উত্তরার গাউসুল আজম জামে মসজিদে ঘুষি মেরে ইমামকে হত্যার দাবিটি মিথ্যা

সম্প্রতি, উত্তরার ১৩ নম্বর সেক্টরে অবস্থিত গাউসুল আজম জামে মসজিদে তারাবির নামাজের পর ইমামকে আরেক মুসুল্লি ঘুষি মেরে হত্যা করেছেন দাবিতে একটি ভিডিও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম এক্স (সাবেক টুইটার)-এ প্রচার করা হয়েছে। 

এক্স-এ প্রচারিত এমন ভিডিও দেখুন এখানে (আর্কাইভ)।

ফ্যাক্টচেক

রিউমর স্ক্যানার টিমের অনুসন্ধানে জানা যায়, উত্তরার গাউসুল আজম জামে মসজিদে আরেক মুসুল্লির ঘুষিতে ইমামের মারা যাওয়া তথ্যটি সঠিক নয়। প্রকৃতপক্ষে, হামলার শিকার ব্যক্তি মারা যাননি। এছাড়া তিনি মসজিদটির ইমামও নন। 

দাবিটির বিষয়ে অনুসন্ধানে কি-ওয়ার্ড সার্চের মাধ্যমে Sami Joy নামের একজন গণমাধ্যমকর্মীর ফেসবুক অ্যাকাউন্টে  গত ৭ মার্চ প্রচারিত একই ভিডিওটি খুঁজে পাওয়া যায়। 

Video Comparison by Rumor Scanner 

ভিডিওটির শিরোনামে গাউছুল আজম মসজিদে মারামারির ঘটনার কথা বলা হলেও উক্ত ঘটনায় কারও মারা যাওয়ার উল্লেখ পাওয়া যায়নি। 

উক্ত পোস্ট থেকে প্রাপ্ত তথ্যের সূত্র ধরে কি-ওয়ার্ড সার্চের মাধ্যমে দৈনিক সকালের সময়-এর ওয়েবসাইটে গত ১৫ মার্চ উত্তরা ১৩ নং সেক্টর মসজিদের ভাইরাল হওয়া ভিডিওটি কাটছাঁট করা ও গুজব, মুসল্লী সুস্থ শীর্ষক শিরোনামে প্রকাশিত একটি প্রতিবেদন খুঁজে পাওয়া যায়। 

Screenshot Daily Sokaler Somoy

প্রতিবেদনটি মসজিদের পেশ ইমাম মাওলানা মুফতি জুনায়েদ কাসেমীর বরাতে জানানো হয়, অপর মুসুল্লির ঘুষিতে লুটিয়ে পড়া ব্যক্তি পরিপূর্ণ সুস্থ আছেন। এছাড়াও তিনি জানান, সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে প্রচারিত ভিডিওটি কাটছাট করে তৈরি করা হয়েছে। মূল ভিডিওতে ওই ব্যক্তিকে এক মিনিট পরেই উঠতে দেখা যায়। 

এছাড়াও প্রতিবেদনটি থেকে জানা যায়, হামলার শিকার ব্যক্তির নাম আনোয়ারুল কিবরিয়া। উক্ত ব্যক্তির স্ত্রীও প্রতিবেদককে তার সুস্থতার কথা জানান বলে প্রতিবেদনটি থেকে জানা যায়।

পরবর্তীতে এ বিষয়ে জানতে গাউছুল আজম জামে মসজিদের অফিস সহকারী নূরুল ইসলামের সাথে যোগাযোগ করা হলে তিনি রিউমর স্ক্যানারকে জানান, হাতাহাতির ঘটনাটি গত ৫ মার্চ ভোরে ঘটে। এছাড়াও তিনি রিউমর স্ক্যানারকে সেদিনের কয়েকটি সিসিটিভি ফুটেজ সরবরাহ করেন। যেখানে হামলার শিকার ব্যক্তিকে পরবর্তীতে সুস্থ অবস্থায় মসজিদ থেকে হেঁটে বের হতে দেখা যায়।

পাশপাশি পরবর্তীতে কি-ওয়ার্ড সার্চের মাধ্যমে আড়ালের চোখ নামের একটি ফেসবুক পেজে গত ১১ মার্চ একই ঘটনায় মসজিদ কমিটির দেওয়া এক বিবৃতির ভিডিও খুঁজে পাওয়া যায়। ভিডিওটি থেকে জানা যায়, উক্ত মসজিদে সাদপন্থীদের বসা নিয়ে আরেক পক্ষের সাথে কয়েকদিন যাবৎ দ্বন্দ্ব  চলমান ছিল। আনোয়ারুল কিবরিয়া সাদপন্থী হওয়ায় তার সাথে হামলাকারীর বাকবিতণ্ডা হয়। এক পর্যায়ে তিনি আনোয়ারুলকে আঘাত করেন। পরবর্তীতে উপস্থিত সবার মাধ্যমে বিষয়টির সমাধান করা হয়। 

অর্থাৎ, হামলার শিকার ব্যক্তি মসজিদটির ইমাম নন এবং তার মারা যাওয়ার তথ্যটিও সত্য নয়। 

সুতরাং, উত্তরার গাউসুল আজম জামে মসজিদে তারাবির নামাজের পর ইমামকে ঘুষি মেরে হত্যা করা হয়েছে শীর্ষক দাবিটি মিথ্যা।

তথ্যসূত্র

আরও পড়ুন

spot_img