সম্প্রতি, নিউ ইয়র্ক পুলিশের হাতে যুক্তরাষ্ট্র প্রবাসী সাংবাদিক মোহাম্মদ ইলিয়াস হোসেন নিউ ইয়র্ক পুলিশের হাতে গ্রেফতার হয়েছেন দাবিতে একটি তথ্য সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়েছে।

উক্ত দাবিতে প্রচারিত কিছু পোস্ট দেখুন এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ) এবং এখানে (আর্কাইভ)।
ফ্যাক্টচেক
রিউমর স্ক্যানার টিমের অনুসন্ধানে জানা যায়, সাম্প্রতিক সময়ে নিউ ইয়র্কে সাংবাদিক ইলিয়াস হোসেনের গ্রেফতারের দাবিটি সত্য নয়। কোনো প্রকার নির্ভরযোগ্য সূত্র ছাড়াই দাবিটি প্রচারিত হচ্ছে।
সাংবাদিক ইলিয়াস হোসেনের সাম্প্রতিক গ্রেফতারের তথ্য নির্ভরযোগ্য কোনো সূত্রে পাওয়া যায়নি। বরং গ্রেফতারের দাবি ছড়ানোর পরও তার ভেরিফায়েড ফেসবুক পেজ থেকে দুটি পোস্ট (১,২) প্রকাশিত হয়েছে।
প্রাসঙ্গিক কি-ওয়ার্ড সার্চের মাধ্যমে দৈনিক ইত্তেফাকে গত বছরের ১৮ ফেব্রুয়ারি ‘নিউ ইয়র্ক পুলিশের হাতে ইলিয়াস হোসেন গ্রেপ্তার’ শীর্ষক একটি প্রতিবেদন পাওয়া যায়। প্রতিবেদন থেকে জানা যায়, সেদিন সকালে স্টাটেন আইল্যান্ড এলাকা থেকে ইলিয়াস হোসেনকে গ্রেফতার করা হয়েছিল।

পাশাপাশি, একই বছরের ২০ ফেব্রুয়ারি যায়যায়দিনে প্রকাশিত একটি প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়েছে, ১৯ ফেব্রুয়ারি সকালে নিউ ইয়র্কের কুইন্স ফৌজদারি আদালতে হাজির করা হলে বিচারক তাকে জামিন দেন। ওই প্রতিবেদনে আরও বলা হয়, তার বিরুদ্ধে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে মামলার বাদীকে হয়রানি, জবরদস্তি ও ভয়ভীতি প্রদর্শনের অভিযোগ আনা হয়েছিল। তবে আদালতে তিনি নিজেকে নির্দোষ দাবি করেন এবং জামিনে মুক্ত হন।
অর্থাৎ, ২০২৪ সালের ১৮ ফেব্রুয়ারি ইলিয়াস হোসেন গ্রেফতার হলেও এক দিনের ব্যবধানে তিনি জামিন পান।
এখানে লক্ষণীয় বিষয় হলো, ২০২৪ সালের ১৮ ফেব্রুয়ারি যুক্তরাষ্ট্রে সাংবাদিক ইলিয়াস হোসেন গ্রেফতার হয়েছিলেন। তবে এক বছর পর, ২০২৫ সালের ১৮ ফেব্রুয়ারি সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে তার পুনরায় গ্রেফতারের দাবি ছড়িয়ে পড়ে। রিউমর স্ক্যানারের পর্যবেক্ষণে দেখা গেছে, এ ধরনের বিভ্রান্তি তৈরিতে ফেসবুকের “মেমোরিজ” ফিচার গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখতে পারে। এই ফিচারের মাধ্যমে নির্দিষ্ট দিনে পূর্ববর্তী বছরগুলোর ঘটনা ব্যবহারকারীদের স্মরণ করিয়ে দেওয়া হয়, যা অনেক ক্ষেত্রে প্রাসঙ্গিকতা বিবেচনা না করেই নতুন করে শেয়ার করা হয়। ফলে পুরোনো তথ্য নতুনের মতো প্রচার পেয়ে বিভ্রান্তির জন্ম দেয়। এর আগেও ফেসবুকের এই ফিচারের কারণে বিভ্রান্তিকর তথ্য ছড়িয়ে পড়তে দেখা গেছে।
সুতরাং, সাম্প্রতিক সময়ে সাংবাদিক ইলিয়াস হোসেনকে গ্রেফতারের তথ্যটি সম্পূর্ণ মিথ্যা ।
তথ্যসূত্র
- Rumor Scanner’s analysis.
- Ittefaq: নিউ ইয়র্ক পুলিশের হাতে ইলিয়াস হোসেন গ্রেপ্তার
- Jaijaidin: জামিনে মুক্ত সাংবাদিক ইলিয়াস হোসেন