সম্প্রতি, “যুবককে তুলে নিয়ে চার যুবতী মিলে সংঘবদ্ধ ধর্ষণ করেছে।” শীর্ষক একটি সংবাদকে বাংলাদেশের ঘটনা দাবিতে ফেসবুকে ছড়িয়ে পড়েছে।
ফেসবুকে প্রচারিত এমন কিছু পোস্ট দেখুন এখানে, এখানে, এখানে, এখানে এবং এখানে। পোস্টগুলোর আর্কাইভ ভার্সন দেখুন এখানে, এখানে, এখানে, এখানে এবং এখানে।
ফ্যাক্টচেক
রিউমর স্ক্যানার টিমের অনুসন্ধানে জানা যায়, যুবককে তুলে নিয়ে চার যুবতী মিলে সংঘবদ্ধ ধর্ষণের ঘটনাটি বাংলাদেশের নয় বরং এটি ভারতের বিহার রাজ্যের ঘটনা।
কি-ওয়ার্ড সার্চ পদ্ধতির মাধ্যমে মূলধারার অনলাইন গণমাধ্যম ‘Daily Bangladesh’ এর ওয়েবসাইটে গত ২৪ নভেম্বর “চার যুবতী মিলে যুবককে সংঘবদ্ধ ধর্ষণ!” শিরোনামে প্রকাশিত একটি প্রতিবেদন খুঁজে পাওয়া যায়।
প্রতিবেদনে বলা হয়, “চোখে রাসায়নিক ছিটিয়ে, জোর করে গাড়িতে তুলে নিয়ে গিয়ে এক যুবককে সংঘবদ্ধ ধর্ষণের অভিযোগ উঠেছে চার যুবতীর বিরুদ্ধে। ভারতের পাঞ্জাব প্রদেশের জালন্ধরের এই ঘটনায় হুলস্থুল পড়ে গিয়েছে।”
পরবর্তীতে ভারতীয় সংবাদমাধ্যম ‘Asiannetnews’ এর ওয়েবসাইটে গত ২৩ নভেম্বর “পঞ্জাবে রাতের অন্ধকারে কারখানার কর্মীকে গণধর্ষণ, ৪ তরুণী মিলে মদ খাইয়ে অত্যাচার” শিরোনামে প্রকাশিত একটি প্রতিবেদন খুঁজে পাওয়া যায়।
প্রতিবেদনে বলা হয়, “গত ২১ নভেম্বর পাঞ্জাবের জলন্ধরে চার জন তরুণী মিলে এক যুবককে গণধর্ষণের ঘটনা ঘটেছে। রাতের অন্ধকারে গাড়িতে তুলে নিয়ে গিয়ে জঙ্গলের মধ্যে তাঁকে ধর্ষণ করা হয় বলে গণমাধ্যমকে জানিয়েছেন নির্যাতিত যুবক। তার অভিযোগ, চার জন তরুণী এক সাদা গাড়িতে করে এসে তাঁকে অপহরণ করে হাত পা বেঁধে জঙ্গলে তুলে নিয়ে যান। সেখানে ওই চার জন মিলেই তার ওপর যৌন নির্যাতন চালিয়েছেন বলে অভিযোগ। নির্যাতনের আগে জোর করে তাকে মাদকাশক্ত করে এই কাজ করা হয় বলে জানিয়েছেন ওই শ্রমিক। ধর্ষণের পর সেই জঙ্গলেই তাকে ফেলে দিয়ে চলে যায় চার তরুণী।”
ভারতের একাধিক সংবাদমাধ্যমে (আজকাল, এই সময়) এই ঘটনার বিষয়ে প্রতিবেদন প্রকাশিত হয়েছে।
ভারতের পাঞ্জাবে ঘটা এই ঘটনাটি নিয়ে বাংলাদেশের বিভিন্ন গণমাধ্যমে সংবাদ প্রচারের পর সংবাদগুলোর শিরোনাম এবং ফেসবুক পোস্টের ক্যাপশনে ঘটনাটি ভারতের এই বিষয়টি উল্লেখ না থাকার ফলে অনেক ফেসবুক ব্যবহারকারী ঘটনাটি বাংলাদেশের কোন স্থানের ভেবে বিভ্রান্তির শিকার হয়।
এছাড়া, বাংলাদেশের অনেক ফেসবুক ব্যবহারকারী প্রকাশিত এই সংবাদটি যথাযথ যাচাই না করে এবং বিস্তারিত না পড়ে শুধুমাত্র শিরোনামটি কপি-পেস্ট করে ফেসবুকে প্রচার করছেন, ফলে ঘটনাটি ভারতের হলেও ভারত শব্দটি উল্লেখ না করে বাংলাদেশে প্রচার করায় সেসকল পোস্টগুলোর কারণে জনমনে বিভ্রান্তির সৃষ্টি হয়েছে।
মূলত, গত ২১ নভেম্বর পাঞ্জাবের জলন্ধরে চার জন তরুণী মিলে এক যুবককে গণধর্ষণের ঘটনা ঘটেছে। এই ঘটনায় গণমাধ্যমে প্রচারিত “চার যুবতী মিলে যুবককে সংঘবদ্ধ ধর্ষণ” শিরোনাম ব্যবহার করে ঘটনাটি বাংলাদেশের দাবিতে বিভ্রান্তিকরভাবে ফেসবুকে প্রচার করা হচ্ছে।
সুতরাং, ভারতে যুবককে তুলে নিয়ে চার যুবতী মিলে সংঘবদ্ধ ধর্ষণ করার একটি ঘটনাকে বাংলাদেশের ঘটনা দাবিতে প্রচার করা হচ্ছে; যা বিভ্রান্তিকর।
তথ্যসূত্র
- Daily Bangladesh: চার যুবতী মিলে যুবককে সংঘবদ্ধ ধর্ষণ!
- Asiannetnews: পঞ্জাবে রাতের অন্ধকারে কারখানার কর্মীকে গণধর্ষণ, ৪ তরুণী মিলে মদ খাইয়ে অত্যাচার