সেনাপ্রধানের নির্দেশে ধানমন্ডিতে আ.লীগের মিছিলের ভুয়া দাবি প্রচার 

সম্প্রতি ‘সেনাপ্রধানের নির্দেশে ঢাকা ধানমন্ডিতে প্রকাশ্যে ১২ লক্ষ নেতাকর্মীকে নিয়ে মাঠে নামলো আওয়ামী লীগ’ শিরোনামে একটি ভিডিও ইন্টারনেটে বিভিন্ন প্লাটফর্মে প্রচার করা হয়েছে৷ 

ভিডিওতে দাবি করা হয়, মিছিলটি সেনাপ্রধান ওয়াকার-উজ-জামানের নির্দেশে অনুষ্ঠিত হয়েছে বলে মিছিলে উপস্থিত আওয়ামী সমর্থকদের পক্ষ থেকে জানানো নয়। এছাড়া, উক্ত পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে পুলিশ নিষ্ক্রিয় ভূমিকা পালন করেছে বলেও ভিডিওটিতে দাবি করা হয়েছে৷ 

উক্ত দাবিতে ইউটিউবে প্রচারিত পোস্ট দেখুন এখানে (আর্কাইভ)৷

টিকটকে প্রচারিত পোস্ট দেখুন এখানে (আর্কাইভ)। 

ফ্যাক্টচেক

রিউমর স্ক্যানার টিমের অনুসন্ধানে জানা যায়, সেনাপ্রধান জেনারেল ওয়াকার-উজ-জামানের নির্দেশে ধানমন্ডিতে বাংলাদেশের আওয়ামী লীগের সমর্থকদের মিছিল করার দাবিটি সঠিক নয়৷ প্রকৃতপক্ষে, ভিন্ন ভিন্ন সময়ে আওয়ামী লীগ ও বিএনপির মিছিলের এবং অপ্রাসঙ্গিক পুরোনো ঘটনার বেশকিছু ছবি যুক্ত করে উক্ত ভিডিওটি তৈরি করে আলোচিত দাবিতে প্রচার করা হয়েছে৷ 

এ বিষয়ে অনুসন্ধানে আলোচিত দাবিতে প্রচারিত ভিডিও ফুটেজগুলো পৃথকভাবে যাচাই করেছে রিউমর স্ক্যানার।

ছবি যাচাই- ১

এ বিষয়ে অনুসন্ধানে বাংলাদেশ সংবাদ সংস্থার ওয়েবসাইটে ২০২২ সালের ১৭ আগস্ট ‘সিলেটে আওয়ামী লীগের বিক্ষোভ মিছিল অনুষ্ঠিত’ শিরোনামে প্রকাশিত একটি প্রতিবেদন খুঁজে পাওয়া যায়। উক্ত প্রতিবেদনে সংযুক্ত ছবির সাথে আলোচিত ভিডিওর প্রথম ছবিটির মিল রয়েছে। 

Comparison: Rumor Scanner 

প্রতিবেদন থেকে জানা যায়, সেদিন দুপুরে সিলেটে বিএনপি-জামায়াত ‘অপশক্তির’ বিরুদ্ধে বিক্ষোভ মিছিল করেছে সিলেট মহানগর আওয়ামীলীগ। নগরীর চৌহাট্টাস্থ কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারের সামনে থেকে বিক্ষোভ মিছিলটি শুরু হয়। এতে শত শত নেতা-কর্মী অংশগ্রহণ করেন। মিছিলটি বিভিন্ন সড়ক প্রদক্ষিণ করে নগরীর কোর্ট পয়েন্ট এলাকায় গিয়ে শেষ হয়। সেখানে সংক্ষিপ্ত সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়। কেন্দ্রীয় কর্মসূচির অংশ হিসেবে বিক্ষোভ মিছিল করে সিলেট মহানগর আওয়ামী লীগ। তাদের সাথে ছাত্রলীগ, যুবলীগ, স্বেচ্ছাসেবকলীগ, কৃষকলীগ নেতা-কর্মীরাও যোগ দেন। সংযুক্ত ছবিটি উক্ত মিছিলের দৃশ্য। 

