সম্প্রতি, চাঁদা গ্রহণে বাধা দেওয়ার কারণে বিএনপির এক নেতা প্রকাশ্যে একজন সাংবাদিককে মারধর করছেন দাবিতে একটি ভিডিও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়েছে। ভিডিওতে বুম (মাইক্রোফোনযুক্ত দণ্ড) হাতে থাকা একজন ব্যক্তিকে আরেকজন ব্যক্তির কাছ থেকে চড় খেতে দেখা যায়।

এই দাবিতে ফেসবুকে প্রচারিত কিছু পোস্ট দেখুন: এখানে, এখানে, এখানে, এখানে।
একই দাবিতে ইন্সটাগ্রামে প্রচারিত পোস্ট দেখুন: এখানে, এখানে।
ফ্যাক্টচেক
রিউমর স্ক্যানার টিমের অনুসন্ধানে জানা যায়, আলোচিত ভিডিওটি বাংলাদেশের নয়। প্রকৃতপক্ষে, গত সেপ্টেম্বরে নেপালের জেন-জি আন্দোলনের সময় ভারতীয় গণমাধ্যম রিপাবলিক নিউজের একজন সাংবাদিককে আন্দোলনকে বিকৃতভাবে উপস্থাপনের অভিযোগে নেপালের আন্দোলনকারীরা মারধর করেন। এটি সেই ঘটনারই দৃশ্য।
অনুসন্ধানের শুরুতে আলোচিত ভিডিওটি পর্যবেক্ষণ করে দেখা যায়, মারধরের শিকার ব্যক্তির হাতে থাকা বুমে ভারতীয় টেলিভিশন চ্যানেল রিপাবলিক ভারত-এর লোগো রয়েছে।
বিষয়টির সূত্র ধরে অনুসন্ধানে ‘lafdavlog’ নামের একটি ইন্সটাগ্রাম প্রোফাইলে একই দৃশ্যসংবলিত ভিডিও পাওয়া যায়। ভিডিওর ক্যাপশনে দাবি করা হয়, নেপালের জেন-জি আন্দোলনের সময় রিপাবলিক ভারত চ্যানেলের সাংবাদিক রাঘবেন্দ্র পাণ্ডে মারধরের শিকার হয়েছেন। ভিডিওটি সেই ঘটনারই অংশ।

গত ১২ সেপ্টেম্বর ভারতীয় টেলিভিশন ভারত এক্সপ্রেস-এর ওয়েবসাইটে প্রকাশিত প্রতিবেদনে জানানো হয়, নেপালের জেন-জি আন্দোলনের সময় ভারতীয় সাংবাদিকদের সঙ্গে দুর্ব্যবহারের ঘটনা বেড়েছে। ওই দিন রিপাবলিক নিউজের সাংবাদিক রাঘবেন্দ্র পাণ্ডেকে এক বিক্ষোভকারী চড় মারেন এবং আইএএনএস-এর ক্যামেরাপার্সন মান পঙ্কজের সঙ্গে ধাক্কাধাক্কি হয়। বিক্ষোভকারীদের অভিযোগ, ভারতীয় গণমাধ্যম তাদের আন্দোলন বিকৃতভাবে উপস্থাপন করছে। এর আগের দিন এক নারী সাংবাদিককেও প্রতিবেদন করতে বাধা দেওয়া হয়।
রাঘবেন্দ্র পাণ্ডের নাম ও কর্মস্থলের সূত্র ধরে তার এক্স (পূর্বে টুইটার) প্রোফাইল শনাক্ত করা যায়। সেখানে থাকা ছবিগুলোর সঙ্গে মারধরের ভিডিওতে দেখা ব্যক্তির চেহারা তুলনা করলে মিল লক্ষ্য করা যায়।
অর্থাৎ, আলোচিত ভিডিওটি বাংলাদেশের নয় এবং এর সাথে বিএনপিরও কোনো সংশ্লিষ্টতা নেই।
উল্লেখ্য, গত সেপ্টেম্বর মাসে দুর্নীতি, স্বজনপ্রীতি এবং সরকারের সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম নিষেধাজ্ঞার বিরুদ্ধে জেনারেশন জি-র তরুণদের নেতৃত্বে একটি আন্দোলন শুরু হয়। আন্দোলনটি দ্রুত ছড়িয়ে পড়ে এবং কয়েক দিনের মধ্যেই প্রধানমন্ত্রী কে পি শর্মা অলি পদত্যাগ করতে বাধ্য হন। পরে অন্তর্বর্তী প্রধানমন্ত্রী হিসেবে দায়িত্ব গ্রহণ করেন সুশীলা কার্কি।
সুতরাং, ভারতের এক সাংবাদিককে মারধরের ভিডিওকে বিএনপির নেতা কর্তৃক সাংবাদিককে মারধরের ঘটনা দাবিতে প্রচার করা হয়েছে; যা মিথ্যা।
তথ্যসূত্র
- Rumor Scanner’s analysis.
- Lafdavlog: Instagram Post
- Bharat Express: Nepal Political Crisis: ओली के इस्तीफे के 48 घंटे बाद भी अंतरिम PM का नाम तय नहीं, हिंसक प्रदर्शनों में अब तक 51 मौतें, जेन-जेड और सेना की बैठक