ভারতে সাম্প্রতিক ভারী বৃষ্টি ও বন্যার খবরে গণমাধ্যমে পুরোনো ছবি

ভারতের বিভিন্ন অঞ্চলে চলতি মাসে (জুলাই) ভারী বৃষ্টি এবং বন্যার ঘটনায় বাংলাদেশের একাধিক গণমাধ্যমে প্রকাশিত প্রতিবেদনে ১৭ টি ভিন্ন ছবি ব্যবহার করা হয়েছে। 

ছবিগুলো ব্যবহার করে প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে একাত্তর টিভি (১), ভয়েস অফ আমেরিকা বাংলা (১), ভয়েস অফ আমেরিকা বাংলা (২), একাত্তর টিভি (২), বহুমাত্রিক, সোনালী নিউজ, দেশ রূপান্তর, সময়ের আলো (১), ইনকিলাব (১), ঢাকা পোস্ট (১), বাংলাদেশ জার্নাল, জনকণ্ঠ, সময়ের আলো (২), নিউজজি২৪, বৈশাখী টিভি, নিউজ২৪, একাত্তর টিভি (৩), মানবকণ্ঠ, ইনকিলাব (২), রেডিও টুডে, ডেইলি বাংলাদেশ, আমাদের সময়, নয়া দিগন্ত, ঢাকা পোস্ট (২), আগামী নিউজ, ঢাকা রিপোর্ট২৪

একই দাবিতে ফেসবুকে প্রচারিত কিছু পোস্ট দেখুন এখানে (আর্কাইভ) এবং এখানে (আর্কাইভ)।

একই দাবিতে ইউটিউবের একটি ভিডিও দেখুন এখানে (আর্কাইভ)।

ফ্যাক্টচেক

রিউমর স্ক্যানার টিমের অনুসন্ধানে দেখা যায়, প্রচারিত ছবিগুলো সাম্প্রতিক সময়ে ভারতের বন্যার ঘটনার নয় বরং পূর্বের ভিন্ন ভিন্ন ঘটনার পুরোনো ছবিকে ভারতের সাম্প্রতিক ঘটনার দাবিতে প্রচার করা হয়েছে। 

ছবি যাচাই ০১

Screenshot source: Ittefaq

এই ছবিটি ব্যবহার করে প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে ইনকিলাব, রেডিও টুডে। 

কিন্তু ছবিটি উক্ত ঘটনার নয়।

ছবিটির মূল সূত্রের বিষয়ে অনুসন্ধানে ছবি শেয়ারিং এবং স্টোরেজ সংক্রান্ত আন্তর্জাতিক প্রতিষ্ঠান Getty Images এর ওয়েবসাইটে ছবিটি খুঁজে পাওয়া যায়। 

Screenshot source: Getty Images 

ছবির ক্যাপশন থেকে জানা যায়, ২০১৮ সালের ২৬ জুলাই ভারতের উত্তর প্রদেশের মাথুরাতে ভারী বৃষ্টি থেকে সৃষ্ট বন্যার ঘটনার দৃশ্য এটি। 

অর্থাৎ, গণমাধ্যমে প্রচারিত এই ছবিটি পাঁচ বছরের পুরোনো। 

ছবি যাচাই ০২

Screenshot source: Daily Bangladesh

এই ছবিটি ব্যবহার করে প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে ডেইলি বাংলাদেশ। 

কিন্তু ছবিটি উক্ত ঘটনার নয়।

ছবিটির মূল সূত্রের বিষয়ে অনুসন্ধানে আন্তর্জাতিক সংবাদ সংস্থা AP এর ওয়েবসাইটে ২০২১ সালের ২০ নভেম্বর প্রকাশিত এক প্রতিবেদনে ছবিটি খুঁজে পাওয়া যায়। 

Screenshot source: AP

প্রতিবেদনে ছবিটির ক্যাপশনে থেকে জানা যায়, সেসময়ে ভারতের অন্ধ্র প্রদেশের নেলোরে’তে বন্যা কবলিত এলাকার দৃশ্য এটি। 

অর্থাৎ, গণমাধ্যমে প্রচারিত এই ছবিটি ভারতের জুলাইয়ের বন্যার ঘটনার নয়।

ছবি যাচাই ০৩

Screenshot source: Dhaka Post 

এই ছবিটি ব্যবহার করে প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে আমাদের সময়, নয়া দিগন্ত, ঢাকা পোস্ট, আগামী নিউজ, ঢাকা রিপোর্ট২৪। 

