মাদারীপুরে আওয়ামী লীগের ১৯ নেতাকর্মীর বাড়িতে অগ্নিসংযোগের গুজব

সম্প্রতি, মাদারীপুরে আওয়ামী লীগের ১৯ নেতাকর্মীর বাড়িতে পরিকল্পিতভাবে অগ্নিসংযোগ করা হয়েছে দাবিতে একটি ভিডিও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়েছে। এ ঘটনার জন্য বিএনপি, জামায়াত-শিবির, বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন ও হিযবুত তাহরীকে দায়ী করে বিভিন্ন পোস্ট ছড়ানো হচ্ছে।

মাদারীপুরে

উক্ত দাবিতে ফেসবুকে প্রচারিত পোস্ট দেখুন এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ) এবং এখানে (আর্কাইভ)।

একই দাবিতে এক্সে প্রচারিত পোস্ট দেখুন এখানে (আর্কাইভ) এবং এখানে (আর্কাইভ)।

ফ্যাক্টচেক

রিউমর স্ক্যানার টিমের অনুসন্ধানে জানা যায়, মাদারীপুরে আওয়ামী লীগের ১৯ নেতাকর্মীর বাড়িতে অগ্নিসংযোগের আলোচিত দাবিটি সত্য নয়। প্রকৃতপক্ষে, শরীয়তপুরের ডোমসার ইউনিয়নে ঘটে যাওয়া একটি দুর্ঘটনাজনিত অগ্নিকাণ্ডের ভিডিও আলোচিত দাবিতে প্রচার করা হচ্ছে।

এ বিষয়ে অনুসন্ধানে ‘Robiul Islam NaVan’ নামের একটি ফেসবুক অ্যাকাউন্টে গতকাল (১৫ ফেব্রুয়ারি) প্রকাশিত একটি পোস্টে একই ভিডিও খুঁজে পাওয়া যায়। উক্ত পোস্টের ক্যাপশন অনুযায়ী, ভিডিওটি শরীয়তপুরের বেপারী কান্দি গ্রামে রান্নাঘর থেকে সৃষ্ট অগ্নিকাণ্ডের ঘটনার। 

Comparison: Rumor Scanner.

এই পোস্টের সূত্র ধরে ‘শরীয়তপুর টাইমস’ নামের স্থানীয় এক গণমাধ্যমের ফেসবুক পেজে একই ঘটনার ভিন্ন একটি ভিডিও পাওয়া যায়।

এছাড়া, মূলধারার গণমাধ্যম জাগোনিউজ২৪-এর ওয়েবসাইটে ১৫ ফেব্রুয়ারি প্রকাশিত একটি প্রতিবেদনে বলা হয়, ১৪ ফেব্রুয়ারি দুপুরে শরীয়তপুর সদর উপজেলার ডোমসার ইউনিয়নের কোয়ারপুর দপ্তরিকান্দি এলাকায় ভয়াবহ অগ্নিকাণ্ডে ১০টি বসতঘরসহ ১৭টি ঘর সম্পূর্ণ পুড়ে গেছে। স্থানীয়দের দীর্ঘ প্রচেষ্টায় আগুন নিয়ন্ত্রণে আনা সম্ভব হলেও কিছুই রক্ষা করা যায়নি। প্রাথমিক তদন্তে বৈদ্যুতিক শর্টসার্কিটকে অগ্নিকাণ্ডের কারণ হিসেবে চিহ্নিত করা হয়েছে।

এ বিষয়ে শরীয়তপুর সদর উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) নাফিস এলাহী রিউমর স্ক্যানারকে জানান, ঘটনার সময় ক্ষতিগ্রস্ত পরিবারের সদস্যরা বাড়িতে উপস্থিত ছিলেন না। কেউ পরিকল্পিত হামলার অভিযোগ করেননি, এবং বৈদ্যুতিক ত্রুটি থেকেই আগুনের সূত্রপাত হয়েছে বলে প্রাথমিকভাবে ধারণা করা হচ্ছে।

এছাড়া ডোমসার ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মো. মজিবুর রহমান খান জানান, সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়া তথ্যটি গুজব। তিনি এ ধরনের কোনো অভিযোগ পাননি।

ক্ষতিগ্রস্ত পরিবারের এক সদস্য মো. শাহিন জানান, ঘটনার সময় আমরা বাড়িতে ছিলাম না। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে যা ছড়ানো হচ্ছে, তা সত্য নয়।

তাছাড়া, বিশ্বস্ত কোনো সূত্রে সাম্প্রতিক সময়ে মাদারীপুরে এ ধরনের অগ্নিসংযোগের কোনো তথ্য মেলেনি।

অর্থাৎ, প্রচারিত ভিডিওটি মাদারীপুরের নয়, বরং শরীয়তপুরের একটি দুর্ঘটনাজনিত অগ্নিকাণ্ডের দৃশ্য।

সুতরাং, মাদারীপুরে আওয়ামী লীগের ১৯ নেতাকর্মীর বাড়িতে পরিকল্পিতভাবে অগ্নিসংযোগ করা হয়েছে দাবিতে প্রচারিত বিষয়টি সম্পূর্ণ মিথ্যা।

তথ্যসূত্র

আরও পড়ুন

spot_img