সম্প্রতি “খড় দিয়ে তৈরি মসজিদ মাশাআল্লাহ” শীর্ষক শিরোনামে একটি ছবি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে ছড়িয়ে পড়েছে এবং ২০২১ সালেও একই শিরোনামে ছবিটি ফেসবুকে ছড়িয়ে পড়েছিল।

ফেসবুকে ছড়িয়ে পড়া এমন কিছু পোস্ট দেখুন এখানে, এখানে, এখানে, এখানে, এখানে, এখানে এবং এখানে। পোস্টগুলোর আর্কাইভ ভার্সন দেখুন এখানে, এখানে, এখানে, এখানে, এখানে, এখানে এবং এখানে।
ফ্যাক্টচেক
রিউমর স্ক্যানার টিমের অনুসন্ধানে দেখা যায়, আলোচিত ছবিতে স্থাপনাটি কোনো মসজিদ নয় বরং এটি রুয়ান্ডার দক্ষিণ প্রদেশের নানজা জেলায় অবস্থিত একটি রাজপ্রাসাদ।
রিভার্স ইমেজ সার্চের মাধ্যমে, স্টক ফোটো শেয়ারিং ওয়েবসাইট alamy এ The king’s hut at the King’s Palace, Nyanza, Rwanda শীর্ষক শিরোনামে একটি ছবি খুঁজে পাওয়া যায়। এই ছবির স্থাপনাটির সাথে ফেসবুকে ছড়িয়ে পড়া স্থাপনাটির মিল খুঁজে পাওয়া যায়। ছবিটির বিস্তারিত অংশ থেকে জানা যায়, এটি রুয়ান্ডার নানজা জেলায় অবস্থিত একটি রাজপ্রাসাদের ছবি। প্রাসাদের প্রবেশ পথ, প্রবেশ পথের মেঝে, এবং প্রাসাদের পাশের বেষ্টনীর সাথে ফেসবুকে ছড়িয়ে পড়া ছবিটির হুবহু মিল রয়েছে।

পরবর্তীতে, কী-ওয়ার্ড অনুসন্ধানের মাধ্যমে, রুয়ান্ডার একটি গণমাধ্যম KT Press এর ওয়েবসাইটে ২০১৯ সালের ২৮ নভেম্বর “From King’s Palace, Rwanda Museums’ Institute Brings The Best Of Nyanza” শীর্ষক শিরোনামে প্রকাশিত একটি প্রতিবেদন খুঁজে পাওয়া যায়। এই প্রতিবেদনের একটি ছবির স্থাপনার সাথেও ফেসবুকে ছড়িয়ে পড়া ছবির স্থাপনার মিল খুঁজে পাওয়া যায়।

প্রতিবেদনটি থেকে আরও যানা যায় যে, প্রাচীন রুয়ান্ডা রাজ্যের রাজধানি ছিল নানজা এবং এই কুড়েঘরটি ছিল রাজপ্রাসাদ। এটি রুয়ান্ডার শেষ রাজাদের বাড়ি হিসেবে পরিচিত। রাজা মুসিঙ্গা ছিলেন এই রাজপ্রাসাদে বসবাসকারি শেষ রাজা।
লোকশ্রুতি অনুসারে, নানজা ছিল যুদ্ধ এবং ক্ষমতার লড়াইয়ের স্থান। দীর্ঘদিন ধরে, এখানে রাজতন্ত্র চলমান ছিল। তখন রাজ্যের রাজধানির একটি নির্দিষ্ট স্থান হিসেবে নানজাকে বেঁছে নেয়া হয়। এই রাজধানীতে প্রায় ২০০০ জন বাসিন্দা ছিল এবং সেখানে একই পদ্ধতিতে কুঁড়েঘর তৈরি করা হয়েছিল।
মূলত, রুয়ান্ডার নানজা জেলায় অবস্থিত কুড়েঘরের মত একটি রাজপ্রাসাদের ছবিকে খড়ের তৈরি মসজিদ দাবিতে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে প্রচার করা হচ্ছে।
উল্লেখ্য, ১৯৬২ সালে রুয়ান্ডা ঔপনিবেশিক শাসন থেকে স্বাধীনতা লাভ করার পরে রুয়ান্ডায় রাজতন্ত্রের অবসান হয়।
সুতরাং, খড় দিয়ে তৈরি মসজিদ দাবিতে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে প্রচারিত ছবিটি মিথ্যা।
তথ্যসূত্র
alamy- The king’s hut at the King’s Palace, Nyanza, Rwanda
KT Pres: From King’s Palace, Rwanda Museums’ Institute Brings The Best Of Nyanza
The New Times: Travel: The King’s Royal Palace in Nyanza
VISIT RWANDA: https://www.visitrwanda.com/interests/kings-palace/