কিন্তু ছবিটি উক্ত ঘটনার নয়।

ছবিটির মূল সূত্রের বিষয়ে অনুসন্ধানে ভারতের হিন্দি ভাষার দৈনিক Amar Ujala  এর ওয়েবসাইটে ২০১৯ সালের ২১ ডিসেম্বর প্রকাশিত এক প্রতিবেদনে ছবিটি খুঁজে পাওয়া যায়। 

প্রতিবেদনে ছবিটির ‘ফাইল ফটো’ উল্লেখ ছিল। 

পরবর্তীতে আরো অনুসন্ধান করে একই বছরের ১৯ আগস্ট ফেসবুকের একটি পোস্টে (আর্কাইভ) একই ছবি খুঁজে পাওয়া যায়। 

পোস্টের ক্যাপশনে বলা হয়, ছবিটি ভারতের শ্রীনগর থেকে তুলেছেন ভিনয় ভাট। 

Screenshot source: Facebook 

অর্থাৎ, গণমাধ্যমে প্রচারিত এই ছবিটি অন্তত চার বছর আগের তোলা। 

ছবি যাচাই ০৪

Screenshot source: Newsg24 

এই ছবিটি ব্যবহার করে প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে নিউজজি২৪, বৈশাখী টিভি। 

কিন্তু ছবিটি উক্ত ঘটনার নয়।

ছবিটির মূল সূত্রের বিষয়ে অনুসন্ধানে ভারতীয় সংবাদমাধ্যম The Hindu এর ওয়েবসাইটে ২০২২ সালের ৩০ আগস্ট প্রকাশিত এক প্রতিবেদনে ছবিটি খুঁজে পাওয়া যায়। 

Screenshot source: The Hindu

ছবিটির ক্যাপশন থেকে জানা যায়, ভারী বৃষ্টি থেকে সৃষ্ট বন্যার ঘটনার এই দৃশ্যটি একইদিন ভারতের সংবাদ সংস্থা পিটিআই তুলেছিল।

অর্থাৎ, গণমাধ্যমে প্রচারিত এই ছবিটি প্রায় এক বছরের পুরোনো। 

ছবি যাচাই ০৫

Screenshot source: News24 

এই ছবিটি ব্যবহার করে প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে নিউজ২৪। 

কিন্তু ছবিটি উক্ত ঘটনার নয়।

ছবিটির মূল সূত্রের বিষয়ে অনুসন্ধানে ভারতীয় সংবাদমাধ্যম The Times of India এর ওয়েবসাইটে ২০২০ সালের ১৭ আগস্ট প্রকাশিত এক প্রতিবেদনে ছবিটি খুঁজে পাওয়া যায়। 

Screenshot source: ToI

ছবিটির ক্যাপশন থেকে জানা যায়, বন্যার ঘটনার এই দৃশ্যটি সে বছরের (২০২০) ১৩ আগস্ট ভারতের সংবাদ সংস্থা ANI তুলেছিল।

অর্থাৎ, গণমাধ্যমে প্রচারিত এই ছবিটি প্রায় তিন বছরের পুরোনো।

ছবি যাচাই ০৬

Screenshot source: Ekattor Tv 

এই ছবিটি ব্যবহার করে প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে একাত্তর টিভি, মানবকণ্ঠ। 

কিন্তু ছবিটি উক্ত ঘটনার নয়।

ছবিটির মূল সূত্রের বিষয়ে অনুসন্ধানে ছবি শেয়ারিং সাইট Alamy তে ছবিটি খুঁজে পাওয়া যায়। 

Screenshot source: Alamy

ছবিটির ক্যাপশন থেকে জানা যায়, বন্যার ঘটনার এই দৃশ্যটি ২০২২ সালের ১১ জুলাই ভারতের আহমেদাবাদ থেকে তোলা হয়েছিল।

অর্থাৎ, গণমাধ্যমে প্রচারিত এই ছবিটি ভারতের সাম্প্রতিক বন্যার ঘটনার নয়।

ছবি যাচাই ০৭

Screenshot source: Bangladesh Journal

এই ছবিটি ব্যবহার করে প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে বাংলাদেশ জার্নাল। 

কিন্তু ছবিটি উক্ত ঘটনার নয়।

ছবিটির মূল সূত্রের বিষয়ে অনুসন্ধানে AP  এর ওয়েবসাইটে ২০২১ সালের ১৯ অক্টোবর প্রকাশিত এক প্রতিবেদনে ছবিটি খুঁজে পাওয়া যায়।

