তারেক রহমান জামিন পেয়ে বাংলাদেশে আসছেন দাবিটি মিথ্যা

সম্প্রতি, ‘তারেক রহমানের মামলায় জামিন হইছে তারেক রহমান আসছে বাংলাদেশে’ শীর্ষক দাবিতে ভিডিও শেয়ারিং প্ল্যাটফর্ম টিকটক এবং সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে একটি ভিডিও প্রচার করা হচ্ছে।

তারেক রহমান

টিকটকে প্রচারিত এমন কিছু ভিডিও দেখুন এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ)।

ফেসবুকে প্রচারিত এমন কিছু ভিডিও দেখুন এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ) এবং এখানে (আর্কাইভ)।

ফ্যাক্টচেক

রিউমর স্ক্যানার টিমের অনুসন্ধানে দেখা যায়, তারেক রহমানের মামলায় জামিন হওয়া এবং তার বাংলাদেশে আসার দাবিতে প্রচারিত ভিডিও সত্য নয়। প্রকৃতপক্ষে, ২০১৬ সালে যুক্তরাজ্যের লন্ডনে বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী স্বেচ্ছাসেবক দল আয়োজিত রাজনৈতিক কর্মশালায় ধারণকৃত ভিডিওর সাথে বিভ্রান্তিকর শিরোনাম যুক্ত করে উক্ত ভিডিওটি প্রচার করা হচ্ছে। এছাড়াও গত ২ আগস্ট তারেক রহমানকে ৬ মামলায় ৯ বছরের কারাদণ্ড দেওয়া হয়। 

তারেক রহমানের জামিন পাওয়ার তথ্যটির সত্যতা যাচাইয়ে প্রাসঙ্গিক কি-ওয়ার্ড সার্চের মাধ্যমে, দৈনিক আজকের পত্রিকার অনলাইন পোর্টালে  ‘৬ মামলায় সাজা হলো তারেকের’ শীর্ষক শিরোনামে গত ২ আগস্ট প্রকাশিত একটি প্রতিবেদন খুঁজে পাওয়া যায়।

Screenshot: Ajker Patrika

প্রতিবেদন থেকে জানা যায়, অবৈধ সম্পদ অর্জন ও সম্পদের তথ্য গোপনের অভিযোগে দুদকের মামলায় তারেক রহমান ও তাঁর স্ত্রী ডা. জোবাইদা রহমানকে সাজা দেয় ঢাকার সিনিয়র বিশেষ জজ আদালত ও মহানগর দায়রা জজ আদালতের বিচারক মো. আছাদুজ্জামান। রায়ে তারেক রহমানকে ৯ বছর ও জোবাইদাকে ৩ বছর কারাদণ্ড দেওয়া হয়।

এছাড়াও প্রাসঙ্গিক কি-ওয়ার্ড সার্চের মাধ্যমে গত ২ আগস্ট মহানগর দায়রা জজ আদালতের রায়ের একাধিক সংবাদ পাওয়া গেলেও তার জামিনের বিষয়ে কোনো সংবাদ পাওয়া যায়নি।

পরবর্তী অনুসন্ধানে তারেক রহমানের বাংলাদেশে আসার ভিডিও দাবিতে প্রচারিত ফুটেজের সত্যতা যাচাইয়ে অনুসন্ধান চালায় রিউমর স্ক্যানার টিম। 

রিভার্স সার্চের মাধ্যমে, JSSD UK নামের একটি ইউটিউব চ্যানেলে  ‘দেশনায়ক তারেক রহমানের সভায় প্রবেশ | রাজনৈতিক কর্মশালা ২০১৬’ শীর্ষক শিরোনামে ২০১৬ সালের ২৮ নভেম্বর প্রচারিত একটি ভিডিও খুঁজে পাওয়া যায়। 

Screenshot: Youtube

ভিডিওটি পর্যালোচনা করে দেখা যায়, আলোচিত ভিডিওর সাথে উক্ত ভিডিওর ৫ সেকেন্ড থেকে ৪২ সেকেন্ড পর্যন্ত হুবহু মিল রয়েছে। 

ভিডিওটি থেকে আরও জানা যায়, উক্ত ভিডিওটি ২০১৬ সালের ২১ নভেম্বর পূর্ব লন্ডনের রিজেন্ট বেঙ্কুয়েটিং হলে যুক্তরাজ্য স্বেচ্ছাসেবক দল আয়োজিত রাজনৈতিক কর্মশালা-র সময় ধারণ করা হয়। 

অর্থাৎ, তারেক রহমানের মামলায় জামিন পাওয়া এবং বাংলাদেশে আসার তথ্যটি সত্য নয়।

মূলত, গত ২ আগস্ট জ্ঞাত আয়বহির্ভূত সম্পদ অর্জনের অভিযোগে দুর্নীতি দমন কমিশনের দায়ের করা এক মামলায় বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের ৯ বছর এবং তার স্ত্রী জুবাইদা রহমানের ৩ বছরের কারাদণ্ড দেয় সিনিয়র বিশেষ জজ আদালত ও মহানগর দায়রা জজ আদালতের বিচারক মো. আছাদুজ্জামান। এরপর থেকেই সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ও ভিডিও শেয়ারিং প্ল্যাটফর্ম টিকটকে তারেক রহমানের মামলায় জামিন হয়েছে এবং তিনি বাংলাদেশে আসছেন দাবিতে একটি ভিডিও প্রচার করা হচ্ছে। তবে রিউমর স্ক্যানারের অনুসন্ধানে দেখা যায়, সম্প্রতি তারেক রহমান তার চলমান কোনো মামলায় জামিন পাননি এবং বাংলাদেশে এসেছেন দাবিতে প্রচারিত ভিডিওটি ২০১৬ সালে পূর্ব লন্ডনে যুক্তরাজ্য স্বেচ্ছাসেবক দল আয়োজিত একটি কর্মশালায় ধারণকৃত।

সুতরাং, তারেক রহমানের মামলায় জামিন হওয়া এবং তার দেশে আসার দাবিটি মিথ্যা।

তথ্যসূত্র

আরও পড়ুন

spot_img