্রচার করা হচ্ছে।

উল্লেখ্য, ২০২১ সালের ১৩ অক্টোবর শারদীয় দুর্গাপূজার মহা অষ্টমীর দিন সকালে কুমিল্লা শহরের নানুয়া দীঘির উত্তর পাড়ে অস্থায়ী পূজামণ্ডপে একটি কোরআন শরীফ পাওয়া যায়। উক্ত ঘটনায় কোরআন অবমাননার অভিযোগে কুমিল্লাসহ দেশব্যপী উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়ে এবং কয়েকটি মন্দিরে হামলার ঘটনা ঘটে। এবং এসব ঘটনায় পুলিশের সাথে সংঘর্ষে বেশ কয়েকজন নিহত হন। পরবর্তীতে ঘটনাস্থলের আশপাশের সিসিটিভি ফুটেজ পর্যালোচনা করে পূজামণ্ডপে কোরআন রাখার অভিযোগে সন্দেহভাজন যুবক ইকবাল হোসেনকে শনাক্ত করে কক্সবাজার থেকে গ্রেফতার করে পুলিশ।

সুতরাং, চলতি বছরের গত এপ্রিল মাসে পটুয়াখালীর বাউফলে একটি কালি মন্দিরে মো. ইদ্রিস নামের এক ব্যক্তি কোরআন রেখে পালাতে গিয়ে স্থানীয়দের হাতে ধরা পড়ার ভিডিওকে সম্প্রতি আবারও মন্দিরে কোরআন রাখার চেষ্টা দাবিতে ফেসবুকে ও ইউটিউবে প্রচারিত হয়েছে; যা সম্পূর্ণ বিভ্রান্তিকর।

তথ্যসূত্র

আরও পড়ুন

spot_img