ভারতে নির্যাতনের ভিডিওকে বাংলাদেশের সাম্প্রতিক ঘটনা দাবিতে প্রচার 

সম্প্রতি, ‘ Dr. Yunus seized power, Bangladesh became a terrifying state. He and his gang of goons are torturing the people.’ শীর্ষক ক্যাপশনে একটি ভিডিও কিছু ভারতীয় এক্স (সাবেক টুইটার) অ্যাকাউন্ট থেকে প্রচার করা হয়েছে।

অর্থাৎ, দাবি করা হয়েছে, অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস ক্ষমতা কুক্ষিগত করে বাংলাদেশে ত্রাসের রাজ্য কায়েম করেছে এবং তার গুন্ডা বাহিনী মানুষের ওপর অত্যাচার করছে।

উক্ত দাবিতে এক্স অ্যাকাউন্টের পোস্ট দেখুন এখানে (আর্কাইভ) এবং এখানে (আর্কাইভ)৷

ফ্যাক্টচেক

রিউমর স্ক্যানার টিমের অনুসন্ধানে জানা যায়, প্রচারিত নির্যাতনের ভিডিওটি বাংলাদেশের নয় বরং, এটি ভারতের পশ্চিমবঙ্গের পুরোনো একটি ঘটনার ভিডিও।

এ বিষয়ে অনুসন্ধানে রিভার্স ইমেজ সার্চের মাধ্যমে BJP West Bengal নামের এক্স অ্যাকাউন্টে ২০২৪ সালের ০৯ জুলাইয়ের একটি পোস্টে আলোচিত ভিডিওটির অনুরূপ একটি ভিডিও খুঁজে পাওয়া যায়৷ 

পোস্টটির ক্যাপশন থেকে জানা যায়, ভিডিওটি কামারহাটির তালতলা ক্লাবে তৃণমূল কংগ্রেস থেকে বিধানসভার সদস্য মদন মিত্রের ঘনিষ্ট জয়ন্ত সিং কর্তৃক একজন নারীকে নির্যাতনের সময়ের৷ উল্লেখ্য, কামারহাটি ভারতের পশ্চিমবঙ্গ রাজ্যের উত্তর ২৪ পরগণা জেলার একটি শহর৷ 

পরবর্তীতে প্রাসঙ্গিক কি ওয়ার্ড সার্চের মাধ্যমে ভারতীয় গণমাধ্যম জি নিউজের অনলাইন সংস্করণে ‘2 Arrested After Gruesome Video Of TMC MLA’s ‘Aide’ Beating Woman In Bengal Goes Viral’ শীর্ষক শিরোনামে ২০২৪ সালের ০৯ জুলাই প্রকাশিত একটি প্রতিবেদন খুঁজে পাওয়া যায়৷ উক্ত প্রতিবেদনে ব্যবহৃত ছবিগুলোর সাথে আলোচিত দাবিতে প্রচারিত ভিডিওটির মিল রয়েছে৷ 

Comparison: Rumor Scanner 

প্রতিবেদনটি থেকে জানা যায়, পশ্চিমবঙ্গের উত্তর চব্বিশ পরগনা জেলায় একদল লোক একটি মেয়েকে লাঞ্ছিত করছে এমন একটি ভিডিও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ভাইরাল হয়েছে। ব্যারাকপুর পুলিশ তৎক্ষনাৎ পদক্ষেপ নিয়ে ভিডিও ফুটেজটি থেকে চিহ্নিত দুইজন সন্দেহভাজন ব্যক্তিকে গ্রেপ্তার করে। প্রচারিত ভিডিওটি প্রায় দুই বছর আগের বলে ধারণা করা হচ্ছে।

আরেক ভারতীয় গণমাধ্যম News 18 এ ‘Political Row Over Another Flogging Video From Bengal; Case Filed Against TMC Leader’s Close Aide’ শীর্ষক শিরোনামে ২০২৪ সালের ০৯ জুলাই প্রকাশিত একটি প্রতিবেদনে ব্যবহৃত ছবিটির সাথে আলোচিত ভিডিওটির মিল পরিলক্ষিত হয়েছে৷ এছাড়া, প্রতিবেদন থেকে জানা যায় এটি পশ্চিমবঙ্গের কামারহাটির ঘটনা৷ 

উপরিউক্ত বিষয়গুলো পর্যালোচনা করলে এটা স্পষ্ট যে, আলোচিত দাবিতে প্রচারিত ভিডিওর ঘটনাটি বাংলাদেশের নয় বরং ভারতের পশ্চিমবঙ্গ রাজ্যের৷ 

এবং এটি  সাম্প্রতিক কোনো ঘটনা নয়। ভিডিওটি  ২০২৪ সালের ০৯ জুলাই সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ভাইরাল হয়। গণমাধ্যমে প্রাপ্ত তথ্য অনুযায়ী ভিডিওটি তারও প্রায় দুই বছর আগে ধারণকৃত৷ 

সুতরাং, বাংলাদেশের অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের সময়ে নির্যাতনের ঘটনা দাবিতে ভারতের পুরোনো ভিডিও প্রচার করা হয়েছে; যা সম্পূর্ণ মিথ্যা৷ 

তথ্যসূত্র

আরও পড়ুন

spot_img