সম্প্রতি, অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূসের পদত্যাগ দাবিতে সারাদেশে আওয়ামী লীগপন্থী আইনজীবীরা আদালত বর্জন করে বিক্ষোভ মিছিল করেছেন দাবি টিতে একটি ভিডিও ইন্টারনেটের বিভিন্ন প্লাটফর্মে ছড়িয়ে পড়েছে।

ফেসবুকে প্রচারিত এমন ভিডিও দেখুন এখানে এবং এখানে।
ইউটিউবে প্রচারিত ভিডিও দেখুন এখানে।
টিকটকে প্রচারিত ভিডিও দেখুন এখানে এবং এখানে।
ফ্যাক্টচেক
রিউমর স্ক্যানার টিমের অনুসন্ধান জানা যায়, ড. মুহাম্মদ ইউনূসের পদত্যাগ দাবিতে সাম্প্রতিক সময়ে আওয়ামী লীগপন্থী আইনজীবীরা আদালত বর্জন সংক্রান্ত কোনো কর্মসূচি দেননি এবং বিক্ষোভ মিছিলও করেনি। প্রকৃতপক্ষে, বিএনপি ও আওয়ামী লীগপন্থী আইনজীবীদের পুরোনো ভিন্ন ভিন্ন কর্মসূচির ফুটেজ জোড়া লাগিয়ে আলোচিত দাবির ভিডিওটি তৈরি করা হয়েছে।
অনুসন্ধানে দেখা যায়, আলোচিত ভিডিওটির শুরুতেই একজন সংবাদ পাঠিকার সংবাদ পাঠের একটি ফুটেজ ব্যবহার করা হয়েছে, যা ২০২৩ সালে ৩১ ডিসেম্বর চ্যানেল২৪ এর ইউটিউব চ্যানেলে ‘আদালত বর্জন ইস্যুতে মুখোমুখি দুপক্ষের আইনজীবীরা’ শিরোনানে প্রকাশিত প্রতিবেদন থেকে নেওয়া হয়েছে। তবে এই প্রতিবেদনে সেসময় বিএনপি ও সমমনা দলের আইনজীবীরা আদালত বর্জন কর্মসূচি সফল করার শপথ নিয়েছিল বলে দাবি করা হলেও আলোচিত প্রতিবেদনে উক্ত বাক্যে বিএনপির পরিবর্তে ‘আওয়ামী লীগের আইনজীবীরা’ শীর্ষক অডিও যুক্ত করা হয়েছে।

ভিডিওতে ব্যবহৃত আইনজীবীদের আদালত বর্জন সম্পর্কিত স্লোগানের ফুটেজটি ২০২৪ সালের ২ জানুয়ারি বিএনপিপন্থী আইনজীবীদের আদালত বর্জন কর্মসূচি থেকে নেওয়া।

আলোচিত দাবির ভিডিওতে আইনজীবীদের কালো পতাকা মিছিলের একটি ফুটেজ ব্যবহার করা হয়েছে, যা ২০২৩ সালের ৩০ আগস্ট সুপ্রিম কোর্ট চত্বরের বাহিরে বিএনপিপন্থী আইনজীবীদের কালো পতাকা মিছিলের।

ভিডিওতে থাকা পুলিশের সাথে আইনজীবীদের বাকবিতণ্ডার ফুটেজটি ২০২৩ সালের ১ জুন সুপ্রিম কোর্টের সামনের সড়কে বিএনপিপন্থী আইনজীবীদের মিছিলে পুলিশের বাধা দেওয়ার ঘটনার।

আলোচিত দাবিতে প্রচারিত ভিডিওতে একজন আইনজীবীর বক্তব্যের ফুটেজ সংযুক্ত রয়েছে, যা ২০২৪ সালের ২ জানুয়ারি বিএনপিপন্থী আইনজীবীদের আদালত বর্জন কর্মসূচি থেকে ধারণকৃত ভিডিও।

ভিডিওতে সাংবাদিক নবনীতা চৌধুরীর একটি বক্তব্যের ফুটেজও যুক্ত করা হয়েছে। তবে নবনীতার বক্তব্যে আওয়ামী লীগের আইনজীবীদের আদালত বর্জন সংক্রান্ত কোনো কর্মসূচি পালনের দাবি করতে দেখা যায়নি।
এছাড়া, প্রচারিত আরো কিছু ছবি ও ফুটেজ ব্যবহার করা হয়েছে, যেগুলোর সাথে আলোচিত দাবির কোনো সম্পর্ক নেই।
সুতরাং, ড. মুহাম্মদ ইউনূসের পদত্যাগ চেয়ে আওয়ামী লীগপন্থী আইনজীবীদের আদালত বর্জন সংক্রান্ত সংক্রান্ত এই দাবিটি সম্পূর্ণ মিথ্যা।