অর্থাৎ, আলোচিত ভিডিওর প্রথম ছবির ঘটনাটি সাম্প্রতিক সময়ের নয়। 

ছবি যাচাই- ২ 

এ বিষয়ে অনুসন্ধানে বাংলাদেশ সংবাদ সংস্থার ওয়েবসাইটে ২০২৩ সালের ২৮ অক্টোবর ‘ময়মনসিংহে আওয়ামী লীগের প্রতিবাদ মিছিল ও শান্তি সমাবেশ’ শিরোনামে প্রকাশিত একটি প্রতিবেদন খুঁজে পাওয়া যায়। উক্ত প্রতিবেদনে সংযুক্ত ছবির সাথে আলোচিত ভিডিওর দ্বিতীয় ছবিটির মিল রয়েছে।

Comparison: Rumor Scanner

প্রতিবেদন থেকে জানা যায়, শান্তিপূর্ণ সভা-সমাবেশের নামে বিএনপি- জামায়াত জোটের ‘হামলা, ভাংচুর ও অগ্নিসংযোগ এবং আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীদের উপর সন্ত্রাসী হামলার’ প্রতিবাদে ময়মনসিংহ মহানগর আওয়ামী লীগের উদ্যোগে সেদিন ময়মনসিংহে মিছিল ও শান্তি সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়। সংযুক্ত ছবিটি উক্ত মিছিলের দৃশ্য।

অর্থাৎ, আলোচিত ভিডিওর দ্বিতীয় ছবির ঘটনাটি সাম্প্রতিক সময়ের নয়।

ছবি যাচাই- ৩

এ বিষয়ে অনুসন্ধানে বাংলানিউজটোয়েন্টিফোরের ওয়েবসাইটে ২০২৩ সালের ১৬ নভেম্বর ‘নারায়ণগঞ্জে আওয়ামী লীগের মিছিল’ শিরোনামে প্রকাশিত একটি প্রতিবেদন খুঁজে পাওয়া যায়। উক্ত প্রতিবেদনে সংযুক্ত ছবির সাথে আলোচিত ভিডিওর তৃতীয় ছবিটির মিল রয়েছে।

Comparison: Rumor Scanner

প্রতিবেদন থেকে জানা যায়, দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনকে ঘিরে বিএনপি-জামায়াতের অবরোধের প্রতিবাদে সেদিন নারায়ণগঞ্জে মিছিল করেছে মহানগর আওয়ামী লীগ। শহরের চাষাঢ়া শহীদ মিনার থেকে মিছিলটি শুরু হয়ে বঙ্গবন্ধু সড়ক প্রদক্ষিণ করে ২ নম্বর রেলগেট এলাকায় দলীয় কার্যালয়ে গিয়ে শেষ হয়। সংযুক্ত ছবিটি উক্ত মিছিলের দৃশ্য।

অর্থাৎ, আলোচিত ভিডিওর তৃতীয় ছবির ঘটনাটি সাম্প্রতিক সময়ের নয়।

ছবি যাচাই- ৪

এ বিষয়ে অনুসন্ধানে জাগোনিউজ২৪ এর ওয়েবসাইটে ২০১৬ সালের ০১ জানুয়ারি ‘আ.লীগের মিছিলে পুলিশের হামলা : আহত ১০’ শিরোনামে প্রকাশিত একটি প্রতিবেদন খুঁজে পাওয়া যায়। উক্ত প্রতিবেদনে সংযুক্ত ছবির সাথে আলোচিত ভিডিওর চতুর্থ ছবিটির মিল রয়েছে।

Comparison: Rumor Scanner

প্রতিবেদন থেকে জানা যায়, থার্টি ফার্স্ট নাইট উদযাপনকে কেন্দ্র করে রাজশাহী নগরীর ৪ নম্বর ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীদের সাথে পুলিশের বাকবিতণ্ডা হয় এবং কয়েকজন কর্মীকে আটক করা হয়। এ ঘটনার প্রতিবাদে ২০১৬ সালের ০১ জানুয়ারি রাজশাহী মহানগরীতে বিক্ষোভ মিছিলে করে আওয়ামী লীগের কর্মীরা। নগরীর সিপাইপাড়া ফায়ার সার্ভিসের মোড়ে ওই মিছিলে পুলিশ হামলা চালায়। সংযুক্ত ছবিটি উক্ত ঘটনার দৃশ্য।

