পটুয়াখালীতে আগুনে বাড়ি ও দোকান পুড়ে যাওয়ার ঘটনায় সাম্প্রদায়িক যোগসূত্র নেই

সম্প্রতি, বাংলাদেশে পটুয়াখালীতে ইসলামী সন্ত্রাসীরা হিন্দুদের ৫টি বাড়ি ও ২টি দোকান পুড়িয়ে ধ্বংস করেছে দাবিতে একটি ভিডিও প্রচার করা হয়েছে। 

উক্ত দাবিতে এক্সে প্রচারিত ভিডিও দেখুন এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ)।

ফ্যাক্টচেক

রিউমর স্ক্যানার টিমের অনুসন্ধানে জানা যায়, পটুয়াখালীতে ইসলামী সন্ত্রাসীরা হিন্দুদের ৫টি বাড়ি ও ২টি দোকান পুড়িয়ে ধ্বংস করেছে শীর্ষক দাবিটি সঠিক নয় বরং আগুন লেগে বাড়ি বা বাসাসহ দুই দোকান পুড়ে যাওয়ার ঘটনার সাথে ধর্মীয় বা সাম্প্রদায়িক কারণ খুঁজে পাওয়া যায়নি।

এই বিষয়ে অনুসন্ধানে ভিডিওতে থাকা ‘এখন বাংলা টিভি’ লেখার সূত্র ধরে ‘Ekhon Bangla Tv’ নামক ফেসবুক পেজে গত ৬ মার্চ ‘আমার সার্টিফিকেট সব পুরে শেষ এখন আমরা কি করমু,পটুয়াখালী পাঁচটি বসতবাড়িসহ দুটি ব্যবসা প্রতিষ্ঠান পুরে ছাই।’ শীর্ষক ক্যাপশনে প্রচারিত একটি ভিডিও খুঁজে পাওয়া যায়। 

ভিডিওটির সাথে আলোচিত দাবিতে প্রচারিত ভিডিওর সাদৃশ্য খুঁজে পাওয়া যায়।

Comparison: Rumor Scanner

ভিডিওটিতে শুরুতেই থাকা ক্ষতিগ্রস্ত মেয়েটিকে বলতে শোনা যায়, পাশ্ববর্তী এক পাগলের ঘর থেকে আগুন লেগেছে।

পরবর্তীতে, ভিডিওতে থাকা ক্যাপশনের তথ্যের সূত্র ধরে জাতীয় দৈনিক যুগান্তর এর ওয়েবসাইটে গত ৬ মার্চ প্রকাশিত ‘পটুয়াখালীতে আগুন লেগে পাঁচটি বাসাসহ দুই দোকান পুড়ে ছাই’ শীর্ষক শিরোনামের একটি প্রতিবেদন খুঁজে পাওয়া যায়।

প্রতিবেদনে বলা হয়, পটুয়াখালীতে আগুন লেগে পাঁচটি বাসাসহ দুই দোকান পুড়ে ছাই হয়ে গেছে। এতে প্রায় ৩০ লাখ টাকার ক্ষতি হয়েছে। বৃহস্পতিবার (৬ মার্চ) ভোর পৌনে ৫টার দিকে পটুয়াখালী পৌর শহরের জুবিলী স্কুল সড়কে এ অগ্নিকাণ্ডের ঘটনা ঘটে। 

বলা হয়, ক্ষতিগ্রস্ত পরিবারের মধ্যে রয়েছেন- জয়ন্তু রায় (৩০), নির্মল কর্মকার (৬০), রিপন কর্মকার (৪৬), ধীমান কর্মকার (৫১), বাবুল চন্দ্র শীল (৫০) ও বিকাশ চন্দ্র দাস (৪৫)। এছাড়া আগুনে নিকুঞ্জ সোনা ঘর ও শ্যামল আর্ট নামে দুটি ব্যবসা প্রতিষ্ঠান সম্পূর্ণভাবে পুড়ে গেছে।

পটুয়াখালী ফায়ার সার্ভিসের সিনিয়র স্টেশন অফিসার দেওয়ান মো. রাজিব  বলেন, প্রাথমিকভাবে ধারণা করা হচ্ছে বিদ্যুতের শর্টসার্কিট থেকে অগ্নিকাণ্ডের সূত্রপাত হয়েছে। আগুন নিয়ন্ত্রণে ফায়ার সার্ভিসের চারটি ইউনিটের ৪০ মিনিটের মতো সময় লেগেছে। 

বাংলা ট্রিবিউনে প্রকাশিত প্রতিবেদন থেকেও একই তথ্য জানা যায়।

এছাড়াও, কালবেলাবাংলানিউজ২৪ এর ওয়েবসাইটে প্রকাশিত প্রতিবেদনে পটুয়াখালী ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্সের সহকারী পরিচালক মো. মোস্তফা মোহসীন এর বরাত দিয়ে জানানো হয়,  ‘এখন পর্যন্ত অগ্নিকাণ্ডের সূত্রপাত জানা যায়নি। তবে প্রাথমিক তদন্তের পাশাপাশি ক্ষতিগ্রস্ত পরিবারের তালিকা সংগ্রহ চলছে।’

তাছাড়া, চ্যানেল২৪ এর ইউটিউব চ্যানেলে এই বিষয়ে প্রচারিত ভিডিওতে এক ক্ষতিগ্রস্ত ব্যক্তিকে বলতে দেখা যায়, পাশ্ববর্তী ঘরে এক মহিলা আছে উনি নাকি কয়েল ধরায়ে রেখে ঘুমিয়েছে। কয়েল থেকে আগুন লেপ-তোষকে ধরছে।

তবে, আগুনের এই ঘটনার সাথে ধর্মীয় বা সাম্প্রদায়িক ইস্যু গণমাধ্যম বা নির্ভরযোগ্য সূত্রে খুঁজে পাওয়া যায়নি।

সুতরাং, সম্প্রতি পটুয়াখালীতে আগুন লেগে বাসাসহ দুই দোকান পুড়ে যাওয়ার ঘটনাকে সাম্প্রদায়িক ইস্যুতে প্রচার করা হয়েছে; যা বিভ্রান্তিকর।

তথ্যসূত্র

আরও পড়ুন

spot_img