Screenshot source: AP 

ছবিটির ক্যাপশন থেকে জানা যায়, বন্যার ঘটনার এই দৃশ্যটি ২০২১ সালের ১৯ অক্টোবর ভারতের উত্তরাখন্ড থেকে এপি’র পক্ষে তুলেছিলেন মোস্তাফা কুরাইসি। 

অর্থাৎ, গণমাধ্যমে প্রচারিত এই ছবিটি ভারতের জুলাইয়ের বন্যার ঘটনার নয়।

ছবি যাচাই ০৮

Screenshot source: Janakantho 

এই ছবিটি ব্যবহার করে প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে জনকণ্ঠ। 

কিন্তু ছবিটি উক্ত ঘটনার নয়।

ছবিটির বিষয়ে অনুসন্ধানে তুরস্কের রাষ্ট্রীয় সংবাদমাধ্যম Anadolu Agency এর ওয়েবসাইটে ২০২১ সালের ১২ সেপ্টেম্বর প্রকাশিত এক প্রতিবেদনে ছবিটি খুঁজে পাওয়া যায়।  

Screenshot source: AA

আনাদোলু এজেন্সি তাদের প্রতিবেদনে ছবিটির ক্যাপশনে কোনো তথ্য উল্লেখ না করলেও প্রতিবেদন থেকে জানা যায়, সে সময় পাকিস্তানের খাইবার পাখতুম প্রদেশে ভারী বৃষ্টি থেকে বন্যা দেখা দেয়।  

অর্থাৎ, গণমাধ্যমে প্রচারিত এই ছবিটি অন্তত দুই বছরের পুরোনো।

ছবি যাচাই ০৯

Screenshot source: Somoyer Alo 

এই ছবিটি ব্যবহার করে প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে সময়ের আলো।

কিন্তু ছবিটি উক্ত ঘটনার নয়।

ছবিটির বিষয়ে অনুসন্ধানে ভারতের সংবাদমাধ্যম Indian Express এর ওয়েবসাইটে ২০১৬ সালের ২৫ আগস্ট প্রকাশিত এক প্রতিবেদনে আলোচিত ছবিটি খুঁজে পাওয়া যায়।  

Screenshot source: Indian Express 

ছবিটির ক্যাপশন থেকে জানা যায়, সেসময় ভারতের বর্ধমানের এক গ্রামের রাস্তা বন্যায় ডুবে যাওয়ার দৃশ্য এটি। 

অর্থাৎ, গণমাধ্যমে প্রচারিত এই ছবিটি প্রায় সাত বছরের পুরোনো।

ছবি যাচাই ১০

Screenshot source: Desh Rupantor 

এই ছবিটি ব্যবহার করে প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে সোনালী নিউজ, দেশ রূপান্তর। 

কিন্তু ছবিটি উক্ত ঘটনার নয়।

ছবিটির মূল সূত্রের বিষয়ে অনুসন্ধানে আন্তজার্তিক সংবাদমাধ্যম Reuters এর ওয়েবসাইটে ২০২২ সালের ২১ আগস্ট প্রকাশিত এক প্রতিবেদনে মূল ছবিটি খুঁজে পাওয়া যায়। 

Screenshot source: Reuters 

ছবির ক্যাপশনে রয়টার্স লিখেছে, ২০ আগস্ট ভারতের হিমাচল প্রদেশের কাঙ্গরাতে ভারী বৃষ্টির ফলে সেতু ধসে পড়ার দৃশ্য এটি। 

অর্থাৎ, গণমাধ্যমে প্রচারিত সেতু ধসে পড়ার এই ছবিটি ভারতের এই জুলাইয়ের বন্যার ঘটনার নয়।

ছবি যাচাই ১১

Screenshot source: Somoyer Alo 

এই ছবিটি ব্যবহার করে প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে সময়ের আলো। 

কিন্তু ছবিটি উক্ত ঘটনার নয়।

ছবিটির মূল সূত্রের বিষয়ে অনুসন্ধানে Getty Images এর ওয়েবসাইটে মূল ছবিটি খুঁজে পাওয়া যায়। 

Screenshot source: Getty Images 

ছবিটির বিষয়ে গেটি ইমেজেসে বলা হয়েছে, ২০১৮ সালের ০৯ আগস্ট ভারতের কোচিতে ভারী বৃষ্টিতে শিব মন্দর ডুবে যাওয়ার দৃশ্য এটি। 

অর্থাৎ, গণমাধ্যমে প্রচারিত এই ছবিটি ভারতের সাম্প্রতিক বন্যার ঘটনার নয়।

ছবি যাচাই ১২

Screenshot source: Inqilab 

এই ছবিটি ব্যবহার করে প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে ইনকিলাব, ঢাকা পোস্ট

