২০২৪ সালের বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে পুলিশের গুলিতে গুরুতর আহত হয়েছিলেন রাতুল। দীর্ঘ চিকিৎসার পর চিকিৎসার ব্যয় নির্বাহ ও পরিবারের সচ্ছলতা ফিরিয়ে আনার জন্য রাজধানীর উত্তরা ৭ নম্বর সেক্টরে একটি ফুডকার্ট চালু করেন তিনি। তবে সম্প্রতি সেই ফুডকার্ট ভাঙচুরের অভিযোগ উঠেছে। গত ১৮ ফেব্রুয়ারি রাতে এ ঘটনা ঘটে। জানা গেছে, স্থানীয় একটি সড়ক দুর্ঘটনার জেরে এলাকায় থাকা ফুডকার্টগুলো উচ্ছেদের হুমকি দেওয়া হয়। রাতুল প্রশাসনের কাছে কিছুটা সময় চান, কারণ তিনি এখনো পুরোপুরি সুস্থ নন। কল্যাণ সমিতি সাময়িক অনুমতি দিলেও পরদিন সন্ধ্যায় তার ফুডকার্টসহ আশপাশের বেশ কয়েকটি দোকান ভেঙে দেওয়া হয়।
এ ঘটনার পর রাতুল হিন্দু সম্প্রদায়ের সদস্য দাবিতে একটি তথ্য সামাজিক মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়ে।

উক্ত দাবিতে ফেসবুকে প্রচারিত পোস্ট দেখুন এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ)।
ফ্যাক্টচেক
রিউমর স্ক্যানার টিমের অনুসন্ধানে জানা যায়, রাইসুল রহমান রাতুল হিন্দু সম্প্রদায়ের সদস্য নন, তিনি একজন মুসলিম।
রাতুলের ধর্মীয় পরিচয়ের বিষয়ে অনুসন্ধানে বিবিসি বাংলা ওয়েবসাইটে ২০২৪ সালের ২৭ সেপ্টম্বর ‘ডিরেক্ট আমার পেটে বন্দুক ঠেকিয়ে ফায়ার করে’ শীর্ষক শিরোনামে একটি প্রতিবেদন খুঁজে পাওয়া যায়।
প্রতিবেদন অনুযায়ী, ২০২৪ সালের ১৯ জুলাই ঢাকার উত্তরায় বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে অংশগ্রহণের সময় কলেজ শিক্ষার্থী রাইসুল রহমান রাতুল পুলিশের গুলিতে গুরুতর আহত হন। সেদিন জুমার নামাজ শেষে মসজিদ থেকে বের হওয়ার পরপরই পুলিশ তাকে আটক করে এবং পেটে বন্দুক ঠেকিয়ে গুলি করে। এই তথ্য থেকে স্পষ্ট হয় যে, রাতুল মুসলিম ধর্মাবলম্বী।
এছাড়া, তার ফুডকার্ট ভাঙচুর নিয়ে গণমাধ্যমে প্রকাশিত কোনো প্রতিবেদনেও তাকে হিন্দু ধর্মাবলম্বী হিসেবে উল্লেখ করা হয়নি। তার ব্যক্তিগত ফেসবুক প্রোফাইল পর্যালোচনা করেও এমন কোনো তথ্য নিশ্চিত হওয়া যায়নি।
সুতরাং, সম্প্রতি উত্তরার ৭ নম্বর সেক্টরে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে পুলিশের গুলিতে আহত রাতুলের ফুডকার্ট ভাঙচুরের পর, তাকে হিন্দু ধর্মাবলম্বী হিসেবে উপস্থাপন করে প্রচারিত দাবিগুলো বিভ্রান্তিকর।
তথ্যসূত্র
- Jamuna Television: গণঅভ্যুত্থানে আহত রাতুলের একমাত্র সম্বল ফুডকার্ট ভেঙে দেয়ার অভিযোগ
- Facebook Account: Raisul Rahaman Ratul
- BBC Bangla: ‘ডিরেক্ট আমার পেটে বন্দুক ঠেকিয়ে ফায়ার করে’