সিইসি নিয়োগে বিতর্ক শীর্ষক কোনো সংবাদ ছাপেনি মানবজমিন 

প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) হিসেবে নিয়োগ পেয়েছেন অবসরপ্রাপ্ত সচিব এ এম এম নাসির উদ্দীন। গত ২১ নভেম্বর এ বিষয়ে প্রজ্ঞাপন জারি করে মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ। এরই প্রেক্ষিতে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে সম্প্রতি মানবজমিন সংবাদপত্রের প্রিন্ট সংস্করণের আদলে “সিইসি নিয়োগে বিতর্ক: মুক্তিযুদ্ধের কলঙ্কিত অতীত ও ঘুষের অভিযোগ” শীর্ষক শিরোনামে একটি কথিত সংবাদ প্রতিবেদনের ছবি প্রচার করে দাবি করা হচ্ছে, “বাংলাদেশের প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) এ এম এম নাসির উদ্দীনের নিয়োগ ঘিরে নতুন বিতর্ক সৃষ্টি হয়েছে। তার পারিবারিক পটভূমি, বিশেষ করে তার পিতা মরহুম তালেব উল্লাহ মাস্টারের মুক্তিযুদ্ধকালীন ভূমিকা এবং নিয়োগ প্রক্রিয়ায় ঘুষ লেনদেনের অভিযোগকে কেন্দ্র করে জাতীয় ও আন্তর্জাতিক মহলে আলোচনা তুঙ্গে। রাজাকার পিতার পরিচয় নিয়ে সমালোচনা। এ এম এম নাসির উদ্দীনের পিতা তালের উল্লাহ মাস্টার ছিলেন কুতুবদিয়া উপজেলার বড়ঘোপ ইউনিয়নের শান্তি কমিটির সদস্য। মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের প্রকাশিত রাজাকার তালিকায় তার নাম অন্তর্ভুক্ত রয়েছে। স্থানীয় হয় মুক্তিযোদ্ধারা জানিয়েছেন, মুক্তিযুদ্ধের সময় তালেব রাজাকার মুক্তিকামী মানুষদের বাড়িঘর লুটপাট, অগ্নিসংযোগ এবং হত্যায় জড়িত ছিলেন। […]”

উক্ত দাবিতে ফেসবুকে প্রচারিত পোস্ট দেখুন এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ) এবং এখানে (আর্কাইভ)।

ফ্যাক্টচেক

রিউমর স্ক্যানার টিমের অনুসন্ধানে জানা যায়, “সিইসি নিয়োগে বিতর্ক: মুক্তিযুদ্ধের কলঙ্কিত অতীত ও ঘুষের অভিযোগ” শীর্ষক শিরোনামে মানবজমিন কোনো সংবাদ প্রকাশ করেনি বরং, ডিজিটাল প্রযুক্তির সহায়তায় মানবজমিনের প্রিন্ট সংস্করণের আদলে ভুয়া এই সংবাদ তৈরি করে আলোচিত দাবিটি প্রচার করা হচ্ছে। 

এ বিষয়ে অনুসন্ধানে প্রচারিত কথিত সংবাদ প্রতিবেদনের ছবিটির পর্যবেক্ষণ করলে দেখা যায়, এতে মানবজমিন এর লোগো এবং প্রিন্ট সংস্করণে সংবাদ প্রকাশের তারিখ হিসেবে ২২ নভেম্বর ২০২৪ উল্লেখ করা হয়েছে। উক্ত তারিখ এবং সাম্প্রতিক সময়ে মানবজমিনের ওয়েবসাইটে এবং প্রিন্ট সংস্করণ পর্যবেক্ষণ করে উক্ত দাবিতে কোনো সংবাদ প্রকাশের প্রমাণ মেলেনি। তবে সেদিন ‘সিইসি হলেন নাসির উদ্দীন’ শিরোনামে একটি সংবাদ ছাপে মানবজমিন। এতেও উক্ত দাবি সংক্রান্ত কোনো তথ্য মেলেনি। 

তাছাড়া, মানবজমিনের প্রিন্ট সংস্করণে প্রকাশিত সংবাদের ডিজাইনের সাথেও আলোচিত দাবিতে প্রচারিত প্রতিবেদনের ডিজাইন বা ফরমেটের বৈসাদৃশ্য বা অসঙ্গতি দেখা যায়। যেমন: মানবজমিনের প্রকাশিত সংবাদ শিরোনামে সাধারণত দাড়ি ব্যবহার করা হয় না, অপরদিকে প্রচারিত দাবিতে দাড়ি ব্যবহার করা হয়েছে। তাছাড়া, শিরোনাম বা মূল সংবাদের ক্ষেত্রে ব্যবহৃত ফন্টের মধ্যেও বৈসাদৃশ্য লক্ষ্য করা যায়। পাশাপাশি, লোগো এবং তারিখের ক্ষেত্রেও অসঙ্গতি লক্ষ্য করা যায়। 

Comparison: Rumor Scanner

এ বিষয়ে জানতে মানবজমিনের চিফ নিউজ এডিটর সাজিদ হকের সাথে যোগাযোগ করা হলে তিনি রিউমর স্ক্যানারকে জানান, এরকম কোনো সংবাদ মানবজমিন প্রকাশ করেনি। এটি ভুয়া।

পরবর্তী অনুসন্ধানে অন্যান্য গণমাধ্যমেও উক্ত দাবিতে কোনো সংবাদ বা তথ্যের অস্তিত্ব মেলেনি। 

সুতরাং, “সিইসি নিয়োগে বিতর্ক: মুক্তিযুদ্ধের কলঙ্কিত অতীত ও ঘুষের অভিযোগ” শীর্ষক শিরোনামে মানবজমিন সংবাদ প্রকাশ করেছে শীর্ষক দাবিটি মিথ্যা।

তথ্যসূত্র

  • Manabzamin Print Version
  • Statement of Sajid Haque, Chief News Editor, Manabzamin
  • Rumor Scanner’s own analysis

আরও পড়ুন

spot_img