কিন্তু ছবিটি উক্ত ঘটনার নয়।

ছবিটির বিষয়ে অনুসন্ধানে The Times of India এর ওয়েবসাইটে ২০১৯ সালের ১৯ আগস্ট প্রকাশিত এক প্রতিবেদনে ছবিটি খুঁজে পাওয়া যায়।  

Screenshot source: ToI

প্রতিবেদনে ছবিটির ক্যাপশনে কোনো তথ্য উল্লেখ না থাকলেও প্রতিবেদন থেকে জানা যায়, সে সময় যমুনা নদীর পানিতে প্লাবিত হয় নিঘামবোধ ঘাট। 

অর্থাৎ, গণমাধ্যমে প্রচারিত এই ছবিটি অন্তত চার বছরের পুরোনো।

ছবি যাচাই ১৩

Screenshot source: Ekattor Tv 

এই ছবিটি ব্যবহার করে প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে একাত্তর টিভি। 

কিন্তু ছবিটি উক্ত ঘটনার নয়।

ছবিটির মূল সূত্রের বিষয়ে অনুসন্ধানে AP  এর ওয়েবসাইটে ২০২২ সালের ১৮ জুন প্রকাশিত এক প্রতিবেদনে মূল ছবিটি খুঁজে পাওয়া যায়। 

Screenshot source: AP

ছবিটির ক্যাপশনে এপি লিখেছে, ২০২২ সালের ১৮ জুন বাংলাদেশের সিলেটের বন্যার ঘটনার দৃশ্য এটি। 

অর্থাৎ, গণমাধ্যমে প্রচারিত এই ছবিটি ভারতের নয় বরং বাংলাদেশের সিলেটের।

ছবি যাচাই ১৪

Screenshot source: Bahumatrik 

এই ছবিটি ব্যবহার করে প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে বহুমাত্রিক। 

কিন্তু ছবিটি উক্ত ঘটনার নয়।

ছবিটির বিষয়ে অনুসন্ধানে ভারতের সংবাদমাধ্যম India Tv এর ওয়েবসাইটে ২০২০ সালের ০৮ জুলাই প্রকাশিত এক প্রতিবেদনে আলোচিত ছবিটি খুঁজে পাওয়া যায়। 

Screenshot source: India Tv 

প্রতিবেদন এবং প্রতিবেদনে ছবিটির ক্যাপশন থেকে জানা যায়, সেসময় বিহারে বন্যার দৃশ্যের এই ছবিটি তুলেছিল পিটিআই।

অর্থাৎ, গণমাধ্যমে প্রচারিত এই ছবিটি প্রায় তিন বছরের পুরোনো। 

ছবি যাচাই ১৫

Screenshot source: VoA Bangla 

এই ছবিটি ব্যবহার করে প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে ভয়েস অফ আমেরিকা বাংলা

কিন্তু ছবিটি উক্ত ঘটনার নয়।

ছবিটির বিষয়ে অনুসন্ধানে ভারতীয় সংবাদমাধ্যম Asiana Times এর ওয়েবসাইটে ২০২২ সালের ২২ জুলাই প্রকাশিত এক প্রতিবেদনে আলোচিত ছবিটি খুঁজে পাওয়া যায়। 

Screenshot source: Asian Times

ছবিটির ক্যাপশন থেকে জানা যায়, ২২ জুলাই আহমেদাবাদে বন্যার দৃশ্যের এই ছবিটি তুলেছিল পিটিআই। 

অর্থাৎ, গণমাধ্যমে প্রচারিত এই ছবিটি এক বছরের পুরোনো। 

ছবি যাচাই ১৬

Screenshot source: VoA

এই ছবিটি ব্যবহার করে প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে ভয়েস অফ আমেরিকা বাংলা। 

কিন্তু ছবিটি উক্ত ঘটনার নয়।

ছবিটির মূল সূত্রের বিষয়ে অনুসন্ধানে ভারতের সংবাদমাধ্যম Latestly এর ওয়েবসাইটে ২০২১ সালের ২৭ আগস্ট প্রকাশিত এক প্রতিবেদনে আলোচিত ছবিটি খুঁজে পাওয়া যায়।  

Screenshot source: Latestly

প্রতিবেদন থেকে জানা যায়, সেসময় ভারতের উত্তরাখণ্ডের বৃষ্টির ঘটনার দৃশ্য এটি। 

অর্থাৎ, গণমাধ্যমে প্রচারিত এই ছবিটি ভারতের চলতি মাসের (জুলাই) বন্যার ঘটনার নয়।

ছবি যাচাই ১৭

Screenshot source: Facebook 

বিদ্যালয়ে তলিয়ে যাওয়ার এই দৃশ্য ব্যবহার করে ভারতে বন্যার বিষয়ে ভিডিও প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে একাত্তর টিভি (ফেসবুক)।