অর্থাৎ, আলোচিত ভিডিওর চতুর্থ ছবির ঘটনাটি সাম্প্রতিক সময়ের নয়।

ছবি যাচাই- ৫

এ বিষয়ে অনুসন্ধানে সময় টিভির ওয়েবসাইটে ২০২৪ সালের ০৩ আগস্ট ‘রাজবাড়ীতে আওয়ামী লীগের মিছিল’ শিরোনামে প্রকাশিত একটি প্রতিবেদন খুঁজে পাওয়া যায়। উক্ত প্রতিবেদনে সংযুক্ত ছবির সাথে আলোচিত ভিডিওর পঞ্চম ছবিটির মিল রয়েছে।

Comparison: Rumor Scanner

প্রতিবেদন থেকে জানা যায়, সেসময়ে চলমান বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে অনুপ্রবেশকারীদের ‘নৈরাজ্য ও দেশবিরোধী’ কর্মকাণ্ডের প্রতিবাদে সেদিন বিক্ষোভ মিছিল করে রাজবাড়ী জেলা আওয়ামী লীগ। সেদিন বিকেল ৫টার দিকে জেলার দলীয় কার্যালয়ের সামনে থেকে মিছিলটি বের হয়ে শহরের প্রধান সড়কগুলো প্রদক্ষিণ করে আবার দলীয় কার্যালয়ের সামনে নেতাকর্মীরা জড়ো হয়। মিছিলে আওয়ামী লীগের পাশাপাশি দলটির অঙ্গ ও সহযোগী সংগঠনের নেতাকর্মীরা যোগ দেয়। সংযুক্ত ছবিটি উক্ত মিছিলের দৃশ্য।

অর্থাৎ, আলোচিত ভিডিওর পঞ্চম ছবির ঘটনাটি সাম্প্রতিক সময়ের নয়।

ছবি যাচাই- ৬

এ বিষয়ে অনুসন্ধানে রাইজিং বিডির ওয়েবসাইটে ২০২২  সালের ০৬ আগস্ট ‘Fuel price hike: Protesters vandalize police vehicle’ শিরোনামে প্রকাশিত একটি প্রতিবেদন খুঁজে পাওয়া যায়। উক্ত প্রতিবেদনে সংযুক্ত ছবির সাথে আলোচিত ভিডিওর ষষ্ঠ ছবিটির মিল রয়েছে।

Comparison: Rumor Scanner

প্রতিবেদন থেকে জানা যায়, সেদিন রাজধানীর শ্যামলীতে ডিজেল-পেট্রোলসহ জ্বালানি তেলের মূল্যবৃদ্ধির প্রতিবাদে বের হওয়া মিছিল থেকে পুলিশের একটি গাড়ি ভাঙচুর করা হয়। শ্যামলীর শিশু মেলার সামনে থেকে উত্তেজিত জনতা মিছিলটি বের করে, এরপর তারা পুলিশের গাড়িটি থামিয়ে ভাঙচুর করে। সংযুক্ত ছবিটি উক্ত ঘটনার দৃশ্য।

অর্থাৎ, আলোচিত ভিডিওর ষষ্ঠ ছবির ঘটনাটি সাম্প্রতিক সময়ের নয়।

ছবি যাচাই- ৭

এ বিষয়ে অনুসন্ধানে ঢাকা টাইমস টোয়েন্টিফোরের ওয়েবসাইটে ২০২৪  সালের ০৭ আগস্ট ‘গোপালগঞ্জে আ. লীগের বিক্ষোভ মিছিল’ শিরোনামে প্রকাশিত একটি প্রতিবেদন খুঁজে পাওয়া যায়। উক্ত প্রতিবেদনে সংযুক্ত ছবির সাথে আলোচিত ভিডিওর সপ্তম ছবিটির মিল রয়েছে।

Comparison: Rumor Scanner

প্রতিবেদন থেকে জানা যায়, ২০২৪ সালের ০৫ আগস্ট ক্ষমতাসীন আওয়ামী সরকারের পতনের পর সেবছরের ০৭ আগস্ট গোপালগঞ্জে বিক্ষোভ মিছিল করেছে আওয়ামী লীগ ও সহযোগী সংগঠনের নেতাকর্মীরা। জেলা আওয়ামী লীগ কার্যালয়ের সামনে থেকে দেশীয় অস্ত্র ও লাঠিসোঁটা নিয়ে তারা এই বিক্ষোভ মিছিল বের করে। পরে এটি জেলা শহরের বিভিন্ন সড়ক প্রদক্ষিণ করে শহরের চৌরঙ্গীতে গিয়ে শেষ হয়। শেখ হাসিনাকে পদত্যাগ করতে বাধ্য করা হয়েছে উল্লেখ করে মিছিলে বক্তারা বলেন, শেখ হাসিনা সরকারকে উৎখাত করতে বিএনপি-জামায়াত আন্দোলনের নামে ছাত্রদের দিয়ে দেশে অরাজকতা সৃষ্টি করেছে। সংযুক্ত ছবিটি উক্ত মিছিলের দৃশ্য।

