সম্প্রতি জাতীয় দৈনিক প্রথম আলোর সংবাদপত্রের প্রিন্ট সংস্করণের সাইটের আদলে একটি সংবাদ প্রতিবেদনের ছবি প্রচার করে “বিদেশে অবস্থানরত অনলাইন এক্টিভিস্টদের চাঁদাবাজি: ভুক্তভোগীদের আর্তনাদ।” শিরোনামে দাবি করা হচ্ছে, “বিদেশে বসবাসরত একদল অনলাইন এক্টিভিস্টস্ট, নিজেদের স্বাধীন মতামত প্রদানকারী বলে দাবি করলেও, বিভিন্ন ব্যক্তি ও প্রতিষ্ঠানকে চাঁদাবাজির শিকার করছে বলে অভিযোগ উঠেছে। […] অভিযুক্তদের মধ্যে আছেন পিনাকী ভট্টাচার্য, ইলিয়াস হোসেন, জুলকারনাইন সায়ের, নাজমুস সাকিব, সাহেদ আলম, এবং কলক সারোয়ার। এছাড়াও বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সমন্বয়ক সার্ভিস আলম, হাসনাত আবদুল্লাহ ও কিছু ইসলামি জঙ্গি গোষ্ঠীর সদস্য তাদের সহযোগী হিসেবে কাজ করছে বলেও অভিযোগ উঠেছে।” প্রচারিত দাবিটিতে সংশ্লিষ্ট এক্টিভিস্টদের ছবিও সংযুক্ত করা হয়েছে।
উক্ত দাবিতে ফেসবুকে প্রচারিত পোস্ট দেখুন এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ) এবং এখানে (আর্কাইভ)।
উক্ত দাবিতে এক্সে (সাবেক টুইটার) প্রকাশিত পোস্ট দেখুন এখানে (আর্কাইভ) এবং এখানে (আর্কাইভ)।
ফ্যাক্টচেক
রিউমর স্ক্যানার টিমের অনুসন্ধানে জানা যায়, “বিদেশে অবস্থানরত অনলাইন এক্টিভিস্টদের চাঁদাবাজি: ভুক্তভোগীদের আর্তনাদ।” শীর্ষক দাবিতে কোনো সংবাদ প্রথম আলো প্রকাশ করেনি বরং, ডিজিটাল প্রযুক্তির সহায়তায় প্রথম আলোর লোগো যুক্ত করে বানোয়াট সংবাদ প্রচার করা হয়েছে।
প্রথম আলোর লোগো সম্বলিত প্রচারিত পোস্টটি পর্যবেক্ষণ করলে দেখা যায়, কথিত এই সংবাদ প্রকাশের তারিখ হিসেবে ২৫ অক্টোবর ২০২৪ উল্লেখ করা হয়েছে। উক্ত তারিখে প্রথম আলোর ওয়েবসাইটে প্রকাশিত সংবাদ এবং ইলেকট্রনিক সংস্করণ (ই-পেপার) পর্যবেক্ষণ করলে উক্ত দাবিতে কোনো সংবাদ প্রকাশের প্রমাণ মেলেনি। এমনকি ইন্টারনেট আর্কাইভ পর্যবেক্ষণ করেও পত্রিকাটিতে উক্ত দাবিতে কোনো সংবাদ প্রকাশের প্রমাণ মেলেনি।
তাছাড়া, প্রথম আলোতে প্রকাশিত সংবাদের ফরম্যাটের সাথেও আলোচিত দাবিতে প্রচারিত সংবাদটির বৈসাদৃশ্য বা অসঙ্গতি দেখা যায়। যেমন: প্রথম আলোর প্রকাশিত সংবাদের শিরোনামে সাধারণত দাড়ি ব্যবহার করা হয় না। তবে প্রচারিত দাবিতে দাড়ি ব্যবহার করা হয়েছে। তাছাড়া, শিরোনামের ক্ষেত্রেও সাধারণত স্পষ্ট বোল্ড ফরম্যাট ব্যবহার করা হলেও এক্ষেত্রে অনুরূপভাবে হয়নি। এছাড়াও, লোগো এবং তারিখের ক্ষেত্রেও অসঙ্গতি বা বৈসাদৃশ্য লক্ষ্য করা যায়।
Comparison : Rumor Scanner
এ বিষয়ে জানতে প্রথম আলোর অনলাইন হেড শওকত হোসাইন মাসুমের সাথে যোগাযোগ করলে তিনি রিউমর স্ক্যানারকে জানান, এমন কোনো সংবাদ প্রথম আলো প্রকাশ করেনি। এটি ভুয়া।
এ বিষয়ে প্রাসঙ্গিক কি-ওয়ার্ড সার্চ করে অন্য কোনো নির্ভরযোগ্য সূত্রেও দাবিটির পক্ষে তথ্যপ্রমাণ পাওয়া যায়নি।
সুতরাং, “বিদেশে অবস্থানরত অনলাইন এক্টিভিস্টদের চাঁদাবাজি: ভুক্তভোগীদের আর্তনাদ।” শিরোনামে প্রথম আলো সংবাদ প্রকাশ করেছে শীর্ষক দাবিটি মিথ্যা।
তথ্যসূত্র
- Prothom Alo – E-Paper
- Statement of Showkat Hossain Masum, Online Head, Prothom Alo