গাজায় সম্প্রতি ইসরায়েলের অবৈধ অবরোধের প্রতিবাদে গত ৩১ আগস্ট স্পেনের বার্সেলোনা থেকে যাত্রা শুরু করে আন্তর্জাতিক মানবাধিকার কর্মীদের ত্রাণ নিয়ে যাওয়ার নৌ উদ্যোগ গ্লোবাল সুমুদ ফ্লোটিলা। পরবর্তীতে ১৩ থেকে ১৫ সেপ্টেম্বর তিউনিসিয়া, ইতালির সিসিলি দ্বীপ ও গ্রিসের সাইরাস দ্বীপ থেকে আরও কিছু নৌযান ত্রাণ নিয়ে বহরে যুক্ত হয়। এর প্রেক্ষিতে গত ০১ অক্টোবর গাজায় পৌঁছেছে প্রথম বোট দাবিতে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে একটি ভিডিও প্রচার করা হয়েছে।

ফেসবুকে প্রচারিত পোস্ট দেখুন এখানে, এখানে।
একই দাবির ইনস্টাগ্রাম পোস্ট দেখুন এখানে।
একই দাবির ইউটিউব ভিডিও দেখুন এখানে।
ফ্যাক্টচেক
রিউমর স্ক্যানার টিমের অনুসন্ধানে দেখা যায়, গাজায় পৌঁছেছে প্রথম বোট দাবিতে প্রচারিত ভিডিওটি আসল নয়। প্রকৃতপক্ষে, আলোচিত ভিডিওটি কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা বা এআই প্রযুক্তির সহায়তায় তৈরি করা হয়েছে।
ভিডিওটির সূত্রপাত অনুসন্ধান করতে গিয়ে টিকটকে All In One নামের একটি অ্যাকাউন্টে গত ০১ অক্টোবর প্রকাশিত এ সংক্রান্ত সম্ভাব্য প্রথম ভিডিও খুঁজে পাওয়া যায়। ভিডিওটি সূক্ষ্মভাবে পর্যালোচনা করলে এতে কিছু এআই জনিত অসঙ্গতি লক্ষ্য করা যায়। তবে ক্যাপশনে বা ভিডিওর বর্ণনায় তা উল্লেখ করা হয়নি। অ্যাকাউন্টটি পর্যালোচনা করে সে সময় এমন আরো একাধিক ভিডিও পাওয়া যায়, যেগুলোও এআই দিয়ে তৈরি বলে প্রতীয়মান হয়।

অনুসন্ধানে নির্ভরযোগ্য কোনো সূত্রে গ্লোবাল সুমুদ ফ্লোটিলার এমন কোনো ভিডিওর সন্ধান পাওয়া যায়নি। তাছাড়া, ভিডিওটি যে সময় থেকে প্রচার হচ্ছে অর্থাৎ, ০১ অক্টোবরে ফ্লোটিলার কোনো নৌযানই গাজা উপকূলে পৌঁছেনি৷
পরবর্তীতে আলোচিত এই ভিডিওটি কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তার সহায়তায় নির্মিত কিনা তা নিশ্চিত হওয়ার জন্য কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তার সহায়তায় তৈরি কনটেন্ট শনাক্তকারী টুল ‘ডিপফেক-ও-মিটার’ এর ‘AVSRDD (2025)’ মডেলের মাধ্যমে ভিডিওটি পরীক্ষা করে রিউমর স্ক্যানার। মডেলটির বিশ্লেষণে দেখা যায়, ভিডিওটি এআই দিয়ে তৈরি হওয়ার সম্ভাবনা ১০০ শতাংশ।
উল্লেখ্য, জাতীয় দৈনিক দ্য বিজনেস স্ট্যান্ডার্ডের ০৩ অক্টোবরের এক প্রতিবেদন থেকে জানা যায়, গ্লোবাল সুমুদ ফ্লোটিলা’ নৌবহরের শেষ জাহাজ হিসেবে দ্য ম্যারিনেটকেও আটক করে ইসরায়েল। এর আগে, ২ অক্টোবর ইসরায়েলের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় এক বিবৃতিতে জানায়, গ্লোবাল সুমুদ ফ্লোটিলার অন্তত ৪০টি নৌযান আটক করা হয়েছে। অর্থাৎ, এই বহরের কোনো নৌযান তাদের কাঙ্ক্ষিত গন্তব্যে (গাজা) পৌঁছাতে পারেনি।
সুতরাং, গাজায় গ্লোবাল সুমুদ ফ্লোটিলার প্রথম বোট পৌঁছানোর ভিডিও দাবিতে এআই দিয়ে তৈরি ভিডিও প্রচার করা হয়েছে; যা সম্পূর্ণ মিথ্যা।
তথ্যসূত্র
- Rumor Scanner’s Analysis