গত ১৫ ফেব্রুয়ারি সারাদেশে শুরু হওয়া এসএসসি পরীক্ষার প্রথম দিনে শেরপুর মডেল গার্লস স্কুল কেন্দ্রের ২০১ নম্বর কক্ষে সময়মতো উত্তরপত্র ও প্রশ্ন না দেওয়া এবং আগেই উত্তরপত্র নেওয়ার অভিযোগ উঠে। সেই অভিযোগের প্রেক্ষিতে বিক্ষোভ করেন শিক্ষার্থী-অভিভাবকরা।
বিক্ষোভের সময় এক শিক্ষার্থীর ‘দে খাতা দে, এক্ষুনি দিবি’- শীর্ষক একটি বক্তব্য সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ব্যাপকভাবে ভাইরাল হয়।
পরবর্তীতে গত ১২ মে মাধ্যমিক স্কুল সার্টিফিকেট (এসএসসি) ও সমমান পরীক্ষা-২০২৪ এর ফলাফল প্রকাশ হলে ভাইরাল সেই শিক্ষার্থী ফেল করেছেন শীর্ষক একটি দাবি সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়ে।
ফেসবুকে প্রচারিত এমন কিছু পোস্ট দেখুন এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ)।
ফ্যাক্টচেক
রিউমর স্ক্যানার টিমের অনুসন্ধানে জানা যায়, ‘দে খাতা দে, এক্ষুনি দিবি’- শীর্ষক একটি বক্তব্য দিয়ে ভাইরাল হওয়া সেই শিক্ষার্থী এসএসসি পরীক্ষায় ফেল করেননি বরং তিনি জিপিএ ৪.৭২ পেয়ে উত্তীর্ণ হয়েছেন৷
অনুসন্ধানের শুরুতে ভাইরাল পোস্টগুলো পর্যবেক্ষণ করে “Samia Tarannum” নামক একটি অ্যাকাউন্ট থেকে করা একটি মন্তব্য (আর্কাইভ) রিউমর স্ক্যানার টিমের নজরে আসে।
সেখানে বলা হয় উক্ত শিক্ষার্থী ‘শেরপুর সরকারি বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়’ এর।
পরবর্তীতে দাবিটির সত্যতা যাচাইয়ের লক্ষ্যে শেরপুর সরকারি বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ে যোগাযোগ করে রিউমর স্ক্যানার টিম।
শেরপুর সরকারি বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ের বিজ্ঞান শাখার সিনিয়র শিক্ষক নারায়ণ চন্দ্র শীল জানান, সেই শিক্ষার্থী বিজ্ঞান বিভাগ থেকে ৪.৭২ পেয়ে উত্তীর্ণ হয়েছেন।
শেরপুর সরকারি বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক এ্যানী সুরাইয়া মিলোজও আমাদের একই তথ্য জানান৷
বিষয়টি অধিকতর যাচাইয়ের জন্য আমরা শিক্ষকদের থেকে উক্ত শিক্ষার্থীর রোল এবং রেজিষ্ট্রেশন নং সংগ্রহ করি।
প্রাপ্ত তথ্যের ভিত্তিতে উক্ত শিক্ষার্থীর রেজাল্টশীট চেক করে শিক্ষকদের দেওয়া তথ্যের সত্যতা মেলে। অর্থাৎ, তিনি ফেল করেননি।
মূলত, ‘দে খাতা দে, এক্ষুনি দিবি’- শীর্ষক একটি বক্তব্য দিয়ে ভাইরাল এসএসসি পরীক্ষার্থী শিক্ষার্থী গত ১২ মে প্রকাশিত মাধ্যমিক স্কুল সার্টিফিকেট (এসএসসি) ও সমমান পরীক্ষা-২০২৪ এর ফলাফলে ফেইল করেছেন দাবি করা হলেও ভাইরাল সেই শিক্ষার্থী ফেল করেননি। তিনি বিজ্ঞান বিভাগ থেকে ৪.৭২ পেয়ে উত্তীর্ণ হয়েছেন। তথ্যটি নিশ্চিত করেছেন উক্ত শিক্ষার্থীর বিদ্যালয়ের একাধিক শিক্ষক। পাশাপাশি, ইন্টারনেটে সেই শিক্ষার্থীর রেজাল্টশীট যাচাই করেও তথ্যটি নিশ্চিত হওয়া গেছে।
সুতরাং, দে খাতা দে, এক্ষুনি দিবি’- শীর্ষক বক্তব্য দিয়ে ভাইরাল হওয়া শিক্ষার্থী এসএসসি পরীক্ষায় ফেল করেছেন শীর্ষক দাবিটি সম্পূর্ণ মিথ্যা।
তথ্যসূত্র
- Sherpur Government Girls High School Teacher Narayon Chandra Shil- Statement
- Sherpur Government Girls High School Head Teacher Anne Suraiya Millwoze- Statement
- Result Sheet
- Rumor Scanner’s Own Analysis