অর্থাৎ, আলোচিত ভিডিওর সপ্তম ছবির ঘটনাটি সাম্প্রতিক সময়ের নয়।

ছবি যাচাই- ৮

এ বিষয়ে অনুসন্ধানে যুগান্তরের ওয়েবসাইটে ২০২৩ সালের ০২ নভেম্বর ‘রাজপথ দখলে দিনভর রাজধানীতে আওয়ামী লীগের মিছিল-শোডাউন’ শিরোনামে প্রকাশিত একটি প্রতিবেদন খুঁজে পাওয়া যায়। উক্ত প্রতিবেদনে সংযুক্ত ছবির সাথে আলোচিত ভিডিওর অষ্টম ছবিটির মিল রয়েছে।

Comparison: Rumor Scanner

প্রতিবেদন থেকে জানা যায়, সেসময়ে চলমান বিএনপি-জামায়াতের তিন দিনের অবরোধ কর্মসূচির দ্বিতীয় দিন, ২০২৩ সালের ০২ নভেম্বর রাজধানীতে মিছিল-শোডাউন করে আওয়ামী লীগ। বঙ্গবন্ধু অ্যাভিনিউয়ে আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় কার্যালয়সহ রাজধানীর প্রবেশপথ, বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ সড়ক, মোড়, অলিগলিতে সকাল থেকে অবস্থান ছিল ঢাকা মহানগর উত্তর-দক্ষিণ আওয়ামী লীগ, স্বেচ্ছাসেবক লীগ, যুবলীগসহ সহযোগী সংগঠনের নেতাকর্মীদের। বেলা বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে এসব স্থানে নেতাকর্মীদের উপস্থিতিও বাড়ে। এছাড়া বিভিন্ন সড়কে মোটরসাইকেল নিয়েও শোডাউন করতে দেখা গেছে ক্ষমতাসীন দলের নেতাকর্মীদের। এসব মিছিল-সমাবেশে লাঠিসোঁটা হাতে নিয়েও উপস্থিত থাকতে দেখা গেছে অনেককে। সংযুক্ত ছবিটি এমনই একটি মিছিলের দৃশ্য।

অর্থাৎ, আলোচিত ভিডিওর অষ্টম ছবির ঘটনাটি সাম্প্রতিক সময়ের নয়।

ছবি যাচাই- ৯

এ বিষয়ে অনুসন্ধানে ঢাকা টাইমস টোয়েন্টিফোরের ওয়েবসাইটে ২০২৩ সালের ০৮ নভেম্বর ‘বিএনপি-জামায়াতের অবরোধের বিরুদ্ধে বাড্ডায় আ.লীগের মিছিল’ শিরোনামে প্রকাশিত একটি প্রতিবেদন খুঁজে পাওয়া যায়। উক্ত প্রতিবেদনে সংযুক্ত ছবির সাথে আলোচিত ভিডিওর নবম ছবিটির মিল রয়েছে।

Comparison: Rumor Scanner

প্রতিবেদন থেকে জানা যায়, সেসময়ে চলমান বিএনপি-জামায়াতের ডাকা দুদিনব্যাপী অবরোধের বিরুদ্ধে সেদিন অবস্থান কর্মসূচি ও বিক্ষোভ মিছিল করেছে ঢাকা মহানগর উত্তর আওয়ামী লীগ। ঢাকা মহানগর উত্তর আওয়ামী লীগের সভাপতি শেখ বজলুর রহমান ও সাধারণ সম্পাদক এস এম মান্নান কচির নেতৃত্বে রাজধানীর বাড্ডার ইউলোপের নিচে শান্তি সমাবেশ করে ঢাকা মহানগর উত্তর আওয়ামী লীগ। সংযুক্ত ছবিটি উক্ত মিছিলের দৃশ্য।

