ফেসবুকে Poke নামে একটি অপশন আছে। এই অপশনটি নিয়ে সাম্প্রতিক সময়ে আলোচনা দেখা যাচ্ছে প্লাটফর্মটির ব্যবহারকারীদের মধ্যে। দাবি করা হচ্ছে, অন্যকে পোক করলে ব্যবহারকারীর অ্যাকাউন্টের নিরাপত্তা বৃদ্ধিসহ প্রোফাইলের একাধিক সমস্যা সমাধান হয়।
ফেসবুকে প্রচারিত এমন কিছু পোস্ট দেখুন এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ)।
ফ্যাক্টচেক
রিউমর স্ক্যানার টিমের অনুসন্ধানে জানা যায়, ফেসবুকে অন্যকে পোক করলে ফেসবুক অ্যাকাউন্টের নিরাপত্তা বৃদ্ধিসহ প্রোফাইলের একাধিক সমস্যা সমাধান হওয়ার তথ্যটি সঠিক নয় বরং পোকের সাথে অ্যাকাউন্টের নিরাপত্তার কোনো সম্পর্ক নেই।
অনুসন্ধানের শুরুতে নির্ভরযোগ্য কোনো সূত্র থেকে আলোচিত দাবিটির সত্যতা খুঁজে পাওয়া যায়নি।
পোকের বিষয়ে দেশের জাতীয় দৈনিক The Daily Star এর ওয়েবসাইটে গত ২৫ ফেব্রুয়ারি “Why poke on Facebook?” শীর্ষক শিরোনামের একটি প্রতিবেদন খুঁজে পাওয়া যায়।
প্রতিবেদন থেকে জানা যায়, দীর্ঘদিন বন্ধ থাকার পর সম্প্রতি ফেসবুকের পোক অপশন চালু করা হয়েছে। এ ঘটনার পর থেকেই অসংখ্য ব্যবহারকারী নিজেদের পুরনো স্মৃতির রোমন্থনের উদ্দেশ্যে একে অপরকে পোক করছেন। তবে, ফেসবুক ব্যবহারকারীদের একে অন্যকে পোক করার উদ্দেশ্য শুধুই ব্যক্তিকেন্দ্রিক- প্রিয়জনকে জানান দেওয়া যে- তার প্রয়োজনে আপনি আছেন। কিংবা প্রিয়জনকে পোক করে নেহায়েতই বিরক্ত করা।
তবে, উক্ত প্রতিবেদনের কোথাও পোক করার ফলে ফেসবুক অ্যাকাউন্টের নিরাপত্তা বৃদ্ধিসহ প্রোফাইলের বিভিন্ন সমস্যা সমাধানের স্বপক্ষে কোনোরূপ তথ্য খুঁজে পাওয়া যায়নি।
পরবর্তীতে, ফেসবুক হেল্প সেন্টারের ওয়েবপেজে পোক সম্পর্কিত তথ্যগুলো বিশ্লেষণ করে দেখেছে রিউমর স্ক্যানার টিম। উক্ত ওয়েবপেজের কোথাও অন্য ব্যবহারকারীকে পোক করলে অ্যাকাউন্টের নিরাপত্তা জোরদার হওয়া কিংবা প্রোফাইলে অন্য কোনো পরিবর্তন আসার বিষয়ে কোনোরূপ তথ্য পাওয়া যায়নি।
এছাড়াও দ্য গার্ডিয়ানের ওয়েবসাইটে ২০০৭ সালের ৩০ আগস্ট “Companions through the ages” শীর্ষক শিরোনামে প্রকাশিত একটি প্রতিবেদন খুঁজে পাওয়া যায়।
উক্ত প্রতিবেদন থেকে জানা যায়, ফেসবুক নিজেদের পোক অপশনটি কোনো সুনির্দিষ্ট কাজের উদ্দেশ্যে তৈরি করেনি। পোক অপশনটি ইউজাররা নিজেদের মতো করে ব্যবহার করে থাকেন।
অর্থাৎ, পোক ফেসবুকের এমন একটি ফিচার যেটি সুনির্দিষ্ট কোনো কাজের জন্যই তৈরি করা হয়নি।
মূলত, দীর্ঘদিন বন্ধ থাকার পর সম্প্রতি ব্যবহারকারীদের জন্য পুনরায় পোক অপশন চালু করেছে ফেসবুক। এ ঘটনার প্রেক্ষিতেই ফেসবুকে একে অন্যকে পোক করলে অ্যাকাউন্টের নিরাপত্তা বৃদ্ধিসহ প্রোফাইলের একাধিক সমস্যার সমাধান হয় দাবিতে একটি তথ্য ইন্টারনেটে প্রচার করা হয়েছে। তবে, রিউমর স্ক্যানার টিমের অনুসন্ধানে জানা গেছে দাবিটি সঠিক নয়। পোকের সাথে অ্যাকাউন্টের নিরাপত্তার কোনো সম্পর্ক নেই।
সুতরাং, পোক করলে ফেসবুক অ্যাকাউন্টের নিরাপত্তা জোরদার হয় ও অ্যাকাউন্টের বিভিন্ন সমস্যা সমাধান হয় দাবিতে প্রচারিত তথ্যটি সম্পূর্ণ মিথ্যা।
তথ্যসূত্র
- Facebook: Help Center
- The Guardian: Companions through the ages