সম্প্রতি, “রাজবাড়ীতে বিলুপ্ত ও বিরল প্রজাতির একটি ঘড়িয়াল উদ্ধার করা হয়েছে। ঘড়িয়ালটির দৈর্ঘ্য পাঁচ ফুট এবং ওজন প্রায় ২৫ কেজি” শীর্ষক শিরোনামে একটি তথ্য সম্বলিত ছবি দেশীয় মূলধারার একাধিক সংবাদমাধ্যমে প্রচার করা হয়েছে।
কালের কণ্ঠের ওয়েবসাইটে প্রকাশিত প্রতিবেদনটি দেখুন এখানে। আর্কাইভ ভার্সন দেখুন এখানে।
দৈনিক প্রতিদিনের বাংলাদেশের ওয়েবসাইটে প্রকাশিত প্রতিবেদনটি দেখুন এখানে। আর্কাইভ ভার্সন দেখুন এখানে।

কালের কণ্ঠের ফেসবুক পেজে প্রচারিত পোস্টটি দেখুন এখানে। আর্কাইভ ভার্সন দেখুন এখানে।
ফ্যাক্টচেক
রিউমর স্ক্যানার টিমের অনুসন্ধানে দেখা যায়, বিরল প্রজাতির ঘড়িয়াল দাবিতে দেশীয় মূলধারার সংবাদমাধ্যমে প্রচারিত ছবিটি আসলে ঘড়িয়ালের নয় বরং এটি একটি গুইসাপের ছবি।
উক্ত দাবিটির সত্যতা যাচাইয়ে ওপেন সোর্স অনুসন্ধানে বণ্যপ্রাণী, সাপের কামড় নিয়ে সচেতনতা ও পরিবেশ সংরক্ষণ নিয়ে কাজ করা প্রতিষ্ঠান ‘Deep Ecology And Snake Conservation Foundation’ এর ফেসবুক গ্রুপে গত ৩০ জুলাই এ বিষয়ে একটি পোস্ট খুঁজে পাওয়া যায়।

ফেসবুক পোস্টটিতে সাহাদাত হোসেন জানান,
“‘রাজবাড়ীতে বিলুপ্ত ও বিরল প্রজাতির একটি ঘড়িয়াল উদ্ধার করা হয়েছে’ – বলে কালের কণ্ঠ অনলাইন নিউজ পোর্টালে সংবাদ প্রচারিত হয়েছে যা সম্পূর্ণ ভুল।
প্রানীটি ঘড়িয়াল বলে দাবী করা হলেও এটি একটি গুইসাপ (Bengal monitor lizard)। অর্থাৎ ঘড়িয়াল দাবীটি সম্পূর্ণ অযৌক্তিক এবং এটি একটি মিথ্যা সংবাদ।”
পরবর্তীতে, ঘড়িয়াল এবং গুইসাপের মধ্যে পার্থক্য খুঁজে দেখার চেষ্টা করে রিউমর স্ক্যানার।

বিশ্লেষণে দেখা যায়, ঘড়িয়াল (Gavialis gangeticus) আকৃতিতে গুইসাপের চেয়ে সরু ও লম্বা প্রজাতির হয়ে থাকে। লম্বা মুখ যুক্ত পুরুষ ঘড়িয়ালের দৈর্ঘ্য স্বাভাবিকভাবে ৬.৫ মি. এবং স্ত্রী ঘড়িয়ালের দৈর্ঘ্য ৪.৫ মি. হয়ে থাকে।
অপরদিকে, গুইসাপ (Varanus bengalensis) ঘড়িয়ালের চেয়ে আকৃতিতে সামান্য ছোট হয়ে থাকে। লম্বা লেজ বিশিষ্ট একেকটি গুইসাপ স্বাভাবিকভাবে ৩ মিটারের কাছাকাছি হয়ে থাকে।
মূলত, গত ৩০ জুলাই দেশীয় একাধিক মূলধারার সংবাদমাধ্যমে “খাবারের খোঁজে বাড়িতে ঢুকল ৫ ফুটের বিরল প্রজাতির ঘড়িয়াল” শীর্ষক শিরোনামে একটি সংবাদ প্রচার করা হয়। তবে রিউমর স্ক্যানারের অনুসন্ধানে দেখা যায়, প্রতিবেদন গুলোতে ব্যবহৃত ছবিটি কোনো ঘড়িয়ালের ছবি ছিলো না। প্রকৃতপক্ষে এটি একটি গুইসাপের ছবি।
সুতরাং, দেশীয় মূলধারার সংবাদমাধ্যমগুলোতে প্রকাশিত উক্ত প্রতিবেদন গুলোতে বিরল প্রজাতির ঘড়িয়াল দাবিতে একটি গুইসাপের ছবি ব্যবহৃত হয়েছে; যা সম্পূর্ণ বিভ্রান্তিকর।
তথ্যসূত্র
- Facebook Post: Shahadut Hossain Shohan
- Conversation with Shahadut Hossain Shohan
- Rumor Scanner’s own analysis