সম্প্রতি, কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য ড. এ এফ এম আব্দুল মঈনের দুর্নীতি বিষয়ক একটি বক্তব্যকে ঘিরে সংবাদ প্রকাশের জেরে বিশ্ববিদ্যালয়টির এক শিক্ষার্থীকে বহিষ্কারের ঘটনায় জার্মান ভিত্তিক গণমাধ্যম ডয়েচে ভেলের বাংলা সংস্করণে গত ৩ আগস্ট ‘আরেকটি গাভী বৃত্তান্তের গল্প’ শীর্ষক শিরোনামে একটি মতামত প্রতিবেদন প্রকাশ করা হয়।
প্রতিবেদনটিতে যা দাবি করা হচ্ছে
প্রতিবেদনটির দাবি করা হয়, কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রার মো. আমিরুল হক চৌধুরী স্বাক্ষরিত এক অফিস আদেশে এক বছরের জন্য বহিষ্কার করা হয়েছে ২০১৭-২০১৮ শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থী ইকবাল মনোয়ারকে।
প্রতিবেদনটি পড়ুন এখানে আরেকটি গাভী বৃত্তান্তের গল্প ।
ফ্যাক্টচেক
রিউমর স্ক্যানার টিমের অনুসন্ধানে দেখা যায়, কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী ইকবাল মনোয়ারকে এক বছরের জন্য বহিষ্কারের দাবিটি সঠিক নয়। প্রকৃতপক্ষে ইকবাল মনোয়ারকে সাময়িকভাবে বহিষ্কার করা হয়েছে।
দাবিটির সত্যতা যাচাইয়ে কি-ওয়ার্ড অনুসন্ধানের মাধ্যমে জনকণ্ঠের ওয়েবসাইটে গত ২ আগস্ট ‘ইকবালকে সাময়িক বহিষ্কার করলো কুবি প্রশাসন কুবি প্রতিনিধি’ শীর্ষক শিরোনামে প্রকাশিত একটি প্রতিবেদন থেকে জানা যায়, ‘কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. এ এফ এম আবদুল মঈনের বক্তব্যকে ‘বিকৃত করে উদ্দেশ্যপ্রণোদিতভাবে বিভ্রান্তমূলক মিথ্যা’ তথ্য প্রচার করায় বিশ্ববিদ্যালয়ের ইংরেজি বিভাগের ২০১৭-২০১৮ শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থী মোহাম্মদ ইকবাল মনোয়ারকে বিশ্ববিদ্যালয় থেকে সাময়িক বহিষ্কার করা হয়েছে।’
পরবর্তীতে এই প্রতিবেদনের সূত্রে কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রার (ভারপ্রাপ্ত) মো. আমিরুল হক চৌধুরী স্বাক্ষরিত একটি বিজ্ঞপ্তি খুঁজে পায় রিউমর স্ক্যানার টিম।
বিজ্ঞপ্তিটিতে প্রদত্ত তথ্যানুযায়ী, ‘গত ৩১ জুলাই, ২০২৩ ইং তারিখে কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়ের মার্কেটিং বিভাগের নবীন বরণ ও বিদায় অনুষ্ঠান’ এ মাননীয় উপাচার্য প্রফেসর ড. এ এফ এম আবদুল মঈন এর বক্তব্যকে বিকৃত করে উদ্দেশ্যপ্রণোদিতভাবে বিভ্রান্তমূলক মিথ্যা তথ্য প্রচার করে বিশ্ববিদ্যালয়ের সুনাম ক্ষুন্ন করার পরিপ্রেক্ষিতে উদ্ভূত পরিস্থিতি বিবেচনা করে প্রক্টরিয়াল বড়ির প্রাথমিক প্রতিবেদন ও সুপারিশ অদ্য ০২/০৮/২০১৩ ইং তারিখে অনুষ্ঠিত বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রশাসনের উচ্চপর্যায়ের সভায় অনুমোদিত হওয়ায় বিশ্ববিদ্যালয়ের শৃঙ্খলা ভঙ্গের অভিযোগে ইংরেজি বিভাগের ২০১৭-২০১৮ শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থী মোহাম্মদ ইকবাল মনোয়ারকে বিশ্ববিদ্যালয় থেকে সাময়িকভাবে বহিষ্কার করা হলো।’
ইকবালকে সাময়িক বহিষ্কারের বিষয়ে উক্ত অফিস বিজ্ঞপ্তির সূত্রে গণমাধ্যমে প্রকাশিত আরও প্রতিবেদন দেখুন
সংবাদ প্রকাশের জেরে কুবি শিক্ষার্থীকে বহিষ্কার (ঢাকা টাইমস), বক্তব্য বিকৃতের অভিযোগে সাময়িক বহিস্কার (বার্তা বাজার), ইকবালকে সাময়িক বহিস্কার করলো কুবি প্রশাসন (চ্যানেল২৪)
উল্লেখিত প্রতিবেদন ও অফিস আদেশ থেকে দেখা যাচ্ছে, ইকবাল মনোয়ারকে এক বছরের জন্য নয় বরং সাময়িকভাবে বহিষ্কার করা হয়েছে।
মূলত, গত ৩১ জুলাই কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়ের মার্কেটিং বিভাগের নবীন বরণ ও বিদায় অনুষ্ঠানে উপাচার্য প্রফেসর ড. এ এফ এম আবদুল মঈনের দেওয়া দুর্নীতি বিষয়ক একটি বক্তব্যকে বিকৃত করে সংবাদ প্রকাশের অভিযোগে গত ২ আগস্ট বিশ্ববিদ্যালয়টির শিক্ষার্থী ও দৈনিক যায়যায়দিনের বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিনিধি ইকবাল মনোয়ারকে সাময়িকভাবে বহিষ্কার করে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন। ইকবাল মনোয়ারের এই বহিষ্কারের বিষয়টিকেই ডয়েচে ভেলে বাংলায় প্রকাশিত এক মতামত কলামে এক বছরের জন্য বহিষ্কার দাবিতে প্রচার করা হচ্ছে।
সুতরাং, কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী ইকবাল মনোয়ারকে এক বছরের জন্য বহিষ্কারের দাবিতে প্রচারিত তথ্যটি সম্পূর্ণ বিভ্রান্তিকর।
তথ্যসূত্র
- Daily Janokantho: ইকবালকে সাময়িক বহিষ্কার করলো কুবি প্রশাসন কুবি প্রতিনিধি
- Dhaka Times24: সংবাদ প্রকাশের জেরে কুবি শিক্ষার্থীকে বহিষ্কার
- Barta Bazar: বক্তব্য বিকৃতের অভিযোগে সাময়িক বহিস্কার
- Channel24: ইকবালকে সাময়িক বহিস্কার করলো কুবি প্রশাসন
- Office notice of CoU