কিন্তু দৃশ্যটি ভারতেরই নয়।

ছবিটির মূল সূত্রের বিষয়ে অনুসন্ধানে মূলধারার গণমাধ্যম চ্যানেল২৪ এর ইউটিউব চ্যানেলে ২০২০ সালের ২৩ জুলাই প্রকাশিত এক ভিডিও প্রতিবেদনে আলোচিত দৃশ্যটি খুঁজে পাওয়া যায়।

Screenshot source: YouTube

চ্যানেল২৪ বলছে, মাদারিপুরে সেসময় পদ্মা নদী ভাঙ্গনের কারণে তিন তলা বিশিষ্ট এস.ই.এস.ডিপি মডেল উচ্চ বিদ্যালয় নামের এই বিদ্যালয় ভবনটি তলিয়ে যায়। 

দেশের একাধিক গণমাধ্যমেও (,) সেসময় বিষয়টি নিয়ে প্রতিবেদন প্রকাশিত হয়।  

গণমাধ্যমে প্রকাশিত প্রতিবেদনে আলোচিত ছবিগুলোর ক্যাপশনে ফাইল ফটো বা পুরোনো ছবি শীর্ষক কোনো তথ্য উল্লেখ করা হয়নি বরং কিছু গণমাধ্যমে ছবিগুলো সংগৃহীত এবং কোনো কোনো গণমাধ্যমে ছবির ক্যাপশনে কোনো তথ্য উল্লেখ করা হয়নি। সাম্প্রতিক ঘটনার বিষয়ে প্রকাশিত প্রতিবেদনে ছবিগুলো ব্যবহার করে সংগৃহীত উল্লেখ কিংবা কোনো তথ্যই উল্লেখ না থাকায় স্বাভাবিকভাবেই ছবিগুলো ভারতের সাম্প্রতিক বৃষ্টিপাত ও বন্যার ঘটনার বলে প্রতীয়মান হয়। এতে করে নেটিজেনদের মধ্যে বিভ্রান্তি তৈরি হওয়া অমূলক নয়।

মূলত, চলতি জুলাই মাসে ভারতের বিভিন্ন অঞ্চলে ভারী বৃষ্টিপাত এবং তা থেকে সৃষ্ট বন্যার ঘটনা ঘটে। এই ঘটনায় দেশীয় গণমাধ্যমে প্রকাশিত প্রতিবেদনে ভারতের বন্যা ও ভারী বর্ষণেী ঘটনার দাবিতে ১৭ টি ছবি ব্যবহার করা হয়েছে। তবে রিউমর স্ক্যানারের অনুসন্ধানে দেখা যায়, ছবিগুলো সাম্প্রতিক সময়ের নয়। ভারত, পাকিস্তান ও বাংলাদেশের পুরোনো ও ভিন্ন ঘটনার ছবিকে ভারতের সাম্প্রতিক বন্যার ঘটনার খবরে ব্যবহার করা হয়েছে। প্রকাশিত প্রতিবেদনগুলোতে আলোচিত ছবিগুলোর ক্যাপশনে ফাইল ফটো বা পুরোনো ঘটনার ছবি শীর্ষক কোনো তথ্যও দেওয়া হয়নি। এতে করে স্বাভাবিকভাবে ছবিগুলো ভারতের সাম্প্রতিক ভারী বৃষ্টিপাতের ঘটনার বলে প্রতীয়মান হয়, যা বিভ্রান্তির জন্ম দিয়েছে। 

উল্লেখ্য, পূর্বে পাকিস্তানে ভারী বর্ষণে বন্যার ঘটনায় গণমাধ্যমে একাধিক পুরোনো ছবি ব্যবহার করা হলে সেসময় বিষয়টি নিয়ে ফ্যাক্টচেক প্রতিবেদন প্রকাশ করে রিউমর স্ক্যানার।

সুতরাং, ভারতে সাম্প্রতিক সময়ে ভারী বৃষ্টি ও বন্যার ঘটনায় বাংলাদেশের গণমাধ্যমে প্রকাশিত প্রতিবেদনে একাধিক পুরোনো ঘটনার ছবিকে সাম্প্রতিক দাবিতে প্রচার করা হয়েছে; যা বিভ্রান্তিকর।

তথ্যসূত্র

আরও পড়ুন

spot_img