গত ৮ মে সারারাত অভিযান চালিয়ে পরদিন সকাল পৌনে ছয়টার দিকে নারায়ণগঞ্জ সিটি করপোরেশনের সাবেক মেয়র ও জেলা আওয়ামী লীগের সাবেক সিনিয়র সহসভাপতি ডা. সেলিনা হায়াৎ আইভীকে তার দেওভোগের বাড়ি ‘চুনকা কুটির’ থেকে গ্রেফতার করে পুলিশ। এরপর ১২ মে এক মামলায় তার জামিন আবেদন নামঞ্জুর করে আদালত তাকে গাজীপুরের কাশিমপুর কারাগারে পাঠানোর নির্দেশ দেন। সম্প্রতি, তিনি জামিনে মুক্তি পেয়েছেন দাবিতে একটি তথ্য সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়েছে।

এই দাবিতে ফেসবুকে প্রচারিত কিছু পোস্ট দেখুন: এখানে, এখানে, এখানে, এখানে, এখানে।
একই দাবিতে ইন্সটাগ্রামে প্রচারিত পোস্ট দেখুন: এখানে, এখানে, এখানে, এখানে।
এক্সে প্রচারিত দাবি দেখুন: এখানে, এখানে।
টিকটকে প্রচারিত দাবি দেখুন: এখানে, এখানে।
ফ্যাক্টচেক
রিউমর স্ক্যানার টিমের অনুসন্ধানে জানা গেছে, ডা. সেলিনা হায়াৎ আইভীর জামিনে মুক্তি পাননি। প্রকৃতপক্ষে, তিনি এখনও কাশিমপুর কারাগারেই রয়েছেন। তার আইনজীবীরা জানিয়েছেন, জামিন শুনানি হতে আরও দেড় মাস সময় লাগতে পারে।
এই বিষয়ে অনুসন্ধানের শুরুতে দেশের মূলধারার গণমাধ্যমগুলোতে এ বিষয়ে খোঁজ নেওয়া হয়। তবে কোথাও তার জামিনের খবর পাওয়া যায়নি। জনপ্রিয় রাজনৈতিক ব্যক্তিত্ব হিসেবে আইভী যদি সত্যিই জামিন পেতেন, তবে তা নিশ্চিতভাবেই গণমাধ্যমে প্রকাশিত হতো।
রিউমর স্ক্যানার লক্ষ্য করেছে, এই দাবির সঙ্গে গাঁদা ফুলের মালা পরিহিত অবস্থায় আইভীর একটি ছবি ছড়ানো হচ্ছে। কিন্তু ছবিটি অন্তত ২০২২ সাল থেকে (১,২) ইন্টারনেটে রয়েছে এবং এর সঙ্গে তার জামিন পাওয়ার কোনো সম্পর্ক নেই।

আইভীর পক্ষের আইনজীবী অ্যাডভোকেট আওলাদ হোসেন রিউমর স্ক্যানারকে বলেন, “তার জামিনের খবরটি ভুয়া। জামিন শুনানি দেড় মাস পরে হতে পারে। বর্তমানে তিনি কারাগারেই আছেন।”
আইভীর পক্ষের আরেক আইনজীবী, নারায়ণগঞ্জ প্রেসক্লাবের সাবেক সভাপতি মাহবুবুর রহমান মাসুম দেশ রূপান্তরকে জানান, “এটি স্রেফ গুজব। আইভীর মামলার শুনানী হাইকোর্টে পেন্ডিং রয়েছে। আরো দেড় মাস পরে জামিন শুনানি হতে পারে।”
দেশ রূপান্তরের প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়েছে, আইভীর বিরুদ্ধে সিদ্ধিরগঞ্জ থানায় চারটি ও ফতুল্লা থানায় একটি মামলা রয়েছে, যার মধ্যে তিনটি হত্যা মামলা। জেলা ও দায়রা জজ আদালত এবং চিফ জুডিশিয়াল আদালত ইতোমধ্যেই তার জামিন আবেদন নাকচ করেছে। পরে তার আইনজীবীরা হাইকোর্টে জামিন আবেদন করেন।
এছাড়া, স্থানীয় অনলাইন পোর্টাল নারায়ণগঞ্জ পোস্ট গত ৭ সেপ্টেম্বর একটি প্রতিবেদনে জানিয়েছে, আইভীর জামিনের বিষয়টি গুজব বলে নিশ্চিত করেছেন নারায়ণগঞ্জ কোর্ট পুলিশের পরিদর্শক মো. কাইয়ুম খান। তিনি এখনো কাশিমপুর কারাগারেই রয়েছেন।
সুতরাং, ডা. সেলিনা হায়াৎ আইভীর জামিনে মুক্তি পাওয়ার দাবিটি সম্পূর্ণ মিথ্যা।
তথ্যসূত্র
- Statement from Advocate Awlad Hossain.
- Desh Rupantor: আইভীর জামিনের খবর ফেসবুকে, গুজব দাবি আইনজীবীদের
- Narayanganj Post: জামিনে মুক্ত আইভী, ফেসবুকে বাবু আইডির স্ট্যাটাস!