‘নিজেকে জানো’ বইটি এনসিটিবির পাঠ্যপুস্তক নয়

সম্প্রতি ‘কি শিখলেন কি শেখাবেন আপনার সন্তানকে?? দেশের শিক্ষা ব্যাবস্থাকে ল্যাংটা করে দেয়া হয়েছে। তার স্পষ্ট প্রমান মাধ্যমিকের ২০২৩ নতুন পাঠ্য পুস্তক। এর নেপথ্যে শুধুই কি জাফর ইকবাল?…‘ শীর্ষক শিরোনামে একটি প্রতিবেদনের ছবি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে ছড়িয়ে পড়েছে।

Screenshot from facebook

ফেসবুকে প্রচারিত এমন কিছু পোস্ট দেখুন এখানে, এখানে, এখানে, এখানে, এখানে, এখানে ও এখানে৷ পোস্টগুলোর আর্কাইভ ভার্সন দেখুন এখানে, এখানে, এখানে, এখানে, এখানেএখানে। 

২০১৫ সালে প্রচারিত পোস্ট দেখুন এখানে (আর্কাইভ)।

২০১৬ সালে প্রচারিত পোস্ট দেখুন এখানে (আর্কাইভ)। 

২০১৭ সালে প্রচারিত পোস্ট দেখুন এখানে (আর্কাইভ)।

২০১৮ সালে প্রচারিত পোস্ট দেখুন এখানে (আর্কাইভ)।

২০১৯ সালে প্রচারিত পোস্ট দেখুন এখানে (আর্কাইভ)। 

২০২০ সালে প্রচারিত পোস্ট দেখুন এখানে (আর্কাইভ)।

২০২২ সালে প্রচারিত পোস্ট দেখুন এখানে (আর্কাইভ)।

যা দাবি করা হচ্ছে:

সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে ২০২৩ সালের নতুন পাঠ্যপুস্তক নিয়ে করা সংবাদের ছবি দাবিতে ‘দুইজনের সম্মতিতে যৌন অনুভূতি প্রকাশ দোষের নয়!’ শীর্ষক শিরোনামে সংবাদপত্রে প্রকাশিত একটি প্রতিবেদনের ছবি প্রচার করা হচ্ছে৷ 

Screenshot from facebook

প্রতিবেদনটিতে দাবি করা হচ্ছে, ‘রাজধানীর বিভিন্ন স্কুলে অষ্টম শ্রেণীর শিক্ষার্থীদের মধ্যে বিতরণকৃত ‘নিজেকে জানো’ বইয়ে লেখা হয়েছে একটি ছেলে ও একটি মেয়ের মধ্যে বন্ধুত্ব দোষের কিছু নয়। একটি ছেলে ও একটি মেয়ের মধ্যে ভালো লাগার পরের পর্যায়ে যৌন অনুভূতি এমনকি যৌন আকর্ষণও সৃষ্টি হতে পারে। এ অনুভূতির বহিঃপ্রকাশ বিভিন্নভাবে ঘটতে পারে, যেমন-চিঠি লিখে, দেখা করে, হাত ধরে বা কোনো কোনো ক্ষেত্রে আরেকটু কাছাকাছি এসে। যৌন অনুভূতি প্রকাশ করা দোষের কিছু নয়, তবে সেটি হতে হবে দুইজনের সম্মতিতে, মার্জিত ও শালীনভাবে।

নিজেকে জানো বইটিতে কিশোর-কিশোরীদের মধ্যে বিপরীত লিঙ্গের প্রতি আকর্ষণ বোধ, প্রেমের সম্পর্ক গড়ে ওঠা, পরস্পরকে ভালো লাগা বা প্রেমের অনুভূতি প্রকাশের উপায় নিয়ে আলোচনা করা হয়েছে প্রথমে। এরপর ভালো লাগা পরের পর্যায় থেকে পরস্পরের প্রতি যে যৌন আকর্ষণ সৃষ্টি হয় তা নিয়ে আলোচনা করা হয়েছে।  

