জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) উত্তরাঞ্চলের মুখ্য সংগঠক সারজিস আলমের বন্ধুর বাসা থেকে তিন বস্তা টাকা পাওয়া গেছে যা তার (সারজিসের) কাছে রাখা হয়েছিল ঈদের পরে এনসিপির প্রচারণার খরচের জন্য শীর্ষক দাবিতে সারজিস আলমের ছবিযুক্ত একটি ভিডিও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে প্রচার করা হয়েছে ৷

উক্ত দাবিতে ফেসবুকে প্রচারিত পোস্ট দেখুন এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ) এবং এখানে (আর্কাইভ)।
ইনস্টাগ্রামে প্রচারিত পোস্ট দেখুন এখানে (আর্কাইভ)।
এই প্রতিবেদনটি প্রকাশ হওয়া অবধি উক্ত দাবিতে প্রচারিত উপরোল্লিখিত ভিডিওগুলো প্রায় ১০ লক্ষ বার দেখা হয়েছে।
ফ্যাক্টচেক
রিউমর স্ক্যানার টিমের অনুসন্ধানে জানা যায়, প্রচারিত ভিডিওটি সারজিস আলমের বন্ধুর বাসা থেকে তিন বস্তা টাকা উদ্ধারের ঘটনার নয় বরং এটি মোহাম্মদপুর জেনেভা ক্যাম্পে মাদক বিক্রির টাকাসহ এক ব্যক্তিকে গ্রেফতারের ঘটনার ভিডিও। এছাড়া, প্রচারিত পোস্টগুলোতে সারজিস আলমকে উপদেষ্টা বলে দাবি করা হলেও তিনি সরকারের উপদেষ্টা নন।
এ বিষয়ে অনুসন্ধানের শুরুতে প্রচারিত ভিডিওর কয়েকটি কী-ফ্রেম রিভার্স ইমেজ সার্চ করে মূলধারার গণমাধ্যম কালের কণ্ঠের ইউটিউব চ্যানেলে ২০২৫ সালের ৫ জুন “মা/দ/ক বিক্রির চার বস্তা টাকাসহ একজনকে আ/ট/ক করলো যৌথ বাহিনী | Bangladesh |Kaler Kantho” শীর্ষক শিরোনামে প্রকাশিত একটি ভিডিও খুঁজে পাওয়া যায়। উক্ত ভিডিওর সাথে আলোচিত দাবিতে প্রচারিত ভিডিওটির মিল রয়েছে।

পরবর্তীতে উক্ত ভিডিও থেকে প্রাপ্ত তথ্যের সূত্র ধরে প্রাসঙ্গিক কি ওয়ার্ড সার্চের মাধ্যমে একই ঘটনায় জাতীয় দৈনিক প্রথম আলোর ওয়েবসাইটে ২০২৫ সালের ৫ জুন ‘জেনেভা ক্যাম্পে অভিযান : মাদক বিক্রির আড়াই কোটি টাকাসহ গ্রেপ্তার ১০’ শীর্ষক শিরোনামে প্রকাশিত একটি প্রতিবেদন খুঁজে পাওয়া যায়।
উক্ত প্রতিবেদন থেকে জানা যায়, “৪ জুন রাতে সেনাবাহিনী ও র্যাব-২ যৌথভাবে মোহাম্মদপুরের হুমায়ুন রোড এলাকায় অবস্থিত বিহারি ক্যাম্পে এই অভিযান চালিয়ে মাদক বিক্রির ২ কোটি ৪৫ লাখ টাকা, মাদকদ্রব্য ও অস্ত্রসহ ১০ জনকে গ্রেপ্তার করেছে। গ্রেপ্তার ব্যক্তিরা হলো— মো. ইসহাক আহমেদ (৩৮), মো. চুম্মন (২৫), মো. রবিউল ইসলাম (৩০), মো. রায়হান (১৮), মো. শহিদুল ইসলাম বিজয় (১৮), মো. ইমরান সাইদ (৪২), মো. রাসেল (২২), মো. ইমরান (৩২), মো. শাহাদাত (২০) এবং মো. নয়ন (২৩)।”
সেসময় দেশের অন্যান্য গণমাধ্যমও এ বিষয়ে সংবাদ (১,২,৩) প্রকাশ করে।
তবে উক্ত প্রতিবেদনগুলোর কোথাও সারজিস আলমের সাথে গ্রেফতারকৃত ব্যক্তিদের সম্পর্ক আছে বলে তথ্য খুঁজে পাওয়া যায়নি।
সুতরাং, মোহাম্মদপুর জেনেভা ক্যাম্পে মাদক বিক্রির অভিযোগে টাকাসহ এক ব্যক্তিকে গ্রেফতারের দৃশ্যকে সারজিস আলমের বন্ধুর বাসা থেকে তিন বস্তা টাকা উদ্ধারের ঘটনা দাবিতে প্রচার করা হয়েছে; যা মিথ্যা।