সম্প্রতি, ‘ব্রেকিং নিউজ: মহামান্য রাষ্ট্রপতির নির্দেশে গ্রেফতার উপদেষ্টা আসিফ নজরুল ভিডিও দেখুন কমেন্টে’ শীর্ষক একটি দাবি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে প্রচার করা হয়েছে।

উক্ত দাবিতে ফেসবুকে প্রচারিত পোস্ট দেখুন এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ) ।
ফ্যাক্টচেক
রিউমর স্ক্যানার টিমের অনুসন্ধানে জানা যায়, সম্প্রতি রাষ্ট্রপতি মো. সাহাবুদ্দিন চুপ্পুর নির্দেশে অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের আইন উপদেষ্টা অধ্যাপক আসিফ নজরুলকে গ্রেফতার করা হয়নি। প্রকৃতপক্ষে, কোনো তথ্য প্রমাণ ছাড়াই আলোচিত দাবিটি প্রচার করা হয়েছে।
এ বিষয়ে অনুসন্ধানে দেখা যায়, ফেসবুকের উক্ত দাবির কতিপয় পোস্টে একটি ব্লগপোস্টের লিংক সূত্র হিসেবে দেওয়া হয়েছে। রিউমর স্ক্যানারের বিশ্লেষণে sadhinnews247 নামের ব্লগস্পটের বিনামূল্যের ডোমেইনের এই সাইটটি একটি ভূঁইফোড় সাইট বলে প্রতীয়মান হয়। সাইটে ‘রাষ্ট্রপতি সাহাবুদ্দিন আহমেদের নির্দেশে গ্রেফতার অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের উপদেষ্টা আসিফ নজরুল’ শীর্ষক কথিত দাবির বিষয়ে একটি সংবাদ প্রকাশ করা হয়েছে এবং প্রকাশকাল ২০২৫ সালের ২২ অক্টোবর উল্লেখ রয়েছে।

কথিত এই সংবাদে দাবি করা হয়, অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের উপদেষ্টা ও বিশিষ্ট আইনজীবী ড. আসিফ নজরুলকে আজ (২২ অক্টোবর) দুপুর ১২টার দিকে রাষ্ট্রপতি মোঃ সাহাবুদ্দিন আহমেদের সরাসরি নির্দেশে গ্রেফতার করেছে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী। রাষ্ট্রপতির কার্যালয় থেকে পাঠানো একটি গোপন নির্দেশনা অনুযায়ী, ডিবি পুলিশের একটি বিশেষ টিম ধানমন্ডির একটি বাড়িতে অভিযান চালিয়ে তাকে আটক করে। তার বিরুদ্ধে রাষ্ট্রবিরোধী ষড়যন্ত্র, সরকারবিরোধী উস্কানি এবং সংবিধানবিরোধী মন্তব্যের অভিযোগ আনা হয়েছে। ডিবি কর্মকর্তাদের বরাতে বলা হয়, গত কয়েক সপ্তাহ ধরে ড. আসিফ নজরুল সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ও কিছু সংবাদমাধ্যমে সরকারের কর্মকাণ্ড নিয়ে বিতর্কিত মন্তব্য করছিলেন, যা রাষ্ট্রের স্থিতিশীলতা নষ্ট করতে পারে বলে অভিযোগ উঠেছে। এক তদন্ত কর্মকর্তা বরাতে বলা হয়, রাষ্ট্রপতির প্রত্যক্ষ অনুমোদনেই গ্রেফতার অভিযান পরিচালনা করা হয়েছে। আমরা ইতোমধ্যে তার ব্যবহৃত কম্পিউটার ও মোবাইল জব্দ করেছি। আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর বরাতে বলা হয়, আসিফ নজরুলকে সেদিন রাতেই আদালতে তোলা হতে পারে।
এ বিষয়ে অনুসন্ধানে আসিফ নজরুলের অফিশিয়াল ফেসবুক পেজে তার গ্রেফতারের বিষয়ে কোনো পোস্ট খুঁজে পাওয়া যায়নি। আসিফ নজরুলের মতো ব্যক্তি গ্রেফতার হলে উক্ত বিষয়ে দেশের গণমাধ্যমগুলোতে ঢালাওভাবে সংবাদ প্রচার হতো। কিন্তু মূলধারার গণমাধ্যম কিংবা অন্য কোনো নির্ভরযোগ্য সূত্র এমন তথ্য খুঁজে পাওয়া যায়নি।
উল্লেখ্য, রিউমর স্ক্যানারের ইনভেস্টিগেশন ইউনিট এসব ফ্রি ডোমেইনের সাইটগুলো নিয়ে বিস্তারিত একটি প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে যেখানে দেখা গেছে এসব ফ্রি ডোমেইনের পেছনে সংঘবদ্ধ চক্র কাজ করছে।
সুতরাং, রাষ্ট্রপতির নির্দেশে আসিফ নজরুল গ্রেফতারের দাবিতে প্রচারিত তথ্যটি ভুয়া ও বানোয়াট।
তথ্যসূত্র
- Dr. Asif Nazrul – Facebook Page
- Rumor Scanner’s own analysis