সম্প্রতি, ‘এই মুহূর্তে মধ্যে রাতে রাজধানীতে কলেজ ছাত্রীকে ধর্ষণ করে রাস্তায় ফেলে গেছে দুর্বৃত্তরা। পরে পথচারীরা মেয়েটিকে অজ্ঞান অবস্থায় উদ্ধার করে। প্রশাসনকে ফোন দিলেও ঘটনাস্থলে উপস্থিত হয়নি। নতুন বাংলাদেশ উপভোগ করছে দেশের জনগণ।’- শীর্ষক ক্যাপশনে একটি ভিডিও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়েছে।

ফেসবুকে প্রচারিত কিছু পোস্ট দেখুন এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ)।
ইনস্টাগ্রামে প্রচারিত ভিডিও দেখুন এখানে (আর্কাইভ)।
ফ্যাক্টচেক
রিউমর স্ক্যানার টিমের অনুসন্ধানে জানা যায়, প্রচারিত ভিডিওটি রাজধানীতে কলেজ ছাত্রীকে ধর্ষণের পর রাস্তায় ফেলা যাওয়ার দৃশ্য নয়। এমনকি ভিডিওটি ঢাকারও নয়। প্রকৃতপক্ষে, গত ০৫ অক্টোবর মানিকগঞ্জের সিংগাইর উপজেলা পরিষদের সামনে মিম নামের এক নারী অজ্ঞান হয়ে পড়েন৷ পরবর্তীতে ইউএনও এবং পুলিশের সহযোগিতায় তাকে পরিবারের কাছে হস্তান্তর করা হয়। সেখানে ধর্ষণের মত কোনো ঘটনাই ঘটেনি।
এ বিষয়ে অনুসন্ধানে ‘Dhamrai News24.com’ নামক একটি ফেসবুক পেজ থেকে গত ০৫ অক্টোবর রাতে প্রচারিত একটি ভিডিও পাওয়া যায়। উক্ত ভিডিওর সাথে আলোচিত ভিডিওর মিল রয়েছে।

উক্ত ভিডিওর ক্যাপশনে দাবি করা হয়েছে, মানিকগঞ্জের সিংগাইর উপজেলার সামনে পড়ে আছে এক তরুণী। পরিচয় জানা যায়নি। ধারণা করা হচ্ছে, চেতনানাশক কিছু খাইয়ে ফেলে রেখে গেছে।
এই পোস্টের সূত্র ধরে সিংগাইর উপজেলা নির্বাহী অফিসার এবং সিংগাইর থানার সাথে যোগাযোগ করে রিউমর স্ক্যানার টিম।
সিংগাইর উপজেলা নির্বাহী অফিসার মো. কামরুল হাসান সোহাগ বলেন, ‘এটি সিংগাইর উপজেলা পরিষদের সামনের ঘটনা। রাস্তায় অচেতন হয়ে পড়ে থাকা নারীর নাম মিম৷ স্বামীর নাম সোহান। বাবার নাম জলিল এবং মায়ের নাম হাজেরা। ধর্ষণের কোন ঘটনা ঘটেনি। দাবিটি গুজব।’
সিংগাইর থানার পুলিশ পরিদর্শক জে. ও. এম. তৌফিক আজম বলেন, ‘এটি গত ০৫ অক্টোবর (রবিবার) সন্ধ্যার দিককার ঘটনা। নারীটি অচেতন হয়ে রাস্তায় পড়ে যান। পরে তাকে পরিবারের কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে।’
বিষয়টি আরও অধিকতর যাচাইয়ের জন্য অচেতন হয়ে পড়ে যাওয়া নারী মিমের পরিবারের সাথে যোগাযোগ করে রিউমর স্ক্যানার টিম। মিমের মা হাজেরা জানান, গত ০৫ অক্টোবর মিম কাজ থেকে (মিম একটি হাসপাতালে আয়ার কাজ করেন) ফেরার পথে অজ্ঞান হয়ে উপজেলা পরিষদের সামনে পড়ে যান। পরে স্থানীয় মেম্বারের মাধ্যমে তাদের জানানো হলে মিমকে উদ্ধার করে বাড়িতে নিয়ে আসা হয়। বর্তমানে মিম বাড়িতে আছেন।
অর্থাৎ, প্রচারিত ভিডিওটি রাজধানীর কোনো স্থানের নয়। এমনকি উক্ত ঘটনায় ধর্ষণের কোনো ঘটনাও ঘটেনি।
সুতরাং, সম্প্রতি মানিকগঞ্জের এক নারী অজ্ঞান হয়ে পড়ে যাওয়ার দৃশ্যকে ঢাকায় কলেজ ছাত্রীকে ধর্ষণ করে রাস্তায় ফেলে গেছে দুর্বৃত্তরা দাবিতে প্রচার করা হচ্ছে; যা সম্পূর্ণ মিথ্যা।
তথ্যসূত্র
- Dhamrai News24.com- Facebook Post
- Singair- UNO Officer Statement
- Singair Police Station- OC Statement
- Mim’s Mother- Statement