অর্থাৎ, আলোচিত ভিডিওর নবম ছবির ঘটনাটি সাম্প্রতিক সময়ের নয়।

ছবি যাচাই- ১০

এ বিষয়ে অনুসন্ধানে বাংলাদেশ প্রতিদিনের ওয়েবসাইটে ২০২৪ সালের ১০ নভেম্বর আওয়ামী লীগের নৈরাজ্য রুখতে ডেমরায় বিএনপির মিছিল ও অবস্থান’’ শিরোনামে প্রকাশিত একটি প্রতিবেদন খুঁজে পাওয়া যায়। উক্ত প্রতিবেদনে সংযুক্ত ছবির সাথে আলোচিত ভিডিওর দশম ছবিটির মিল রয়েছে।

Comparison: Rumor Scanner

প্রতিবেদন থেকে জানা যায়, সেদিন শহীদ নুর হোসেন দিবস উপলক্ষে ডেমরা থানা বিএনপি ও অঙ্গসংগঠনের নেতাকর্মীদের উদ্যোগে মিছিল অনুষ্ঠিত হয়েছে। ডেমরা থানার প্রস্তাবিত কমিটির সভাপতি এস এম রেজা চৌধুরী সেলিম ও সাধারণ সম্পাদক মো. আনিসুজ্জামানের নেতৃত্বে মিছিলটি বিভিন্ন সড়ক প্রদক্ষিণ করে। এছাড়া আওয়ামী লীগের ‘নৈরাজ্য’ রুখতে ঢাকা-৫ আসনের বিএনপির প্রধান সমন্বয়ক নবী উল্লাহ নবীর সার্বিক তত্ত্বাবধানে সকাল থেকেই ডেমরা-রামপুরা সড়কের স্টাফ কোয়ার্টার মোড়ে অবস্থান নেয় ডেমরা থানা বিএনপির সকল স্তরের নেতাকর্মী। সংযুক্ত ছবিটি উক্ত মিছিলের দৃশ্য।

অর্থাৎ, আলোচিত ভিডিওর দশম ছবির ঘটনাটি সাম্প্রতিক সময়ের নয়।

ছবি যাচাই- ১১

এ বিষয়ে অনুসন্ধানে সময় টিভির ওয়েবসাইটে ২০২৩ সালের ০৬ নভেম্বর ‘নোয়াখালীতে আওয়ামী লীগের অবরোধবিরোধী মিছিল ও অবস্থান কর্মসূচি’’ শিরোনামে প্রকাশিত একটি প্রতিবেদন খুঁজে পাওয়া যায়। উক্ত প্রতিবেদনে সংযুক্ত ছবির সাথে আলোচিত ভিডিওর একাদশ ছবিটির মিল রয়েছে।

Comparison: Rumor Scanner

প্রতিবেদন থেকে জানা যায়, সেসময়ে চলমান বিএনপি-জামায়াতের ডাকা দেশব্যাপী হরতাল-অবরোধ কর্মসূচিতে হরতাল ও অবরোধ নামে ‘হত্যা, অগ্নিসন্ত্রাস ও নৈরাজ্য’ অবহিত করে এর প্রতিবাদে সেদিন নোয়াখালীতে মিছিল ও অবস্থান কর্মসূচি পালন করেছে জেলা আওয়ামী লীগ। প্রতিবাদ মিছিলটি মাইজদী জেলা আওয়ামী লীগের দলীয় কার্যালয়ের সামনে থেকে বের হয়ে শহরের প্রধান সড়ক প্রদক্ষিণ করে। এর আগে বিভিন্ন স্থান থেকে নেতাকর্মীরা এসে দলীয় কার্যালয়ের সামনে একত্রিত হয়। সংযুক্ত ছবিটি উক্ত মিছিলের দৃশ্য।

অর্থাৎ, আলোচিত ভিডিওর একাদশ ছবির ঘটনাটি সাম্প্রতিক সময়ের নয়।

ছবি যাচাই- ১২

এ বিষয়ে অনুসন্ধানে বাংলাদেশ সংবাদ সংস্থার ওয়েবসাইটে ২০২৫ সালের ০৪ মে ‘আওয়ামী লীগ নিষিদ্ধের দাবিতে রাজশাহীতে এনসিপির বিক্ষোভ মিছিল’ শিরোনামে প্রকাশিত একটি প্রতিবেদন খুঁজে পাওয়া যায়। উক্ত প্রতিবেদনে সংযুক্ত ছবির সাথে আলোচিত ভিডিওর দ্বাদশ ছবিটির মিল রয়েছে। 

