সম্প্রতি অনলাইনে একটি ভিডিও প্রচার করে দাবি করা হয়েছে, ‘সীমাহীন দুৃর্নীতি ও অনিয়ম করায় নেতাদের ময়লা পানিতে ডুবানো হচ্ছে। প্রথমে তাদের লোহার একটি খাঁচায় ঢুকানো হয়। স্থানীয় ভাষায় লেখা একটি ব্যানার লাগানো হয়। এরপর নর্দমার পানিতে ডুবানো হয় তাদের। এসময় আশেপাশে সাধারণ মানুষের ভিড় জমে যায়। আলোচিত এই ঘটনা ঘটেছে ইন্দোনেশিয়ায়। ইতোমধ্যে এই ঘটনার একটি ভিডিও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়েছে।’

এই দাবিতে গণমাধ্যমে প্রচারিত প্রতিবেদন: কালবেলা (ফেসবুক), গ্লোবাল টিভি (ইউটিউব)।
একই দাবিতে ইনস্টাগ্রামে প্রচারিত পোস্ট দেখুন এখানে (আর্কাইভ)।
টিকটকে প্রচারিত পোস্ট দেখুন এখানে (আর্কাইভ)।
ফ্যাক্টচেক
রিউমর স্ক্যানার টিমের অনুসন্ধানে জানা যায়, প্রচারিত ভিডিওটি দুর্নীতিবাজ নেতাদের শাস্তি দেওয়ার কোনো আসল ঘটনার দৃশ্য নয়। প্রকৃতপক্ষে, কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা (এআই) প্রযুক্তির সাহায্যে তৈরি করা ভিডিওকে আলোচিত দাবিতে প্রচার করা হয়েছে।
এ বিষয়ে অনুসন্ধানে আলোচিত দাবিতে প্রচারিত ভিডিওটির একাধিক কি-ফ্রেম নিয়ে রিভার্স সার্চে ‘Pembasmi Tikus Kantor’ নামক একটি ইউটিউব চ্যানেলে গত ১২ আগস্টে প্রচারিত সম্ভাব্য মূল ভিডিওটি খুঁজে পাওয়া যায়। ভিতিওটির শিরোনামে বলা হয়, ‘প্রথমে আমরা এটি তুলব, তারপর আমরা প্রক্রিয়া করব’ (স্বয়ংক্রিয়ভাবে অনূদিত)

ভিডিওটির বর্ণনা অংশে ‘Altered or synthetic content’ এর লেবেল দেখতে পাওয়া যায় যেখানে বলা হয়, ‘শব্দ বা ভিজ্যুয়ালগুলো উল্লেখযোগ্যভাবে সম্পাদিত বা ডিজিটালি তৈরি করা হয়েছে’। (অনূদিত)

এছাড়া, ইউটিউব চ্যানেলটির বায়ো পর্যবেক্ষণ করলে তাতে লেখা পাওয়া যায়, এই চ্যানেলের সব ভিডিও এআই প্রযুক্তির সাহায্যে তৈরি। এছাড়াও, প্রচারিত ভিডিওটির সদৃশ আরো একাধিক ভিডিও চ্যানেলটিতে পাওয়া যায়।
পাশাপাশি আলোচিত দাবিতে প্রচারিত ভিডিওটি পর্যবেক্ষণ করলে মানুষের অঙ্গভঙ্গি, পারিপার্শ্বিক অবস্থাতেও অস্বাভাবিকতা পরিলক্ষিত হয়, যা সাধারণত কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা (এআই) প্রযুক্তির সাহায্যে তৈরি কনটেন্টে পরিলক্ষিত হয়।
এ বিষয়ে অধিকতর নিশ্চিত হতে এআই কনটেন্ট শনাক্তকারী প্ল্যাটফর্ম ‘হাইভ মডারেশন’ এ আলোচিত ভিডিওটি বিশ্লেষণ করলে, এটি ভুয়া হওয়ার সম্ভাবনা ৯৯.৯ শতাংশ দেখা যায়।

এ থেকে নিশ্চিত হওয়া যায় যে প্রচারিত ভিডিওটি মূলত কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা বা এআই প্রযুক্তির সাহায্যে তৈরি।
সুতরাং, ইন্দোনেশিয়ায় দুর্নীতিবাজ নেতাদের ময়লা পানিতে ডুবানোর আসল ঘটনার দৃশ্য দাবিতে এআই দিয়ে তৈরি ভিডিও প্রচার করা হয়েছে; যা মিথ্যা।
তথ্যসূত্র
- Pembasmi Tikus Kantor – Kita Angkat dulu Mau Kita proses
- Hive Moderation
- Rumor Scanner’s analysis