বইটির শুরুর দিকে একটি অধ্যায়ের নাম ‘বাইরের পরিবেশ’। এ অধ্যায়ের একটি শিরোনাম ‘একটি ছেলে আমার সাথে প্রায়ই গল্প করতে চায়। আমার যেন কেমন ভয় লাগে। কেন এমন হয়?’ এখানে লেখা হয়েছে এ বয়সে ছেলেরা মেয়েদের সাথে গল্প করতে চাইতেই পারে। একই ভাবে মেয়েরাও ছেলেদের সাথে কথা বলতে চাইতে পারে। কথা বলা বা গল্প করার মধ্যে কোনো দোষ নেই। এতে কারো ভালো লাগে বা আবার কারো ভয়ও লাগতে পারে।’

অর্থাৎ প্রতিবেদনের দাবি অনুযায়ী, রাজধানীর বিভিন্ন স্কুলে অষ্টম শ্রেণীর শিক্ষার্থীদের মধ্যে ‘নিজেকে জানো’ নামে একটি বই বিতরণ করা হয়েছে। যেখানে ছেলে-মেয়েদের একে-অপরের প্রতি যৌন অনুভূতি প্রকাশ, কিশোর-কিশোরীদের মধ্যে বিপরীত লিঙ্গের প্রতি আকর্ষণ বোধ ইত্যাদি বিষয়গুলো নিয়ে আলোচনা করা হয়েছে। 

ফ্যাক্টচেক

রিউমর স্ক্যানার টিমের অনুসন্ধানে দেখা যায়, ২০২৩ সালের নতুন পাঠ্যপুস্তক নিয়ে করা প্রতিবেদনের ছবি দাবিতে ফেসবুকে ছড়িয়ে পড়া সংবাদপত্রের প্রতিবেদনটি সাম্প্রতিক সময়ের নয় বরং প্রতিবেদনটি ২০১৪ সালে মূলধারার গণমাধ্যম নয়াদিগন্ত কর্তৃক প্রকাশিত হয়েছিল। এছাড়া জাতীয় শিক্ষাক্রম ও পাঠ্যপুস্তক বোর্ড (এনসিটিবি) এর তালিকায় ‘নিজেকে জানো’ নামে কোনো বইয়ের নাম খুঁজে পাওয়া যায়নি।

ফেসবুকে ছড়িয়ে পড়া উক্ত প্রতিবেদনটির শিরোনাম সূত্রে কি-ওয়ার্ড অনুসন্ধানের মাধ্যমে নয়াদিগন্ত পত্রিকার ভ্যারিফাইড ফেসবুকে পেইজে ২০১৪ সালের ২৫ জুলাই ‘পাঠ্যবইয়ে কী শিখছে শিশুরা (আর্কাইভ)’ শীর্ষক শিরোনামে প্রকাশিত একটি পোস্ট খুঁজে পাওয়া যায়।

Screenshot from Naya Diganta facebook page

এই পোস্টটিতে সংযুক্ত প্রতিবেদনের লিংকে প্রবেশ করতে গিয়ে দেখা যায়, প্রতিবেদনটি নয়াদিগন্তের ওয়েবসাইট থেকে সরিয়ে ফেলা হয়েছে। তবে অনুসন্ধানে প্রতিবেদনটির আর্কাইভ ভার্সন খুঁজে পাওয়া যায়। প্রতিবেদনটির আর্কাইভ পড়ুন এখানে

Screenshot from Naya Diganta archive

নিজেকে জানো বইটি নিয়ে যা জানা যাচ্ছে

কি-ওয়ার্ড অনুসন্ধানের মাধ্যমে এশিয়া ও বাংলাদেশে সামাজিক উন্নয়ন খাতে কাজ করা প্রতিষ্ঠান Bangladesh Center for Communication Programmes এর ওয়েবসাইটে ‘নিজেকে জানো’ শিরোনামে চারটি আলাদা আলাদা বই খুঁজে পাওয়া যায়। 

বই চারটি হলো যথাক্রমে বয়ঃসন্ধিকাল, কিশোর-কিশোরীদের জন্য (১০-১৪ বছর বয়সী), নতুন বোধ নতুন অনুভূতি কিশোর-কিশোরীদের জন্য (১০-১৪ বছর বয়সী), যৌনরোগ ও এইচআইভি-এইডস কিশোর-কিশোরীদের জন্য ( ১৫-১৯ বছর বয়সী), বিয়ে এবং পারিবারিক স্বাস্থ্য কিশোর-কিশোরীদের জন্য ( ১৫-১৯ বছর বয়সী)

