গত ২৭ নভেম্বর চট্টগ্রাম থেকে ফেরার পথে লোহাগাড়া উপজেলার চুনতি ইউনিয়নের হাজীপাড়া এলাকায় বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের অন্যতম সমন্বয়ক হাসনাত আব্দুল্লাহ ও সারজিস আলমের বহরের একটি গাড়ি সড়ক দুর্ঘটনার কবলে পড়ে। এরই প্রেক্ষিতে ‘ট্রাক চাপায় নিহত হাসনাত আব্দুল্লাহ, গুরুতর আহত সারজিস’ শীর্ষক থাম্বনেইল এবং “ট্রাক চাপায় নিহত হাসনাত আব্দুল্লাহ, লাইফ সাপোর্টে সারজিস আলম” শীর্ষক শিরোনামে একটি ভিডিও প্রচার করা হয়েছে।
ইউটিউবে প্রচারিত ভিডিওটি দেখুন এখানে (আর্কাইভ)
এই প্রতিবেদন প্রকাশ অবধি ভিডিওটি ৬ হাজার বার দেখা হয়েছে। ভিডিওতে শতাধিক লাইক দেওয়া হয়েছে।
ফ্যাক্টচেক
রিউমর স্ক্যানার টিমের অনুসন্ধানে জানা যায়, হাসনাত আব্দুল্লাহর মারা যাননি বরং তিনি বেঁচে আছেন। এছাড়া সারজিস আলমও সুস্থ আছেন। প্রকৃতপক্ষে, চটকদার শিরোনাম ও থাম্বনেইল ব্যবহার করে নির্ভরযোগ্য কোনো তথ্যপ্রমাণ ছাড়াই আলোচিত ভিডিওটি তৈরি করা হয়েছে।
অনুসন্ধানের ভিডিওতে প্রচারিত আলোচিত দাবিগুলো নিয়ে প্রাসঙ্গিক একাধিক কি ওয়ার্ড সার্চ করেও গণমাধ্যম কিংবা সংশ্লিষ্ট অন্যকোনো নির্ভরযোগ্য সূত্রে উক্ত দাবির সত্যতা পাওয়া যায়নি। বরং, হাসনার-সারজিসের বহরের গাড়ি দুর্ঘটনার বিষয়ে পুলিশ ও প্রত্যক্ষদর্শীরা গণমাধ্যমকে জানান, তাদের গাড়িবহরে ১২টি মোটরসাইকেল, দুটি কার ও একটি পাজেরো গাড়ি ছিল। সাইফুলের গ্রামের বাড়ি থেকে ১২ কিলোমিটার পশ্চিমে চট্টগ্রাম-কক্সবাজার মহাসড়কের চুনতি হাজি রাস্তার মাথা। ওই এলাকায় বহরের গাড়িগুলো গ্রামীণ সড়ক থেকে মহাসড়কে উঠছিল। প্রথমে ১২টি মোটরসাইকেল ও পাজেরো গাড়িটি মহাসড়কে ওঠে। ওই পাজেরো গাড়িতে হাসনাত-সারজিস ছিলেন। পরে একটি প্রাইভেট কার মহাসড়কে উঠতেই চট্টগ্রামমুখী একটি মালবাহী ট্রাক গাড়িটির সামনের অংশে ধাক্কা দেয়। এতে কারটির সামনের বাঁ দিকের অংশ ক্ষতিগ্রস্ত হয়। ক্ষতিগ্রস্ত প্রাইভেট কারটিতে হাসনাত-সারজিসের কয়েকজন সফরসঙ্গী ছিলেন। তবে ওই ঘটনায় কেউ হতাহত হননি।
অর্থাৎ, দুর্ঘটনার কবলে পড়া গাড়িতে হাসনাত কিংবা সারজিস ছিলেন না এবং এ ঘটনায় কেউ হতাহত হননি।
অনুসন্ধানের এ পর্যায়ে আলোচিত ভিডিওটিতে প্রচারিত ভিডিও ক্লিপের বিষয়ে পৃথকভাবে অনুসন্ধান চালায় রিউমর স্ক্যানার টিম।
ভিডিও যাচাই
ভিডিওটির বিষয়ে জানতে রিভার্স ইমেজ সার্চের মাধ্যমে যমুনা টিভির ইউটিউব চ্যানেলে ২৬ আগস্ট “আনসারদের তাণ্ডবে আহত ৪০ শিক্ষার্থী, হাসনাতের মাথায় গুরুতর আঘাত শীর্ষক শিরোনামে প্রকাশিত ভিডিওর সাথে আলোচিত দাবিতে প্রচারিত ভিডিওটি খুঁজে পাওয়া যায়।
ভিডিও থেকে জানা যায়, গত ২৬ আগস্ট শিক্ষার্থীদের সাথে আনসার বাহিনীর সংঘর্ষে হাসনাত আব্দুল্লাহ মাথায় আঘাত পান।
এছাড়া হাসনাত আব্দুল্লাহ ও সারজিস আলমের ফেসবুক অ্যাকাউন্ট পর্যবেক্ষণ করে দেখা যায় তারা সুস্থ আছেন।
সুতরাং, হাসনাত আব্দুল্লাহর নিহত হওয়া এবং সারজিস আলম লাইফ সাপোর্টে থাকার বিষয়ে ইন্টারনেটে প্রচারিত ভিডিওটি মিথ্যা।
তথ্যসূত্র
- Jamuna TV- আনসারদের তাণ্ডবে আহত ৪০ শিক্ষার্থী, হাসনাতের মাথায় গুরুতর আঘাত
- Prothom Alo – হাসনাত-সারজিসের বহরের গাড়িতে ট্রাকের ধাক্কার ঘটনায় মামলা
- Hasnat Abdullah – Facebook
- Md. Sarjis Alam – Facebook