সম্প্রতি, ইউএনও একজন নারী হওয়ায় এবং তিনি বোরকা পরিধান না করায় জামাত-শিবিরের নেতাকর্মীরা ইউএনওকে জোরপূর্বক কার্যালয় থেকে বের করে দেয় দাবিতে একটি ভিডিও ইন্টারনেটে প্রচার করা হয়েছে।

উক্ত দাবিতে ফেসবুকে প্রচারিত ভিডিও দেখুন এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ)।
উক্ত দাবিতে থ্রেডস-এ প্রচারিত ভিডিও দেখুন এখানে (আর্কাইভ)।
উক্ত দাবিতে ইনস্টাগ্রামে প্রচারিত ভিডিও দেখুন এখানে (আর্কাইভ)।
উক্ত দাবিতে এক্স- এ প্রচারিত ভিডিও দেখুন এখানে (আর্কাইভ)।
ফ্যাক্টচেক
রিউমর স্ক্যনার টিমের অনুসন্ধানে জানা যায়, ইউএনও নারী হওয়া বা বোরকা না পরার কারণে কার্যালয় থেকে জোরপূর্বক বের করে দেওয়ার ঘটনা নয়। বরং, গত ১২ ফেব্রুয়ারি দুর্নীতি, অনিয়ম ও আওয়ামী লীগের সঙ্গে যোগসাজশের অভিযোগে আন্দোলনকারীদের বিক্ষোভের মুখে কার্যালয় ছাড়েন সেই সময়ের দিনাজপুরের পার্বতীপুরের ইউএনও ফাতেমা খাতুন। এটি সেই ঘটনারই ধারণকৃত ভিডিও।
এই বিষয়ে অনুসন্ধানে অনলাইন নিউজ পোর্টাল রাইজিংবিডি.কম এর ইউটিউব চ্যানেলে গত ১৩ ফেব্রুয়ারি ‘পার্বতীপুরের ইউএনওকে অফিস থেকে বের করে দিলো লোকজন | Dinajpur | UNO | Risingbd’ শীর্ষক ক্যাপশনে একটি ভিডিও খুঁজে পাওয়া যায়। ভিডিওর ঘটনার সাথে আলোচিত দাবিতে প্রচারিত ঘটনার সাদৃশ্য রয়েছে।

উক্ত তথ্যের সূত্র ধরে প্রাসঙ্গিক কি-ওয়ার্ড সার্চ করে জাতীয় দৈনিক প্রথম আলো এর ওয়েবসাইটে গত ১৩ ফেব্রুয়ারি ‘বৈষম্যবিরোধীদের তোপের মুখে কার্যালয় ছেড়েছেন পার্বতীপুরের ইউএনও, বাসায় চলছে দাপ্তরিক কাজ’ শীর্ষক শিরোনামে প্রকাশিত একটি প্রতিবেদন খুজে পাওয়া যায়।
প্রতিবেদন থেকে জানা যায়, দিনাজপুরের পার্বতীপুরে ইউএনও ফাতেমা খাতুনের অপসারণ চেয়ে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন ও জাতীয় নাগরিক কমিটির বিক্ষোভের মুখে তিনি বুধবার (১২ ফেব্রুয়ারি) কার্যালয় ছাড়েন। স্বেচ্ছাচারিতা ও আওয়ামী লীগের সঙ্গে যোগসাজশের অভিযোগে আন্দোলনকারীরা ইউএনওকে দুর্নীতিবাজ বলে স্লোগান দেয় এবং কার্যালয় ছাড়ার জন্য সময় বেঁধে দেয়। পরে প্রশাসনের সহায়তায় ইউএনও কার্যালয় ত্যাগ করেন।
এছাড়া, যুগান্তর, সমকাল ও বাংলা ট্রিবিউন এর ওয়েবসাইটে প্রকাশিত প্রতিবেদ থেকে জানা যায়, গত ১২ ফেব্রুয়ারি দিনাজপুরের পার্বতীপুরে ইউএনও ফাতেমা খাতুনের বিরুদ্ধে দুর্নীতি ও অনিয়মের অভিযোগ তুলে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন ও নাগরিক কমিটির নেতারা মানববন্ধন করেন, পরে ইউএনও কার্যালয়ে গিয়ে বিক্ষোভ ও অপসারণের দাবি জানালে ইউএনও কার্যালয় ত্যাগ করেন। বিক্ষোভকারীদের দাবি, বদলির আদেশ সত্ত্বেও ইউএনও অজ্ঞাত কারণে অজ্ঞাত তা স্থগিত হয়ে তিনি পার্বতীপুরে রয়ে গেছেন।
অর্থাৎ, ইউএনও ফাতেমা খাতুনকে বিক্ষোভের মুখে জোরপূর্বক কার্যালয় থেকে বের হয়ে যেতে বাধ্য করার সাথে নারী ইস্যু কিংবা বোরকা না পরার কোনো সম্পর্ক নেই। আন্দোলনকারীরা তার বিরুদ্ধে দুর্নীতি, অনিয়ম, স্বেচ্ছাচারিতা ও আওয়ামী লীগের সঙ্গে যোগসাজশের অভিযোগ এনেছিল।
সুতরাং, ১২ ফেব্রুয়ারির ইউএনও ফাতেমা খাতুনকে দুর্নীতি, অনিয়ম ও আওয়ামী লীগের সঙ্গে যোগসাজশের অভিযোগ অপসারণের দাবিতে আন্দোলনকারী কর্তৃক তাকে জোরপূর্বক কার্যালয় থেকে বের হয়ে যেতে বাধ্য করার ঘটনায় ধারণকৃত ভিডিওকে ইউএনও একজন নারী হওয়ায় এবং তিনি বোরকা পরিধান না করায় জামায়াত-শিবিরের নেতাকর্মীরা ইউএনওকে জোরপূর্বক কার্যালয় থেকে বের করে দেয় দাবিতে প্রচার করা হয়েছে; যা বিভ্রান্তিকর।