Screenshot from BCCP

এই বইগুলো যাচাই করে দেখা যায়, এগুলো মূলত কিশোর-কিশোরীদের প্রজনন স্বাস্থ্য সম্পর্কে তৈরি একাধিক সিরিজের সমন্বয়ে বুকলেট বা পুস্তিকা। 

আইসিডিডিআরবি’র ফ্যামিলি হেলথ্ রিসার্চ প্রজেক্ট কর্তৃক সংগৃহীত তথ্যের ভিত্তিতে রচিত কিশোর-কিশোরীদের প্রজনন স্বাস্থ্য সম্পর্কিত এই বইগুলোর প্রথম ও দ্বিতীয় সংস্করণ যথাক্রমে ২০০২ ও ২০০৫ সালে তৈরি ও প্রকাশিত হয়।

Screenshot from BCCP

পরবর্তীতে ২০১০ সালে আইসিডিডিআরবি’র ট্র্যাকশন (TRAction) প্রজেক্ট কর্তৃক প্রস্তুতকৃত ডাটা ব্যাংক প্রশ্নসম্ভার থেকে তথ্য নিয়ে বইগুলোর তৃতীয় সংস্করণ প্রকাশিত হয়।  ইউএসএআইডি’র আর্থিক সহায়তায় এ আর এইচ ওয়ার্কিং গ্রুপের বিভিন্ন সংস্থার সার্বিক তত্ত্বাবধান ও সহযোগিতায় বাংলাদেশ সেন্টার ফর
কমিউনিকেশন প্রোগ্রামস বইটি প্রণয়ন করেছে।

রিউমর স্ক্যানারের অনুসন্ধানে এই তৃতীয় সংস্করণটির পরে বইটির আর কোনো সংস্করণ খুঁজে পাওয়া যায়নি। 

আইসিডিডিআর,বি কি? প্রতিষ্ঠানটির কাজ কি?

আইসিডিডিআর,বি (ইন্টারন্যাশনাল সেন্টার ফর ডাইরিয়াল ডিজিজ রিসার্চ, বাংলাদেশ) আন্তর্জাতিক চিকিৎসা সংক্রান্ত গবেষণা প্রতিষ্ঠান। যেটি উদরাময় রোগ, পুষ্টি এবং স্বাস্থ্য সম্পর্কিত আনুষঙ্গিক অন্যান্য বিষয়ে গবেষণা পরিচালনা করে থাকে।

ইউএসএআইডি (USAlD) কি? সংস্থাটির কাজ কি?

ইউএসএআইডি (ইউনাইটেড স্টেটস এজেন্সি ইন্টারন্যাশনাল ডেভেলপমেন্ট) মার্কিন সরকারের অধীনে পরিচালিত একটি বৈদেশিক সাহায্য সংস্থা। যেটি বিশ্বব্যাপী দারিদ্র্য দূরীকরণ, শিক্ষা, নারীর ক্ষমতায়ন, স্বাস্থ্য ও অন্যান্য বিষয় নিয়ে কাজ করে থাকে।

‘নিজেকে জানো’ বইটির সম্পর্কে নয়াদিগন্তের প্রতিবেদনটিতে যা ছিল:

অনুসন্ধানে দেখা যাচ্ছে, বাংলাদেশ সেন্টার ফর কমিউনিকেশন প্রোগ্রামসের প্রণয়নকৃত ‘নিজেকে জানো’ পুস্তিকাটি একটি সিরিজ বই। এই সিরিজের অধীনে ভিন্ন ভিন্ন নামের চারটি পুস্তিকা রয়েছে। 

তবে নয়া দিগন্তের প্রতিবেদনটিতে এই চারটি পুস্তিকাকে একটি বই হিসেবে ধরে প্রতিবেদনটি করা হয়েছিল। যেমন, প্রতিবেদনটিতে উল্লেখ করা হয়েছিল, ‘নিজেকে জানো’ বইটির শুরুর দিকে একটি অধ্যায়ের নাম ‘বাইরের পরিবেশ’। এ অধ্যায়ের একটি শিরোনাম ‘একটি ছেলে আমার সাথে প্রায়ই গল্প করতে চায়। আমার যেন কেমন ভয় লাগে। কেন এমন হয়?’

