সম্প্রতি, সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার কন্যা সায়মা ওয়াজেদ পুতুলের একটি ভিডিও প্রচারিত হয়েছে। ভিডিওটিতে তাকে বলতে শোনা যায়, “আমাকে নাকি তারেক রহমান ও তার স্ত্রী পুতুল বানিয়ে শোকেসে রাখতে চান, সে কারণেই তারা আমাকে দেশে আসতে বলছেন।” তিনি আরও বলেন, যখন তিনি দেশে ফিরবেন, তখন দেশের মানুষ তাকে ফুলের মালা পরিয়ে বরণ করে নেবে এবং রানি বানিয়ে চেয়ারে বসাবে।

ফেসবুকে প্রচারিত পোস্ট দেখুন এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ)।
টিকটকে প্রচারিত পোস্ট দেখুন এখানে (আর্কাইভ)।
ফ্যাক্টচেক
রিউমর স্ক্যানার টিমের অনুসন্ধানে দেখা যায়, পুতুলের বক্তব্য দাবিতে প্রচারিত ভিডিওটি আসল নয়। প্রকৃতপক্ষে, ডিপফেক প্রযুক্তি ব্যবহার করে ভুয়া এই ভিডিও তৈরি করা হয়েছে।
এ বিষয়ে অনুসন্ধানে মূলধারার গণমাধ্যম ও আওয়ামী লীগ সংশ্লিষ্ট নির্ভরযোগ্য সূত্রে এই ভিডিওর বিষয়ে কোনো তথ্য মেলেনি। পুতুলের লিংকডইন এবং এক্স অ্যাকাউন্টে এমন ভিডিওর অস্তিত্ব মেলেনি।
পরবর্তী সময়ে, ভিডিওটির সূত্রপাত অনুসন্ধানে ‘Mitol Ahmed Sabuj’ নামের একটি ফেসবুক অ্যাকাউন্টে গত ২০ অক্টোবর একই ভিডিওটি খুঁজে পাওয়া যায়।

ভিডিওটির ক্যাপশনে বলা হয়, ‘বিদেশের মাটিতে জননেত্রী শেখ হাসিনার মেয়ে পুতুল সমাবেশ করলেন, তিনি কড়া জবাব দিলেন তারেক জিয়াকে। পুতুল কে পুতুল বানিয়ে শোকেসে রাখতে চেয়েছেন তারেক জিয়া। সে কথার জবাব দিলেন পুতুল, নেতাকর্মীকে ভিডিও শেয়ার করে পৌছে দিতে বললেন সবার কাছে, যাতে করে তার বার্তা সবাই শুনতে এবং জানতে পারে। এমন নেত্রীই তো সবাই চেয়েছিলো, অসাধারণ!’
উক্ত ফেসবুক অ্যাকাউন্টটি পর্যবেক্ষণ করে দেখা যায় এটি থেকে আরও অসংখ্য এ ধরনের ভিডিও (১, ২, ৩) প্রচার করা হয়ে হয়েছে।
এছাড়া, প্রচারিত ভিডিওটি পর্যবেক্ষণ করলে ভিডিওতে থাকা পুতুল সদৃশ ব্যক্তির মুখাবয়বের অস্বাভাবিকতা পরিলক্ষিত হয়, যা সাধারণত কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা প্রযুক্তি দিয়ে তৈরি কনটেন্টে পরিলক্ষিত হয়।
অনুসন্ধানে, অনলাইন নিউজ পোর্টাল ডিএমপি নিউজে ২০২০ সালের ১ ডিসেম্বর প্রকাশিত একটি প্রতিবেদনে পুতুলের একই পোশাকে বক্তব্য প্রদানরত একটি ছবি পাওয়া যায়। এছাড়া দেশের বিভিন্ন গণমাধ্যমে বিভিন্ন সময়ে প্রকাশিত প্রতিবেদনেও (১,২,৩) একই ছবিটি ব্যবহার করা হয়েছে।

অর্থাৎ, এটা নিশ্চিত যে ভিডিওটি সাম্প্রতিক সময়ের নয়।
বিষয়টি আরও নিশ্চিত হতে কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তার সহায়তায় তৈরি কনটেন্ট শনাক্তকারী টুল ‘ডিপফেক-ও-মিটার’ এর ‘AVSRDD (2025)’ মডেলের মাধ্যমে ভিডিওটি পরীক্ষা করে রিউমর স্ক্যানার। মডেলটির বিশ্লেষণে দেখা যায়, ভিডিওটি এআই দিয়ে তৈরি হওয়ার সম্ভাবনা প্রায় ৯৯ শতাংশ।
সুতরাং, এআই দিয়ে তৈরি ডিপফেক ভিডিওকে পুতুলের বক্তব্যের দৃশ্য দাবিতে প্রচার করা হয়েছে; যা মিথ্যা।
তথ্যসূত্র
- DeepFake-o-meter: AVSRDD (2025)





