এটি খাগড়াছড়িতে পর্যটক উদ্ধারের সময় পাহাড়িদের হামলায় আহত সেনাবাহিনী ও বিজিবি সদস্যদের ভিডিও নয়

গত ২৭ সেপ্টেম্বর খাগড়াছড়িতে পাহাড়ি এক কিশোরীকে দলবদ্ধ ধর্ষণের প্রতিবাদে অবরোধের মধ্যে উত্তেজনা ও পাল্টাপাল্টি ধাওয়ার ঘটনাকে কেন্দ্র করে ১৪৪ ধারা জারি করে জেলা প্রশাসন। জুম্ম ছাত্র-জনতার সাথে নিরাপত্তা বাহিনীর সংঘর্ষে খাগড়াছড়িতে অন্তত ৩ জন নিহত হয়েছেন। এরই প্রেক্ষিতে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে একটি ভিডিও প্রচার করে দাবি করা হচ্ছে, ‘পর্যটকদের উদ্দ্বার করতে গিয়ে পাহাড়ি স’ন্ত্রা’সী’দে’র হাতে আহত হন ৬ সেনা সদস্য ও ২ বিজিবি সদস্য’।

ভিডিওটিতে সেনাবাহিনীর পোশাক পরিহিত অবস্থায় কয়েকজনকে আহত/ক্লান্ত অবস্থায় আরো কয়েকজন সেনাবাহিনীর সদস্যের সাথে হেঁটে যেতে দেখা যায়৷

এই দাবিতে ফেসবুকে প্রচারিত পোস্ট দেখুন এখানে (আর্কাইভ) এবং এখানে (আর্কাইভ)।

ইনস্টাগ্রামে প্রচারিত পোস্ট দেখুন এখানে (আর্কাইভ)।

ফ্যাক্টচেক

রিউমর স্ক্যানার টিমের অনুসন্ধানে জানা যায়, প্রচারিত ভিডিওটি সম্প্রতি চলমান খাগড়াছড়ির ইস্যুতে পর্যটকদের উদ্ধার করতে গিয়ে পাহাড়িদের হাতে আহত সেনাবাহিনী ও বিজিবি সদস্যের দৃশ্যের নয়। প্রকৃতপক্ষে, ভিডিওটি খাগড়াছড়ির ঘটনার অন্তত ২ মাস আগে গত ২২ জুলাই থেকে উত্তরায় বিমান বিধ্বস্তের ঘটনায় অনলাইনে প্রচার হতে দেখা যায়।


এ বিষয়ে অনুসন্ধানে আলোচিত দাবিতে প্রচারিত ভিডিওটির একাধিক কি-ফ্রেম নিয়ে রিভার্স সার্চে ‘আব্দুল্লাহ আলামিন’ নামের একটি ফেসবুক অ্যাকাউন্ট থেকে গত ২২ জুলাইয়ে প্রচারিত একটি ভিডিও পাওয়া যায়। উক্ত ভিডিওটিতে প্রদর্শিত দৃশ্যের সাথে আলোচিত দাবিতে প্রচারিত ভিডিওটির তুলনা করলে মিল পাওয়া যায়।

ভিডিওটির ক্যাপশনে বলা হয়, ‘গতকাল দুর্ঘটনায় সেনাবাহিনীর অনেক অবদান ছিল | সেলুট বাংলাদেশ সেনাবাহিনী’।

পরবর্তীতে উল্লিখিত তারিখে তথা ২১ জুলাইয়ে ঘটা দুর্ঘটনার বিষয়ে অনুসন্ধানে মূলধারার গণমাধ্যম সূত্রে জানা যায়, গত ২১ জুলাই ঢাকার উত্তরার দিয়াবাড়ি এলাকায় বাংলাদেশ বিমানবাহিনীর একটি এফ-৭ বিজিআই যুদ্ধবিমান বিধ্বস্ত হয়েছে। সেদিন দুপুর দেড়টার দিকে বিমানটি মাইলস্টোন কলেজের চত্বরের ভেতরে আছড়ে পড়ে। তখন উদ্ধারকাজে সেনাবাহিনীও নিয়োজিত ছিল।

এছাড়াও, গত ২১ জুলাইয়ে উত্তরায় বিমান বিধ্বস্তের ঘটনায় ‘মো. খায়ের তালুকদার’ নামের একটি ফেসবুক অ্যাকাউন্টের পোস্টে সংযুক্ত একটি ছবির সাথেও আলোচিত দাবিতে প্রচারিত দৃশ্যের মিল পাওয়া যায়। এছাড়াও,‘সাইফুল ইসলাম’ নামের একটি ইউটিউব চ্যানেল থেকে গত ৭ আগস্টে প্রচারিত একটি ভিডিওর সাথেও আলোচিত দাবিতে প্রচারিত দৃশ্যের মিল পাওয়া যায়।

অপরদিকে, খাগড়াছড়িতে চলমান উত্তেজনার সূত্রপাত গত মঙ্গলবার (২৩ সেপ্টেম্বর) রাত ৯টায় প্রাইভেট পড়ে ফেরার পথে স্কুলছাত্রী কিশোরী দলবদ্ধ ধর্ষণের শিকার হওয়ার মধ্য দিয়ে। 

অর্থাৎ, প্রচারিত ভিডিওটি খাগড়াছড়িতে চলমান উত্তেজনার অন্তত দুই মাস আগে থেকেই অনলাইনে বিদ্যমান ছিল।

সুতরাং, সম্প্রতি চলমান খাগড়াছড়ির ইস্যুতে পর্যটকদের উদ্ধার করতে গিয়ে পাহাড়িদের হাতে আহত সেনাবাহিনী ও বিজিবি সদস্যের ভিডিও দাবিতে অন্তত ২ মাস আগে থেকে অনলাইনে থাকা একটি ভিডিও প্রচার করা হচ্ছে; যা মিথ্যা।

তথ্যসূত্র

আরও পড়ুন

spot_img