Screenshot from Naya Diganta 

কিন্তু অনুসন্ধানে দেখা যায়, এটি ‘নিজেকে জানো’ সিরিজের অধীনে প্রকাশিত দ্বিতীয় পুস্তিকা ‘নতুন বোধ নতুন অনুভূতি কিশোর-কিশোরীদের জন্য’ (১০-১৪ বছর বয়সী) এর অন্তর্ভুক্ত। 

Screenshot from BCCP

এছাড়া পুরো প্রতিবেদনটিই বিশ্লেষণ করে দেখা যায়, প্রতিবেদনটি কেবল এই পুস্তিকাটি ঘিরেই তৈরি করা হয়েছে এবং ‘নিজেকে জানো’ সিরিজের অন্যান্য পুস্তিকাগুলো নিয়ে কোনো তথ্যই উল্লেখ ছিল না। 

এছাড়া রাজধানীর কোন কোন স্কুলে বিতরণ করা হয়েছে, কারা বিতরণ করেছে, বইটির প্রকাশক কারা এমন কোনো তথ্য প্রতিবেদনটি থেকে জানা যায়নি।

‘নিজেকে জানো’ বইটি কি পাঠ্যক্রমে আছে?

জাতীয় শিক্ষাক্রম ও পাঠ্যপুস্তক বোর্ড (এনসিটিবি) এর ওয়েবসাইটে ২০১৭, ২০১৮, ২০১৯, ২০২০, ২০২১, ২০২২২০২৩ সালের বিভিন্ন শ্রেণির পাঠ্যপুস্তক সম্পর্কে অনুসন্ধান করেও ‘নিজেকে জানো’ নামে কোনো বই এনসিটিবির পাঠ্যক্রমে খুঁজে পাওয়া যায়নি। 

অধিকতর অনুসন্ধানে ২০১৭ সালের আগেও জাতীয় শিক্ষাক্রম ও পাঠ্যপুস্তকে এ নামের কোনো বই অন্তর্ভুক্তির বিষয়ে কোনো তথ্য খুঁজে পাওয়া যায় না। 

পাশাপাশি ২০১৪ সালের অষ্টম শ্রেণির বইয়েও এ নামের কোনো বইয়ের অস্তিত্ব খুঁজে পাওয়া যায়নি।

Book list of Class 8 for 2014

বরং ২০১৪ সালের ৫ আগস্ট মূলধারার অনলাইন পোর্টাল Banglanews24 এ কথাসাহিত্যিক এবং অস্ট্রেলিয়ার ইউনিভার্সিটি অফ নিউক্যাসলের তৎকালীন পিএইচডি গবেষক শাখাওয়াৎ নয়নের ‘‘নিজেকে জানো’- একটি যুগান্তকারী পদক্ষেপ‘ শীর্ষক শিরোনামে প্রকাশিত একটি মতামত কলাম খুঁজে পাওয়া যায়।

Screenshot from Banglanews24

প্রতিবেদনটি থেকে জানা যায়, মহিলা ও শিশুবিষয়ক মন্ত্রণালয়ের উদ্যোগে ‘নিজেকে জানো’ নামের পুস্তকটি নির্ধারিত ছাত্র-ছাত্রীদের জন্য বিতরণ করা হয়েছে। এর বাইরে বইটি সম্পর্কে আর কোনো তথ্য খুঁজে পাওয়া যায়নি।

পরবর্তীতে পুস্তিকাটি নিয়ে আরও জানতে এর প্রণয়নকারী সংস্থা বাংলাদেশ সেন্টার ফর কমিউনিকেশন প্রোগ্রামসের সঙ্গে যোগাযোগ করে রিউমর স্ক্যানার টিম।

বইটি নিয়ে প্রতিষ্ঠানটির মুখপাত্র জামাল হাসান রিউমর স্ক্যানারকে জানান, এটি বেসরকারি উন্নয়ন সংস্থার মাধ্যমে বিতরণ করা হয়েছিল। বর্তমানে এটি আর পড়ানো হয় না। 

অপরদিকে অনুসন্ধানে ঢাকার বিভিন্ন স্কুলে বইটি বিতরণ করার ব্যাপারে জানা গেলেও ঢাকার বাইরের স্কুলে বইটি পড়ানো হয় কি না এবং কখনো বিতরণ করা হয়েছিল কিনা এ বিষয়ে জানতে টাঙ্গাইলের মির্জাপুরের ভারতেশ্বরী হোমস স্কুলের সিনিয়র শিক্ষক আনোয়ারা খন্দকারের সঙ্গেও রিউমর স্ক্যানার টিম যোগাযোগ করে। 