Comparison: Rumor Scanner

প্রতিবেদন থেকে জানা যায়, আওয়ামী লীগের বিচার ও রাজনৈতিক কার্যক্রম নিষিদ্ধের দাবিতে সেদিন রাজশাহী মহানগরীতে বিক্ষোভ মিছিল ও সমাবেশ করে জাতীয় নাগরিক পাটি (এনসিপি)। নগরীর সাহেববাজার জিরোপয়েন্ট থেকে একটি বিক্ষোভ মিছিল বের করা হয়। মিছিলটি নগরীর বিভিন্ন সড়ক প্রদক্ষিণ করে জিরো পয়েন্টের জলিল বিশ্বাসের মার্কেটের সামনে গিয়ে শেষ হয়। সেখানে সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়। সমাবেশ থেকে আওয়ামী লীগের বিচার নিশ্চিত করার দাবি জানানো হয়। পাশাপাশি দলটির সব ধরনের রাজনৈতিক কার্যক্রম নিষিদ্ধেরও দাবি জানানো হয়। সংযুক্ত ছবিটি উক্ত মিছিলের দৃশ্য। 

অর্থাৎ, আলোচিত ভিডিওর দ্বাদশ ছবির ঘটনাটি সাম্প্রতিক সময়ের নয়। 

ছবি যাচাই- ১৩

এ বিষয়ে অনুসন্ধানে দেশ রূপান্তরের ওয়েবসাইটে ২০২৪ সালের ১০ নভেম্বর ‘আ.লীগ কার্যালয়ের সামনে শেখ হাসিনার ফাঁসির দাবিতে স্লোগান’’ শিরোনামে প্রকাশিত একটি প্রতিবেদন খুঁজে পাওয়া যায়। উক্ত প্রতিবেদনে সংযুক্ত ছবির সাথে আলোচিত ভিডিওর ত্রয়োদশ ছবিটির মিল রয়েছে। 

Comparison: Rumor Scanner

প্রতিবেদন থেকে জানা যায়, সেদিন আওয়ামী লীগ সভাপতি ও সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ফাঁসির দাবিতে বঙ্গবন্ধু অ্যাভিনিউতে অবস্থিত আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় কার্যালয় সামনে স্লোগান দেওয়া হয়৷ বিএনপির মহানগর দক্ষিণ, ছাত্রদল ও অঙ্গ সংগঠনের নেতাকর্মীরা মিছিল ও ছোট ছোট সমাবেশ করে ফাঁসির দাবি তুলছেন। তারা বিভিন্ন প্ল্যাকার্ড ও ফেস্টুন প্রদর্শন করে আওয়ামী লীগের বিচার দাবি করেন। সংযুক্ত ছবিটি উক্ত ঘটনার দৃশ্য। 

অর্থাৎ, আলোচিত ভিডিওর ত্রয়োদশ ছবির ঘটনাটি সাম্প্রতিক সময়ের নয়।

তাছাড়া, সেনাপ্রধান জেনারেল ওয়াকার-উজ-জামানের নির্দেশে ধানমন্ডিতে বিশাল আকারে আওয়ামী লীগের কোনো মিছিল আয়োজিত হলে এবং এই ঘটনাকে ঘিরে পুলিশ নিষ্ক্রিয় ভূমিকা পালন করলে তা গণমাধ্যমে গুরুত্বসহকারে প্রকাশিত হওয়া অবধারিত। কিন্তু অনুসন্ধানে গণমাধ্যম কিংবা সংশ্লিষ্ট কোনো বিশ্বস্ত সূত্রে আলোচিত দাবির সপক্ষে কোনো সংবাদ বা তথ্য পাওয়া যায়নি। 

সুতরাং, সেনাপ্রধানের নির্দেশে ধানমন্ডিতে আয়োজিত আওয়ামী মিছিল এবং এতে পুলিশের নিষ্ক্রিয় ভূমিকা পালনের দাবিটি মিথ্যা। 

তথ্যসূত্র

আরও পড়ুন

spot_img