শরীয়তপুর গোসাইরহাটে শিক্ষার্থীদের আন্দোলনে অসুস্থ হয়ে পড়া শিক্ষক মারা যাননি 

গত জুলাইয়ের শুরুতে সরকারি চাকরিতে কোটা সংস্কারের দাবিতে শুরু হওয়া আন্দোলন শেষ পর্যন্ত সরকার পতনের আন্দোলনে রুপ নেয়। গণআন্দোলনের মুখে গত ০৫ আগস্ট প্রধানমন্ত্রীর পদ থেকে পদত্যাগ করে দেশ ছেড়েছেন শেখ হাসিনা। ০৮ আগস্ট ড. মুহাম্মদ ইউনূসের নেতৃত্বে অন্তর্বর্তীকালীন সরকার গঠিত হয়। এরমধ্যে দেশব্যাপী বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে দুর্নীতিসহ বিভিন্ন অভিযোগে অসংখ্য শিক্ষককে পদত্যাগে বাধ্য করার অভিযোগ উঠে শিক্ষার্থীদের বিরুদ্ধে।

এরই প্রেক্ষিতে সম্প্রতি কয়েকদিন ধরে শরীয়তপুর গোসাইরহাট উপজেলার কোদালপুর মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা ক্লাস বর্জন করে স্কুলের বেতন, ইন্টারনেট বিল কমানো, স্কুল পরিষ্কার পরিচ্ছন্নতাসহ ১০ দফা দাবিতে আন্দোলন করে। সেই ধারাবাহিকতায় গত ২৬ সেপ্টেম্বর প্রধান শিক্ষকের পদত্যাগের একদফা দাবিতে স্কুল প্রাঙ্গণে আন্দোলন করে বিক্ষুব্ধ শিক্ষার্থীরা। আন্দোলনের মুখে অসুস্থ হয়ে পড়েন বিদ্যালয়টির প্রধান শিক্ষক মো. বিল্লাল হোসেন মোধা। 

উক্ত ঘটনাকে কেন্দ্র করে উক্ত শিক্ষক মৃত্যুবরণ করেছেন এমন একটি দাবি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়েছে। 

ফেসবুকে প্রচারিত এমন কিছু পোস্ট দেখুন এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ) এবং এখানে (আর্কাইভ)।

ফ্যাক্টচেক 

রিউমর স্ক্যানার টিমের অনুসন্ধানে জানা যায়, শরীয়তপুর গোসাইরহাট উপজেলার কোদালপুর মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের আন্দোলনের মুখে অসুস্থ হয়ে পড়া প্রধান শিক্ষক মো. বিল্লাল হোসেন মোধা মারা যাননি বরং, তিনি বেঁচে আছেন এবং চিকিৎসাধীন রয়েছেন বলে নিশ্চিত করেছেন তার স্ত্রী।

অনুসন্ধানের শুরুতে প্রাসঙ্গিক কি-ওয়ার্ড সার্চ করে গণমাধ্যমে এসংক্রান্ত কোনো তথ্য পাওয়া যায়নি। তবে, যুগান্তরের ওয়েবসাইটে গত ২৬ সেপ্টেম্বর ‘পদত্যাগের চাপের’ জেরে স্ট্রোক করেছেন প্রধান শিক্ষক” শীর্ষক শিরোনামে প্রকাশিত একটি প্রতিবেদন পাওয়া যায়। 

উক্ত প্রতিবেদন থেকে জানা যায়, প্রধান শিক্ষক মো. বিল্লাল হোসেন মোধা অসুস্থ হয়ে পড়লে তাকে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি হয়। পরবর্তীতে উন্নত চিকিৎসার জন্য শরীয়তপুরে স্থানান্তর করা হয়। 

বিষয়টি অধিকতর যাচাইয়ের জন্য মো. বিল্লাল হোসেন মোধার পরিবারের সাথে যোগাযোগ করে রিউমর স্ক্যানার টিম। মো. বিল্লাল হোসেন মোধার স্ত্রী রিউমর স্ক্যানারকে বলেন, তিনি এখনো চিকিৎসাধীন। হার্টে তিনটা রিং বসানোর পরামর্শ দিয়েছেন চিকিৎসারা। আজ (২৮ সেপ্টেম্বর) তাকে নিয়ে জাতীয় হৃদরোগ ইন্সটিটিউটে যাওয়া হবে।

অর্থাৎ, মো. বিল্লাল হোসেন মোধা চিকিৎসাধীন রয়েছেন। তিনি মারা যাননি।

সুতরাং, শিক্ষার্থীদের আন্দোলনের মুখে অসুস্থ হয়ে পড়া শরীয়তপুর গোসাইরহাট উপজেলার কোদালপুর মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মো. বিল্লাল হোসেন মোধার মৃত্যুবরণ করার দাবিটি সম্পূর্ণ মিথ্যা।  

তথ্যসূত্র

আরও পড়ুন

spot_img