তিনি রিউমর স্ক্যানারকে জানান, এই নামের কোনো বই তার স্কুলে পড়ানো হয় না এবং আগেও কখনো পড়ানো হয়নি।

এছাড়া অনুসন্ধানে ব্লগিং ওয়েবসাইট সামহোয়্যারইন ব্লগে ২০১৪ সালের ২৬ জুলাই ওয়েলকামজুয়েল নামে একজন ব্লগারের একটি ব্লগ খুঁজে পাওয়া যায়।

ব্লগটি থেকে জানা যায়, বাংলাদেশ সেন্টার ফর কমিউনিকেশন প্রোগ্রামস (বিসিসিপি) ‘নিজেকে জানো’ বইটি প্রণয়ন করে এবং পরবর্তীতে বিভিন্ন এনজিও সংস্থা তাদের কাছ থেকে এ বই নিয়ে বিভিন্নভাবে বিতরণ করা হয়েছিল। এরই ধারাবাহিকতায় রাজধানীর কিছু স্কুলেও বিতরণ করা হয়েছিল সে সময়।

মূলত, মার্কিন সাহায্য সংস্থা ইউএসএআইডি’র আর্থিক সহায়তায় এআরএইচ ওয়ার্কিং গ্রুপের সংস্থাসমূহের সার্বিক তত্ত্বাবধান ও সহযোগিতায় বাংলাদেশ সেন্টার ফর কমিউনিকেশন প্রোগ্রামস ‘নিজেকে জানো’ নামে কিশোর-কিশোরীদের প্রজনন স্বাস্থ্য বিষয়ক চারটি পুস্তিকা সম্বলিত একটি সিরিজ বই প্রণয়ন করে। যা  ২০১৪ সালে মহিলা ও শিশুবিষয়ক মন্ত্রণালয়ের উদ্যোগে বিভিন্ন বেসরকারি উন্নয়ন সংস্থার মাধ্যমে ঢাকার বেশকিছু শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে বিতরণ করা হয়েছিল। এই সিরিজের একটি বই নিয়ে ২০১৪ সালের ২৫ জুলাই নয়াদিগন্ত ‘দুইজনের সম্মতিতে যৌন অনুভূতি প্রকাশ দোষের নয়!’ শীর্ষক শিরোনামে একটি প্রতিবেদন প্রকাশ করে। পরবর্তীতে পত্রিকাটি তাদের অনলাইন সংস্করণ থেকে প্রতিবেদনটি সরিয়ে নিলেও এর প্রিন্ট সংস্করণটি ফেসবুকে থেকে যায় এবং ২০১৪ সালের পর থেকে প্রতি বছরই বইটিকে এনসিটিবির পাঠ্যপুস্তক দাবিতে ফেসবুকে প্রচার হয়ে আসছে। কিন্তু রিউমর স্ক্যানারের অনুসন্ধানে দেখা যায়, এই নামে কোনো পাঠ্যপুস্তক জাতীয় শিক্ষাক্রম ও পাঠ্যপুস্তক বোর্ড (এনসিটিবি) থেকে দেওয়া হয়নি এবং ২০২৩ সালের নতুন পাঠ্যপুস্তকেও এই নামে কোনো বই নেই।

উল্লেখ্য, ২০২৩ সালে ষষ্ঠ শ্রেণিতে প্রথমবারের মতো যুক্ত হওয়া বিজ্ঞান অনুসন্ধানী পাঠ বইয়ের ১১তম অধ্যায়ের ‘মানব শরীর’ অধ্যায়ে কিশোর-কিশোরীর বয়ঃসন্ধিকালের শারিরীক পরিবর্তনের বিষয়টির উল্লেখ নিয়েও ফেসবুক ও গণমাধ্যমে ব্যাপক আলোচনা সমালোচনা হচ্ছে। 

সুতরাং, ২০২৩ সালের নতুন পাঠ্যপুস্তক নিয়ে করা গণমাধ্যমের প্রতিবেদনের ছবি দাবিতে প্রচারিত তথ্যটি মিথ্যা। 

তথ্যসূত্র

আরও পড়ুন

spot_img