সম্প্রতি ‘ভারতে ব্লাড ক্যান্সারের টিকা বলে স্কুলে মুসলিম মেয়েদের দেওয়া হচ্ছে বন্ধা বানানোর ইঞ্জেকশন’ ক্যাপশনে একটি ভিডিও ইন্টারনেটে বিভিন্ন প্লাটফর্মে প্রচার করা হয়েছে। প্রচারিত ভিডিওতে একটি কক্ষের ভেতরে শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের ইউনিফর্ম পরা বেশকিছু নারী শিক্ষার্থীকে কাশতে এবং হাঁপাতে দেখা যায়।

উক্ত দাবিতে ফেসবুকে প্রচারিত পোস্ট দেখুন এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ) এবং এখানে (আর্কাইভ)৷
ইন্সটাগ্রামে প্রচারিত পোস্ট দেখুন এখানে (আর্কাইভ)।
ফ্যাক্টচেক
রিউমর স্ক্যানার টিমের অনুসন্ধানে জানা যায়, প্রচারিত ভিডিওটি ভারতে ব্লাড ক্যান্সারের টিকা বলে স্কুলে মুসলিম মেয়েদের বন্ধ্যা বানানোর ইনজেকশন দেওয়ার ঘটনার নয়৷ প্রকৃতপক্ষে, ২০২৪ সালে পাকিস্তানের আজাদ কাশ্মীরে পুলিশের টিয়ারশেলে আহত শিক্ষার্থীদের ভিডিওকে উক্ত দাবিতে প্রচার করা হয়েছে।
এ বিষয়ে অনুসন্ধানে Baaghi নামক ইউটিউব চ্যানেলে ২০২৪ সালের ০৯ মে ‘Police fired tear gas at girls’ schools in Dadyal’ শিরোনামে প্রকাশিত একটি ভিডিও খুঁজে পাওয়া যায়। উক্ত ভিডিওর সাথে আলোচিত দাবিতে প্রচারিত ভিডিওটির সাদৃশ্য রয়েছে।
উক্ত ভিডিওটির শিরোনামে উল্লেখ করা হয়, ডডিয়ালে বালিকা বিদ্যালয়ে পুলিশ টিয়ারশেল নিক্ষেপ করেছে। এই ভিডিওটি উক্ত ঘটনার পরবর্তী দৃশ্য।
উল্লেখিত তথ্যের সূত্র ধরে পাকিস্তানের গণমাধ্যম এবিএন নিউজের সাংবাদিক বাশারাত রাজার এক্স অ্যাকাউন্টে ২০২৪ সালের ০৯ মে প্রকাশিত আলোচিত ভিডিওর অনুরূপ একটি ভিডিও খুঁজে পাওয়া যায়।

উক্ত পোস্টের ক্যাপশনে বলা হয়, এটিও ডডিয়ালের একটি ভিডিও ক্লিপ, যেখানে পুলিশ এবং বেসামরিক পোশাকে থাকা অজ্ঞাতপরিচয়ের ব্যক্তিরা স্কুলগুলোতে নির্বিচারে টিয়ার গ্যাস ব্যবহার করে, যার ফলে বার্ষিক পরীক্ষা নিয়ে ব্যস্ত ছাত্রীরা জ্ঞান হারায়।
এ বিষয়ে পাকিস্তানের গণমাধ্যম Dawn এর ওয়েবসাইটে ২০২৪ সালের ১০ মে ‘Police crackdown in AJK prompts ‘shutter-down strike’ call’ শিরোনামে প্রকাশিত প্রতিবেদন থেকে জানা যায়, মিরপুরের ডডিয়াল তহসিলে রাতভর অভিযানে এক ডজনেরও বেশি কর্মীকে আটকের প্রতিবাদে ব্যবসায়ীরা মকবুল বাট শহীদ চকে বিক্ষোভ করার পর সংঘর্ষের সূত্রপাত ঘটে। পুলিশের ছোড়া টিয়ারগ্যাসের শেলগুলো একটি স্কুলেও গিয়ে পড়ে, যার ফলে বেশ কয়েকজন নারী শিক্ষার্থীর অবস্থার অবনতি ঘটে।
অর্থাৎ, আলোচিত ভিডিওর ঘটনাটি ভারতে ঘটেনি।
সুতরাং, ভারতে মুসলিম মেয়েদের বন্ধ্যা বানানোর ইঞ্জেকশন দেওয়ার ভিডিও দাবিতে পাকিস্তানের আজাদ কাশ্মীরে পুলিশের টিয়ারশেলে আহত নারী শিক্ষার্থীদের পুরোনো ভিডিও প্রচার করা হয়েছে; যা মিথ্যা।
তথ্যসূত্র
- Baaghi – Police fired tear gas at girls’ schools in Dadyal
- Basharat Raja – X Post
- Dawn – Police crackdown in AJK prompts ‘shutter-down strike’ call