সম্প্রতি, “একদল চোর দু’দিন ধরে ৫০০ টন ওজনের লোহার এই সেতু ভেঙে নিয়ে পালিয়েছে” শীর্ষক একটি তথ্য দেশীয় গণমাধ্যম ও বিভিন্ন অনলাইন পোর্টালে প্রকাশের মাধ্যমে ফেসবুকে ছড়িয়ে পড়েছে।
ফেসবুকে প্রচারিত এমন কিছু পোস্ট দেখুন এখানে, এখানে, এখানে এবং এখানে । আর্কাইভ ভার্সন দেখুন এখানে, এখানে, এখানে এবং এখানে।
ফ্যাক্টচেক
রিউমর স্ক্যানার টিমের অনুসন্ধানে জানা যায়, সরকারি কর্মকর্তা সেজে ৫০০ টনের লোহার সেতু চুরি করে তুলে নিয়ে যাওয়ার ঘটনাটি বাংলাদেশের নয় বরং ঘটনাটি ভারতের বিহার রাজ্যের।
কি-ওয়ার্ড সার্চ পদ্ধতির মাধ্যমে, ভারতীয় গণমাধ্যম আনন্দবাজার পত্রিকায় গত ৯ এপ্রিল “Bridge: ৫০০ টনের লোহার সেতু লোপাট হয়ে গেল বিহারে! ‘সৌজন্যে’এক দল চোর” শীর্ষক শিরোনামে প্রকাশিত একটি প্রতিবেদন খুঁজে পাওয়া যায়। উক্ত প্রতিবেদন থেকে ভারতের বিহারে লোহার ব্রিজ চুরি হওয়ার ঘটনাটি সম্পর্কে বিস্তারিত তথ্য পাওয়া যায়।

ভারতীয় সংবাদমাধ্যম ANI এর টুইটার একাউন্ট থেকে উক্ত চুরির ঘটনা নিয়ে ঐ ব্রিজ এলাকার ছবি সংযুক্ত করে প্রকাশিত একটি টুইট খুঁজে পাওয়া যায়, সেখানে উল্লেখ করা হয়েছে “বিহারের রোহতাস জেলায় ৬০ ফুট দীর্ঘ পরিত্যক্ত স্টিলের সেতু চুরি করেছে চোরেরা। সরকারী কর্মকর্তার পরিচয় দিয়ে তারা লোহার সেতুটি কেটে নিয়ে গেছে। “
Bihar |60-feet long-abandoned steel bridge stolen by thieves in Rohtas district
Villagers informed some people pretending as mechanical dept officials uprooted bridge using machines like JCB & gas-cutters. We’ve filed the FIR:Arshad Kamal Shamshi, Junior Engineer,Irrigation dept pic.twitter.com/o4ZWVDkWie
— ANI (@ANI) April 9, 2022
ভারতের বিহারে ঘটা এই ঘটনাটি নিয়ে বাংলাদেশের বিভিন্ন গণমাধ্যমে সংবাদ প্রচারের পর সংবাদগুলোর শিরোনাম এবং ফেসবুক পোস্টের ক্যাপশনে ঘটনাটি ভারতের এই বিষয়টি উল্লেখ না থাকার ফলে অনেক সামাজিক মাধ্যম ব্যবহারকারী ঘটনাটি বাংলাদেশের কোন স্থানের ভেবে বিভ্রান্তির শিকার হয়। এছাড়া, বাংলাদেশের অনেক ফেসবুক ব্যবহারকারী প্রকাশিত এই সংবাদটি যথাযথ যাচাই না করে এবং বিস্তারিত না পড়ে শুধুমাত্র শিরোনামটি কপি-পেস্ট করে ফেসবুকে প্রচার করছেন, ফলে ঘটনাটি ভারতের হলেও ভারত শব্দটি উল্লেখ না করে বাংলাদেশে প্রচার করায় সেসকল পোস্টগুলোর কারণে জনমনে বিভ্রান্তির সৃষ্টি হয়েছে।
মূলত, ভারতের বিহারের সাসারাম শহর থেকে ৪০ কিলোমিটার দূরে আমিয়াওয়ার নামের একটি গ্রামে আরা-সোনে ক্যানেলের ওপরে থাকা ৬০ ফুট ফ্রেমের ৫০০ টনের স্টিলের কাজের প্রায় ৫০ বছর পুরোনো একটি ব্রিজ বেশকিছু বছর যাবত পরিত্যক্ত অবস্থায় পড়ে ছিলো। পুরনো এই ব্রিজটিকে সংশ্লিষ্টদের কাছে সরিয়ে ফেলার আবেদন করা হলে সম্প্রতি কয়েকজন সেচ দফতরের সরকারি কর্মকর্তা সেজে গ্রামে আসে এবং বুলডোজার ও গ্যাস কাটার দিয়ে গোটা ব্রিজ কেটে পালিয়ে যায়।
অর্থাৎ, ৫০০ টন লোহার সেতু চুরি শীর্ষক ঘটনাটি ভারতের হলেও এই বিষয়ে বাংলাদেশে প্রকাশিত সংবাদগুলোয় এবং ফেসবুকে প্রকাশিত পোস্টে ‘ভারত’ শব্দটি উল্লেখ না করে প্রচার করা হচ্ছে; যা বিভ্রান্তিকর।
[su_box title=”True or False” box_color=”#f30404″ radius=”0″]
- Claim Review: একদল চোর দু’দিন ধরে ৫০০ টন ওজনের লোহার এই সেতু ভেঙে নিয়ে পালিয়েছে
- Claimed By: Facebook Posts
- Fact Check: Misleading
[/su_box]