বিগত আওয়ামী লীগ সরকারের সাড়ে ১৫ বছরের শাসনামলের গুম-নির্যাতনের ঘটনায় মানবতাবিরোধী অপরাধের দুটি মামলায় এবং জুলাই গণ-অভ্যুত্থানের সময় হত্যাকাণ্ডের ঘটনায় করা একটি মামলায় মোট ২৫ জন সাবেক-বর্তমান সেনা কর্মকর্তার বিরুদ্ধে ৮ অক্টোবর গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করেন ট্রাইব্যুনাল। সেদিনই এই তিন মামলায় ট্রাইব্যুনালে ফরমাল চার্জ বা আনুষ্ঠানিক অভিযোগ দাখিল করেছিল প্রসিকিউশন। ১১ অক্টোবর বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর পক্ষ থেকে সংবাদ সম্মেলনে জানানো হয়, ১৫ জন কর্মকর্তাকে সেনা হেফাজতে নেওয়া হয়েছে। তাদের মধ্যে একজন কর্মকর্তা অবসর প্রস্তুতিমূলক ছুটিতে (এলপিআর) আছেন। ১২ অক্টোবর ঢাকা সেনানিবাসের একটি ভবনকে সাময়িকভাবে কারাগার ঘোষণা করে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় প্রজ্ঞাপন জারি করে। গত ২২ অক্টোবর মানবতাবিরোধী অপরাধের পৃথক তিন মামলার আসামি ১৫ সেনা কর্মকর্তাকে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল থেকে ঢাকা সেনানিবাসের সাবজেলে নেওয়া হয়েছে। এরই প্রেক্ষিতে গত ২২ অক্টোবর থেকে, “সেনা কর্মকর্তাদের নিঃশর্ত মুক্তি চায় জামায়াতে ইসলামী” শীর্ষক মন্তব্য জামায়াতে ইসলামীর নায়েবে আমির সৈয়দ আবদুল্লাহ মো. তাহের করেছেন দাবিতে জাতীয় দৈনিক প্রথম আলোর ডিজাইন সম্বলিত একটি ফটোকার্ড সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে প্রচার করা হয়েছে।

এরূপ দাবিতে ফেসবুকে প্রচারিত পোস্ট দেখুন এখানে (আর্কাইভ)।
ফ্যাক্টচেক
রিউমর স্ক্যানার টিমের অনুসন্ধানে জানা যায়, ‘সেনা কর্মকর্তাদের নিঃশর্ত মুক্তি চায় জামায়াতে ইসলামী’ শীর্ষক উক্ত মন্তব্য করেননি জামায়াতে ইসলামীর নায়েবে আমির সৈয়দ আবদুল্লাহ মো. তাহের এবং প্রথম আলোও এমন কোনো ফটোকার্ড বা সংবাদ প্রকাশ করেনি। প্রকৃতপক্ষে, ডিজিটাল প্রযুক্তির সহায়তায় প্রথম আলো’র ফটোকার্ড ডিজাইনের আদলে ফটোকার্ড তৈরি করে ভুয়া এই দাবিটি প্রচার করা হয়েছে।
এ বিষয়ে অনুসন্ধানে আলোচিত ফটোকার্ডে প্রথম আলো’র লোগো ও তারিখ হিসেবে ২২ অক্টোবর, ২০২৫ উল্লেখ থাকার সূত্রে সংবাদমাধ্যমটির ওয়েবসাইট এবং ফেসবুক পেজ পর্যবেক্ষণ করলে সাম্প্রতিক সময়ে উক্ত তথ্য সংবলিত কোনো ফটোকার্ড বা সংবাদ খুঁজে পাওয়া যায়নি। সংবাদমাধ্যমটির ওয়েবসাইটেও উক্ত দাবির বিষয়ে কোনো প্রতিবেদন খুঁজে পাওয়া যায়নি।
পাশাপাশি অন্য গণমাধ্যম এবং বিশ্বস্ত সূত্রগুলোর বরাতেও জামায়াতে ইসলামীর নায়েবে আমির সৈয়দ আবদুল্লাহ মো. তাহেরের উক্ত মন্তব্য সম্বলিত কোনো তথ্য বা সংবাদ পাওয়া যায়নি৷
অনুসন্ধানে প্রথম আলো’র ফেসবুক পেজে এ বিষয়ে গত ২২ অক্টোবরে প্রচারিত একটি পোস্ট পাওয়া যায়। আলোচিত ফটোকার্ডটির বিষয়ে পোস্টে বলা হয়, ‘প্রথম আলোর নামে ছড়ানো এই তথ্য ও কার্ডটি ভুয়া। আমাদের প্রকাশিত নয়।’

সুতরাং, “সেনা কর্মকর্তাদের নিঃশর্ত মুক্তি চায় জামায়াতে ইসলামী : তাহের” শীর্ষক দাবিতে প্রথম আলো’র নামে প্রচারিত ফটোকার্ডটি ভুয়া।
তথ্যসূত্র
- Rumor Scanner’s analysis
- Prothom Alo – Facebook Post