সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে দপ্তরী নিয়োগ ও বেতন-ভাতা সংক্রান্ত বিজ্ঞপ্তিগুলো ভুয়া

সম্প্রতি ‘সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে দপ্তরী কাম প্রহরী নিয়োগ ও বেতন-ভাতা সংক্রান্ত গেজেট’ শীর্ষক শিরোনামে দুইটি বিজ্ঞপ্তি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে প্রচার করা হচ্ছে।

ফেসবুকে ‘সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে দপ্তরী কাম প্রহরী নিয়োগ সংক্রান্ত প্রচারিত এমন কিছু পোস্ট দেখুন এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ)।

সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে দপ্তরী কাম প্রহরী নিয়োগ ও বেতন-ভাতা সংক্রান্ত গেজেট নিয়ে ফেসবুকে প্রচারিত এমন কিছু পোস্ট দেখুন এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ)। 

ফ্যাক্টচেক

রিউমর স্ক্যানার টিমের অনুসন্ধানে দেখা যায়, সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে দপ্তরী কাম প্রহরী নিয়োগ ও বেতন-ভাতা সংক্রান্ত গেজেটের দাবিতে প্রচারিত বিজ্ঞপ্তিগুলো ভুয়া। প্রকৃতপক্ষে কোনোপ্রকার গ্রহণযোগ্য তথ্যপ্রমাণ প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়ের উদ্ধৃতি দিয়ে এই ভুয়া বিজ্ঞপ্তিগুলো প্রচার করা হচ্ছে। 

দাবিটির সত্যতা যাচাইয়ে কি-ওয়ার্ড অনুসন্ধানের মাধ্যমে জাতীয় পর্যায়ের দৈনিক প্রথম আলোতে গত ১৯ এপ্রিল ‘প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়–সংক্রান্ত তথ্য ওয়েবসাইটে যাচাইয়ের আহ্বান‘ শীর্ষক শিরোনামে প্রকাশিত একটি প্রতিবেদন খুঁজে পাওয়া যায়। 

Screenshot: Daily Prothom Alo

প্রতিবেদনটিতে প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়ের একটি বিজ্ঞপ্তিকে উদ্ধৃত করে বলা হয়, ‘সম্প্রতি প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়ের আইন অধিশাখার নামে দপ্তরি কাম প্রহরী নিয়োগ, বেতন-ভাতাসংক্রান্ত প্রকাশিত ভুয়া গেজেট সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ভাইরাল হওয়ায় কর্তৃপক্ষের দৃষ্টিগোচর হয়েছে। প্রকাশিত গেজেটটি ভুয়া এবং এতে মাঠপর্যায়ে সর্বমহলে ভুল তথ্য উপস্থাপন করা হচ্ছে, যা প্রচলিত আইন ও বিধিবিধান অনুযায়ী গুরুতর অপরাধ।’

Screenshot: Daily Prothom Alo 

প্রতিবেদনটিতে আরও উল্লেখ করা হয় যে, প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়ে আইন অধিশাখা নামে কোনো অধিশাখা নেই। এছাড়া গেজেটে যে কর্মকর্তার নাম উল্লেখ করা হয়েছে, সে নামে এ মন্ত্রণালয়ে কোনো কর্মকর্তা কর্মরত নেই।

পরবর্তীতে রিউমর স্ক্যানারের অনুসন্ধানেও প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়ের ওয়েবসাইটে আইন অধিশাখা নামে কোনো অধিশাখা খুঁজে পাওয়া যায়নি। 

Screenshot: Primary and Mass Education Ministry

পাশাপাশি আলোচিত গেজেটটিতে উল্লেখিত মৃণাল কান্দি দে নামে কোনো উপসচিবও প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়ের ওয়েবসাইটে খুঁজে পাওয়া যায়নি। এছাড়া গেজেটটি বিজিপ্রেস থেকে গত ৯ এপ্রিল প্রকাশ করা হয়েছে দাবি করা হলেও প্রতিষ্ঠানটির ওয়েবসাইটেও এমন কোনো গেজেট এর অস্তিত্ব খুঁজে পাওয়া যায়নি।

পরবর্তীতে দাবিটির বিষয়ে অধিকতর সত্যতা যাচাইয়ে রিউমর স্ক্যানার টিম প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়ের তথ্য ও জনসংযোগ কর্মকর্তা মোহাম্মদ মাহবুবুর রহমানের সঙ্গে যোগাযোগ করে। তিনিও রিউমর স্ক্যানারকে বিষয়টি গুজব বলে নিশ্চিত করেন।

মূলত, গত ৫ ও ৯ এপ্রিল যথাক্রমে ‘সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে দপ্তরী কাম প্রহরী নিয়োগ ও বেতন-ভাতা সংক্রান্ত গেজেট’ শীর্ষক শিরোনামে দুইটি বিজ্ঞপ্তি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে প্রচার করা হয়। তবে রিউমর স্ক্যানারের অনুসন্ধানে দেখা যায়, ‘সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে দপ্তরী কাম প্রহরী নিয়োগ ও বেতন-ভাতা সংক্রান্ত গেজেট’ শীর্ষক বিজ্ঞপ্তি দুইটি সঠিক নয়। উক্ত বিজ্ঞপ্তি দুইটি ভুয়া ও ভিত্তিহীন বলে রিউমর স্ক্যানারকে নিশ্চিত করেছেমন প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়ের তথ্য ও জনসংযোগ কর্মকর্তা মোহাম্মদ মাহবুবুর রহমান।

সুতরাং, সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে দপ্তরী কাম প্রহরী নিয়োগ ও বেতন-ভাতা সংক্রান্ত গেজেট শীর্ষক ফেসবুকে প্রচারিত বিজ্ঞপ্তি দুইটি সম্পূর্ণ ভুয়া ও ভিত্তিহীন।

তথ্যসূত্র

আরও পড়ুন

spot_img