সম্প্রতি, “বৈধ প্রধানমন্ত্রী হিসেবে এবার প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নাম ঘোষণা করেছেন ফিলিপাইনের রাষ্ট্রপতি জোফাইয়া উর্বি…….। আজ রাষ্ট্রপতি জোফাইয়া উর্বির সাথে সৌজন্যে সাক্ষাৎ করতে এলে তার বাসভবনে বাংলাদেশ প্রসঙ্গে আলোচনা উঠলে তিনি এই মন্তব্য করেন। বাংলাদেশের বর্তমান পরিস্থিতি নিয়ে উদ্যোগ প্রকাশ করছেন তিনি।” ক্যাপশনে একটি ছবি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে প্রচার করা হয়েছে।

ফেসবুকে প্রচারিত পোস্ট দেখুন এখানে (আর্কাইভ)।
ফ্যাক্টচেক
রিউমর স্ক্যানার টিমের অনুসন্ধানে জানা যায়, ফিলিপাইনের রাষ্ট্রপতি বাংলাদেশের ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে বৈধ প্রধানমন্ত্রী ঘোষণা করেননি এবং ফিলিপাইনে রাষ্ট্রপতির নাম জোফাইয়া উর্বি নয়। প্রকৃতপক্ষে, ২০১৬ সালে সাঈমাস (লাতভিয়ান সংসদ) এর স্পিকার ইনারা মুরনিয়েচের সংযুক্ত আরব আমিরাত সফরের ছবিকে আলোচিত দাবিতে প্রচার করা হয়েছে।
এ বিষয়ে অনুসন্ধানের শুরুতে ছবিটির রিভার্স সার্চ করে ইমেজ শেয়ারিং প্লাটফর্ম ফ্লিকারের ওয়েবসাইটে ২০১৬ সালের ১৪ ডিসেম্বর প্রচারিত একটি ছবি খুঁজে পাওয়া যায়। উক্ত ছবির সাথে আলোচিত দাবিতে প্রচারিত ছবির মিল রয়েছে।

উক্ত ছবির বিবরণীতে বলা হয়, ২০১৬ সালের ১৪ ডিসেম্বর সংযুক্ত আরব আমিরাত সফরকালে সাঈমাস (লাতভিয়ান সংসদ) এর স্পিকার ইনারা মুরনিয়েচ দুবাইয়ের আন্তর্জাতিক সহযোগিতা বিষয়ক প্রতিমন্ত্রী রিম বিনতে ইব্রাহিম আল হাশিমির সঙ্গে সাক্ষাৎ করেন। (অনূদিত)
এ বিষয়ে আরো অনুসন্ধান করে লাতভিয়ার সংসদ (সাঈমাস)-এর অফিসিয়াল সাইটে ২০১৬ সালের ১৪ ডিসেম্বর প্রকাশিত একটি প্রেস বিজ্ঞপ্তি থেকে জানা যায়, ১৪ ডিসেম্বর (২০১৬) সংযুক্ত আরব আমিরাত সফরকালে, সাঈমাসের স্পিকার ইনারা মুরনিয়েচ আন্তর্জাতিক সহযোগিতা প্রতিমন্ত্রী রিম বিনতে ইব্রাহিম আল হাশিমি, সংস্কৃতি ও জ্ঞান উন্নয়ন মন্ত্রী শেখ নাহিয়ান বিন মুবারক আল নাহিয়ান সহো সংযুক্ত আরব আমিরাতের কয়েকজন শীর্ষ কর্মকর্তার সাথে দেখা করেন। সাঈমাস এবং সংযুক্ত আরব আমিরাতের ফেডারেল ন্যাশনাল কাউন্সিলের পক্ষ থেকে, স্পিকার মুরনিসে এবং রাষ্ট্রপতি আল কুবাইসি সহযোগিতার বিষয়ে একটি সমঝোতা স্মারক স্বাক্ষর করেন, যা সাধারণ স্বার্থের গুরুত্বপূর্ণ ক্ষেত্রগুলিতে তথ্যের সক্রিয় আদান-প্রদানের মাধ্যমে স্পিকার এবং সংসদ সদস্যদের মধ্যে সহযোগিতা আরও গভীর করার জন্য উভয় দেশের অব্যাহত প্রতিশ্রুতি তুলে ধরে। (অনূদিত)
ফিলিপাইনের রাষ্ট্রপতি শেখ হাসিনাকে বৈধ প্রধানমন্ত্রী ঘোষণা করেছে এমন কোনো তথ্যপ্রমাণ পাওয়া যায়নি। এছাড়া, ফিলিপাইনের বর্তমান রাষ্ট্রপতির নাম ফার্দিনান্দ “বংবং” মার্কোস জুনিয়র।
উল্লেখ্য, Tamanna Akhter Yesman নামে পরিচালিত এই ফেসবুক অ্যাকাউন্টটি ভুয়া। সংযুক্ত আরব আমিরাতের প্রতিমন্ত্রী রিম আল হাশিমির ছবি ব্যবহার করে এই ভুয়া অ্যাকাউন্ট থেকে আওয়ামী লীগের পক্ষে রাজনৈতিক প্রভাব তৈরির চেষ্টা নিয়ে গত ১৯ জুন বিস্তারিত ফ্যাক্টস্টোরি প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে রিউমর স্ক্যানার।
সুতরাং, শেখ হাসিনাকে ফিলিপাইনের রাষ্ট্রপতি বৈধ প্রধানমন্ত্রী ঘোষণা করেছেন শীর্ষক দাবিটি সম্পূর্ণ মিথ্যা।
তথ্যসূত্র
- Flickr – Photo
- Latvijas Republikas Saeima – Speaker of the Saeima meets top UAE officials