সম্প্রতি, ‘স্ত্রী-শ্যালকের বিরুদ্ধে প্রতারণার অভিযোগ ডা. সালেহ উদ্দিনের’ শীর্ষক শিরোনামে মূলধারার গণমাধ্যম যুগান্তরে প্রকাশিত প্রতিবেদনের ফিচারে অর্থ উপদেষ্টা ড. সালেহউদ্দিন আহমেদ এর একটি ছবি ব্যবহার করা হয়েছে। অর্থাৎ, প্রতিবেদনের ফিচার অনুযায়ী এটা বোঝাচ্ছে যে, অর্থ উপদেষ্টা ড. সালেহউদ্দিন আহমেদ তার স্ত্রী ও শ্যালকের বিরুদ্ধে প্রতারণার অভিযোগ করেছেন।

দৈনিক যুগান্তরে প্রকাশিত প্রতিবেদনটি দেখুন এখানে (আর্কাইভ) ।
ফ্যাক্টচেক
রিউমর স্ক্যানার টিমের অনুসন্ধানে দেখা যায়,অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের উপদেষ্টা ড. সালেহউদ্দিন আহমেদ তার স্ত্রী-শ্যালকের বিরুদ্ধে প্রতারণার অভিযোগে সংবাদ সম্মেলন করেননি বরং, উক্ত অভিযোগে ডা. সালেহ উদ্দিন সাঈদ নামের এক ব্যক্তি সংবাদ সম্মেলন করেছেন। এই ঘটনায় সংবাদ প্রচার করতে গিয়ে যুগান্তর এক ব্যক্তির পরিবর্তে অন্য ব্যক্তির ছবি প্রচার করেছে।
এ বিষয়ে অনুসন্ধানের শুরুতে দৈনিক যুগান্তরে প্রকাশিত আলোচিত প্রতিবেদনটি পড়ে দেখে রিউমর স্ক্যানার টিম। উক্ত প্রতিবেদনে বলা হয়, সাবেক স্ত্রী ও তার ভাইদের বিরুদ্ধে প্রতারণা, জালিয়াতি, অর্থ আত্মসাৎ, নির্যাতন ও দুর্নীতির অভিযোগ করেছেন। তিনি জাতীয় ক্যানসার ইনস্টিটিউট ও হাসপাতালের নাক, কান ও গলা রোগ বিভাগের সাবেক বিভাগীয় প্রধান ও অধ্যাপক ডা. সালেহ উদ্দিন সাঈদ । গত ২৭ ফেব্রুয়ারি (বৃহস্পতিবার) রাজধানীর সেগুনবাগিচায় একটি রেস্তোরাঁয় সংবাদ সম্মেলন করে তিনি এ অভিযোগ তুলে ধরেন।
তবে উক্ত প্রতিবেদনে সংযুক্ত ছবিটি অর্থ উপদেষ্টা ড. সালেহউদ্দিন আহমেদের। অন্যদিকে একই সংবাদ সম্মেলনের বিষয়ে অন্যান্য গণমাধ্যমগুলোতে প্রকাশিত প্রতিবেদনে (১,২,৩) সংবাদ সম্মেলন করা এক ব্যক্তির ছবি প্রচার করা হয়। ছবিটি পর্যবেক্ষণ করে এটি নিশ্চিত যে এই ব্যক্তি অর্থ উপদেষ্টা ড. সালেহউদ্দিন আহমেদ নয়। দুই ব্যক্তির চেহারায়ও সুস্পষ্ট অমিল রয়েছে।

উল্লেখ্য, ড. সালেহ।উদ্দিন আহমেদ বাংলাদেশ ব্যাংকের নবম গভর্নর ছিলেন। তিনি ১৯৬৮ সালে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে অর্থনীতিতে বিএ অনার্স পাশ করেন এবং ১৯৬৯ সালে একই বিষয়ে এমএ পাশ করেন। ১৯৭০ সালে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে অর্থনীতির লেকচারার হিসেবে যোগ দেন। পর তৎকালীন পাকিস্তানের কেন্দ্রীয় প্রশাসনে সিভিল সার্ভিস অব পাকিস্তান (সিএসপি) ক্যাডারে যোগ দেন।
অর্থাৎ, দুই ব্যক্তির নামের মিল থাকার কারণেই যুগান্তর তাদের প্রতিবেদনে ডা. সালেহ উদ্দিন সাঈদ এর পরিবর্তে ড. সালেহ উদ্দিন আহমেদের ছবি প্রচার করে। যদিও গণমাধ্যমটি পরবর্তীতে তা সংশোধন করে নেয়।
সুতরাং, স্ত্রী-শ্যালকের বিরুদ্ধে প্রতারণার অভিযোগে করা সংবাদ সম্মেলন নিয়ে যুগান্তরে প্রকাশিত প্রতিবেদনে ডা. সালেহ উদ্দিন সাঈদের ছবিকে উপদেষ্টা ড. সালেহউদ্দিন আহমেদের ছবি বলে দাবি করা হয়েছে; যা বিভ্রান্তিকর।
তথ্যসূত্র
- Dhaka Tribune- Adviser: OMS discontinued as market somewhat stabilizes
- Dhaka Times – প্রতারণার অভিযোগ তুলে চিকিৎসক সালেহউদ্দিনের সংবাদ সম্মেলন
- News24bd – স্ত্রী-শ্যালকের বিরুদ্ধে প্রতারণার অভিযোগ ডা. সালেহ উদ্দিনের
- ATN News TV- নিষিদ্ধ ছাত্রলীগ নেত্রীর বিরুদ্ধে প্রতারণার অভিযোগ
- Kalbela- অন্তর্বর্তী সরকারের উপদেষ্টা ড. সালেহ উদ্দিন আহমেদের পরিচয়
- Rumor Scanner’s own analysis