আজ (২১ জুলাই) দুপুরে রাজধানীর উত্তরার দিয়াবাড়ি এলাকায় মাইলস্টোন স্কুল অ্যান্ড কলেজের একটি ভবনে বাংলাদেশ বিমানবাহিনীর একটি এফ-৭ যুদ্ধবিমান বিধ্বস্তের ঘটনা ঘটে। এ ঘটনার পর সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে বিধ্বস্ত যুদ্ধবিমানের দৃশ্য দাবিতে অন্তত সাতটি ভিন্ন ছবি ছড়িয়ে পড়েছে।
প্রথম ছবিসহ ফেসবুকে প্রচারিত দাবি দেখুন: এখানে, এখানে, এখানে।
একই ছবিসহ গণমাধ্যমে প্রচারিত প্রতিবেদন দেখুন: সময়ের আলো (ফেসবুক), একুশে টিভি।

দ্বিতীয় ছবিসহ ফেসবুকে প্রচারিত দাবি দেখুন: এখানে, এখানে।
একই ছবিসহ অন্যান্য সামাজিক মাধ্যমে প্রচারিত দাবি দেখুন: ইন্সটাগ্রাম, টিকটক, এক্স (সাবেক টুইটার), থ্রেডস, ইউটিউব।
এই ছবিসহ বিদেশি গণমাধ্যমে প্রচারিত প্রতিবেদন দেখুন: ডেইলি স্টার (যুক্তরাজ্য)।

তৃতীয় ছবিসহ ফেসবুকে প্রচারিত দাবি দেখুন: এখানে।
একই ছবিসহ অন্যান্য সামাজিক মাধ্যমে প্রচারিত দাবি দেখুন: ইউটিউব,

চতুর্থ ছবিসহ ফেসবুকে প্রচারিত দাবি দেখুন: এখানে।

পঞ্চম ছবিসহ ফেসবুকে প্রচারিত দাবি দেখুন: এখানে।

ষষ্ট ছবিসহ ফেসবুকে প্রচারিত দাবি দেখুন: এখানে।
একই ছবিসহ গণমাধ্যমে প্রচারিত প্রতিবেদন এখুন: জনকণ্ঠ।

সপ্তম ছবিসহ ফেসবুকে প্রচারিত দাবি দেখুন: এখানে, এখানে।

ফ্যাক্টচেক
রিউমর স্ক্যানার টিমের অনুসন্ধানে জানা যায়, আলোচিত সাতটি ছবি উত্তরায় বিধ্বস্ত হওয়া যুদ্ধবিমানের দৃশ্যের নয়। বরং, ছবিগুলো কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা (এআই) প্রযুক্তি ব্যবহার করে তৈরি করা হয়েছে।
এই বিষয়ে অনুসন্ধানে জানা যায়, মাইলস্টোন কলেজে বিধ্বস্ত হওয়া বিমানটি ছিল বাংলাদেশ বিমানবাহিনীর একটি এফ-৭ যুদ্ধবিমান। এই তথ্যের ভিত্তিতে ছড়িয়ে পড়া সাতটি আলোচিত ছবি পর্যবেক্ষণ করে দেখা যায়, সেগুলোর সঙ্গে এফ-৭ যুদ্ধবিমানের (১,২) গঠনগত বেশ কিছু পার্থক্য রয়েছে।

এছাড়া, সাতটি ছবির প্রতিটিতেই এআই প্রযুক্তি ব্যবহারের দেখা যায়। প্রথম ছবিতে আগুন ও ধোঁয়ার গঠন অস্বাভাবিকভাবে তৈরি, যা বাস্তবতার সঙ্গে সামঞ্জস্যপূর্ণ নয়। দ্বিতীয় ছবিতে আগুন ও ধোঁয়ার অসামঞ্জস্যের পাশাপাশি অ্যাম্বুলেন্সের সামনের লেখা বিকৃতভাবে গঠিত হয়েছে, যা সাধারণভাবে এআই-জেনারেটেড ছবিতে দেখা যায়। তৃতীয় ছবিতে একটি বিমানকে সুউচ্চ ভবনে আঘাত করতে দেখা গেলেও মাইলস্টোন কলেজে এমন কোনো ভবন নেই। চতুর্থ ছবিতে দুটি বিমানের ধ্বংসাবশেষ দেখা গেলেও প্রকৃতপক্ষে সেখানে একটি মাত্র বিমান বিধ্বস্ত হয়েছিল। পঞ্চম ছবিতে ‘Milestone School & College’ লেখা একটি ভবনের ছাদে বাংলাদেশের পতাকাবাহী একটি বিমান আগুনে জ্বলতে দেখা যায়, তবে এই ছবিতেও আগুনের গঠন অস্বাভাবিক। ষষ্ঠ ছবিতে ইংরেজিতে লেখা স্কুলের নামে ‘&’ শব্দটি দুইবার ব্যবহৃত হয়েছে এবং মাঝখানের ‘School’ শব্দটি অনুপস্থিত। সপ্তম ছবিতে ইংরেজিতে লেখা ‘School’ ও ‘College’ শব্দে বানান ভুল দেখা যায়, যা এআই-নির্মিত ছবিতে প্রায়শই দেখা যায়।
বিষয়টি আরও নিশ্চিত করতে পাঁচটি ছবিই এআই কনটেন্ট শনাক্তকারী ওয়েবসাইট সাইটইঞ্জিনে পরীক্ষা করা হয়। ওয়েবসাইটটির বিশ্লেষণে দেখা যায়, প্রতিটি ছবির ক্ষেত্রেই এআই দিয়ে তৈরি হওয়ার সম্ভাবনা ৯৯ শতাংশ।
সুতরাং, এআই দিয়ে তৈরি পাঁচটি ছবিকে উত্তরায় যুদ্ধবিমান বিধ্বস্তের ঘটনার দৃশ্য দাবিতে প্রচার করা হয়েছে, যা সম্পূর্ণ মিথ্যা।
তথ্যসূত্র
- Rumor Scanner’s analysis.
- Wikipedia: Bangladesh Air Force F-7
- Beyond Limits: Facebook Post
- Sightengine.
হালনাগাদ
২২ জুলাই, ২০২৫ : এই প্রতিবেদন প্রকাশের পর ঘটনাটি ঘিরে এআই দিয়ে তৈরি আরও দুইটি ছবি ছড়িয়ে পড়ায়, সংশ্লিষ্ট দাবিগুলো পরবর্তী সময়ে প্রতিবেদনে যুক্ত করা হয়েছে।