সম্প্রতি “আল্লাহ মাফ কোর সিলেটের মানুষদের জন্য সবাই দোয়া করবেন” শীর্ষক শিরোনামে একটি ভিডিও সামাজিক মাধ্যম টিকটকে ছড়িয়ে পড়েছে।
টিকটকে প্রচারতি এমন কিছু পোস্ট দেখুন এখানে। আর্কাইভ ভার্সন দেখুন এখানে।
ফ্যাক্টচেক
রিউমর স্ক্যানার টিমের অনুসন্ধানে দেখা যায়, প্রচারিত ভিডিওটি সাম্প্রতিক সময়ে সিলেটের বন্যায় নির্মাণাধীন ভবন ধসে পড়ার কোনো ভিডিও নয় বরং এটি ৩ বছর পূর্বে বাংলাদেশের শরীয়তপুরে পদ্মা নদীর ভাঙনে বিধ্বস্ত বড় বড় ভবনগুলো ধসের সময় ধারণকৃত একটি ভিডিও।
প্রচারিত ভিডিওটির উপরে ডান পাশে জলছাপের সূত্র ধরে, ‘TechTV BD’ নামের একটি ভেরিফাইড ইউটিউব চ্যানেলে ২০১৮ সালের ০১ নভেম্বরে “Big Building Destroyed In River Erosion | Shariatpur Padma River Erosion” শীর্ষক শিরোনামে প্রকাশিত একই ভিডিওটি খুঁজে পাওয়া যায়।যেখানে ভিডিওটির বিস্তারিত অংশে লেখা রয়েছে, শরীয়তপুর জেলার নড়িয়া উপজেলায় পদ্মা নদী ভাঙন আবারো ভয়াবহ রূপ নিয়েছে। (অনুবাদিত)
পরবর্তীতে, ভিডিওটি বিবরণী অংশের সূত্র ধরে কি-ওয়ার্ড সার্চের মাধ্যমে, সংবাদমাধ্যম ডয়চে ভেলের বাংলা বিভাগের ওয়েবসাইটে ২০১৮ সালের ১৩ সেপ্টেম্বর “নড়িয়ায় ভাঙন, হাজারো মানুষের কান্না” শীর্ষক শিরোনামে প্রকাশিত একটি প্রতিবেদন থেকে ঐ সময়ে শরীয়তপুর জেলার নড়িয়া উপজেলায় পদ্মা নদীর ভাঙন সম্পর্কিত বিস্তারিত তথ্য পাওয়া যায়।
মূলত, নদী তীরবর্তী এলাকায় নদী ভাঙনের ফলে ঘড়বাড়ি ধসে পড়ার একটি পুরোনো ভিডিও সাম্প্রতিক সময়ে সিলেটের বন্যায় নির্মাণাধীন ভবন ধসে পড়ার ভিডিও দাবিতে সামাজিক মাধ্যম টিকটকে প্রচার করা হচ্ছে।
তবে আলোচিত ভিডিওটির প্রেক্ষাপট সম্পর্কে বিস্তারিত তথ্য নিশ্চিত করা না গেলেও এটি নিশ্চিত যে ভিডিওটি সাম্প্রতিক সময়ের নয়।
প্রসঙ্গত, বাংলাদেশের সিলেট অঞ্চলে গত ১৪ মে থেকে সুরমা ও কুশিয়ারা নদীর পানি বিপদসীমার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হওয়া শুরু করে। এর ফলে সিলেট মহানগরসহ জেলার ১৩টি উপজেলায় প্লাবিত হয় হাজার হাজার গ্রাম। পানিবন্দী হয়ে পড়ে হাজার হাজার মানুষ। পার্শ্ববর্তী ভারতের মেঘালয়ের চেরাপুঞ্জিতে প্রায় ২ হাজার ২০০ মিলিমিটার বৃষ্টিপাত হয়েছে। সেখান থেকে নেমে আসা পানির ঢলেই বন্যা পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়েছে। যা গত ১৮ বছরের মধ্যে সিলেটে সবচেয়ে বড় বন্যায় পরিণত হয়েছে।
সুতরাং, নদী ভাঙনের ফলে ঘড়বাড়ি ধসে পড়ার একটি পুরোনো ভিডিওকে সাম্প্রতিক সময়ে সিলেটের বন্যায় নির্মাণাধীন ভবন ধসে পড়ার ভিডিও দাবিতে সামাজিক মাধ্যম টিকটকে প্রচার করা হচ্ছে; যা বিভ্রান্তিকর।