সম্প্রতি “ভিক্ষুকের মত নির্লজ্জ ভাবে পায়ে ধরে শুধুই শেয়ার টা ভিক্ষা চাচ্ছি, সাহায্য করতে না পারলেও অন্তত একটি শেয়ার করুন” শীর্ষক শিরোনামে কিছু ছবি সংযুক্ত করে তানহা নামে এক শিশুর জন্য মানবিক সাহায্যের আবেদন সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে ছড়িয়ে পড়েছে।
ফেসবুকে ভাইরাল এমন কিছু পোস্ট দেখুন এখানে, এখানে, এখানে, এখানে এবং এখানে।
ফ্যাক্টচেক
রিউমর স্ক্যানার টিমের অনুসন্ধানে দেখা যায়, তানহা নামে প্রচারিত ছবিগুলো বাংলাদেশে সাম্প্রতিক সময়ে রোগাক্রান্ত কোনো শিশুর নয় বরং ছবিগুলো বিগত দুই বছর ধরে ইন্টারনেটে প্রচার হয়ে আসছে।
রিভার্স ইমেজ সার্চ পদ্ধতির মাধ্যমে, ‘Adhuro Sapana‘ নামের একটি ফেসবুক আইডিতে ২০২০ সালের ৫ জানুয়ারিতে ‘plz सबैजना मिलेर यो नानी लाई बचाइदिनुहोस‘ (অনুবাদঃ অনুগ্রহ করে এই শিশুটিকে সবাই বাঁচান) শীর্ষক শিরোনামে নেপালি ভাষায় প্রকাশিত একটি ফেসবুক পোস্টে আলোচিত শিশুটির একই ছবি খুঁজে পাওয়া যায়।
এছাড়া, সাম্প্রতিক সময়ে প্রকাশিত পোস্টগুলোতে যে মহিলার ছবি ব্যবহার করা হয়েছে সেটা রিভার্স সার্চের মাধ্যমে AP Images ওয়েবসাইটে “APTOPIX BANGLADESH MYANMAR REFUGEES” শিরোনামে প্রকাশিত একটি নিবন্ধে একই ছবি খুঁজে পাওয়া যায়। ছবিটির বিস্তারিত অংশ হতে জানা যায় ছবির ব্যক্তিটি একজন রোহিঙ্গা নারী এবং ছবিটি ২০১২ সালের ২২ জুনে তোলা হয়েছিলো।
২০২১ সালের মার্চ মাসে একই শিশুর ছবি ব্যবহার করে আফগানিস্তানে সরকারি বাহিনীর বোমা হামলায় আহত শিশু দাবিতে একটি তথ্য সামাজিক মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়েছিলো।
در نتیجه حملات هوای دولت بالای خانه های مسکونی در #بهسود این کودک زخمی و مادرش شهید شده است.#من_هم_علیپور_هستم pic.twitter.com/Py4wo4dsUB
— Ibrahim🇦🇫 (@IbrahimSalehi2) March 20, 2021
তবে, সেসময়ে ঐ দাবিটিকে মিথ্যা হিসেবে শনাক্ত করে ফ্যাক্ট চেকিং প্রতিষ্ঠান ‘ফ্যাক্টক্রিসেন্ডো’ ফ্যাক্টচেক প্রতিবেদন প্রকাশ করে।
অসুস্থ শিশুটির ছবির প্রকৃত ঘটনা এবং প্রেক্ষাপট সম্পর্কে নিশ্চিত তথ্য ইন্টারনেটে খুঁজে না পাওয়া গেলেও এই বিষয়টি নিশ্চিত যে এটি বাংলাদেশে সাম্প্রতিক সময়ে রোগাক্রান্ত কোন শিশুর ছবি নয়। উল্লেখ্য, ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে তানহা নামের কোন পুড়ে যাওয়া শিশু ভর্তি রয়েছে কিনা এবং তার চিকিৎসার জন্য আর্থিক সাহায্যের প্রয়োজন কিনা এমন কোনো তথ্য আলাদাকরে যাচাই করে দেখেনি রিউমর স্ক্যানার।
মূলত, শরীরে ব্যান্ডেজ মোড়ানো উক্ত শিশুর ছবি ইন্টারনেট থেকে সংগ্রহ করে এর সাথে দেশীয় নাম, ঠিকানা জুড়ে দিয়ে সম্প্রতি ভিন্ন ভিন্ন বিকাশ নাম্বার ব্যবহার করে সামাজিক মাধ্যমে আর্থিক আবেদন প্রচার করা হচ্ছে। অন্যদিকে, তানহা নামে আর্থিক সাহায্যের জন্য আবেদনকৃত ফেসবুক পোস্টগুলোতে উল্লিখিত নাম্বারে (01630775779, 01688111647) একাধিকবার যোগাযোগ করার চেষ্টা করে তা বন্ধ পাওয়া যায়।
প্রসঙ্গত, রিউমর স্ক্যানার টিম পূর্বেও বিভিন্ন নাম ব্যবহার করে প্রতারণার উদ্দেশ্যে আর্থিক সাহায্য চেয়ে করা পোস্টগুলোকে শনাক্ত করে একাধিক ফ্যাক্টচেক প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে।
অর্থাৎ, আর্থিক প্রতারণার উদ্দেশ্যে ইন্টারনেট থেকে সংগৃহীত অজ্ঞাত শিশুর পুরোনো একটি ছবিকে বাংলাদেশের ময়মনসিংহ এর রোগাক্রান্ত শিশু তানহা দাবিতে সামাজিক মাধ্যমে প্রচার করা হচ্ছে; যা সম্পূর্ণ ভিত্তিহীন এবং মিথ্যা।
[su_box title=”True or False” box_color=”#f30404″ radius=”0″]
- Claim Review: বাচ্চাটির শরিরের প্রায় ৬০% পুড়ে গেছে
- Claimed By: Facebook Posts
- Fact Check: False
[/su_box]